Defence Research Forum- DefRes
6 July 2020
ভারতীয়_মিডিয়ার_TRP_বাণিজ্য_বনাম_সীমান্তহত্যা
ভারতের ডিসকাভারি নেটওয়ার্ক এ BSF নিয়ে যদি কোন ডকুমেন্টারির আলোকপাত করা হয় তবে তাতে BSF কে ভারতের First Line Of Defence কিংবা তাদের মিশনগুলোকে Beyond The Call Of Duty এর সাথেই তুলনা করা হয়।এসব ডকুমেন্টারিতে বিএসএফ এর সীমান্ত ম্যানেজমেন্ট বিষয়ে প্রতিবেদন এবং একই সাথে বিএসএফ এর হিরোয়িজম কে সম্মানিত করা হলেও,সীমান্ত হত্যা নিয়ে বিন্দুমাত্র খুত খুজে পাওয়া যাবেনা।ভারতের মিথ্যাচার নিয়ে বলিউডে সিনেমা হলেও বাংলাদেশী কোন চ্যানেলেই বিজিবি নিয়ে কোন ডকুমেন্টারি কিংবা তথ্যবহুল অনুষ্ঠান প্রচারিত হয়না।যেখানে খোদ মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে সিনেমা নির্মাণ হয়না,সেখানে সামরিক বাহিনী নির্ভর সিনেমা হওয়া আকাশ-কুসুম দিবাস্বপ্ন ছাড়া কিছুই না।এখানে বলা বাহুল্য,একমাত্র বাংলাদেশ সীমান্ত ব্যতিত অন্য কোন সীমান্তেই বিএফএফ “Lethal Weapon” ব্যবহারের সাহস সচরাচর করেনা।
ভারতীয় মিডিয়ায় বিগত কয়েকদিনের প্রতিবেদন ঘাটলে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে বিন্দুমাত্র শিরোনাম খুজে পাওয়া কষ্টকর হলেও সাম্প্রতিক সময়ে ভারতের শীর্ষস্থানীয় সংবাদ মাধ্যম NDTV তে বিগত ২ জুলাই তারিখে West Bengal এর উত্তর চব্বিশ পরগোণায় ১০-১২ জন চোরাকারবারির হামলায় তিনজন বিএসএফ সদস্যের আহত হবার ঘটনা নিয়ে ভারতে বেশ আলোড়ন এবং আলোচনা-সমালোচনা চলছে।
এনডিটিভি এর দাবী উত্তর চব্বিশ পরগণা সীমান্তে ১০-১২ জনের একটি দলকে চ্যালেঞ্জ করার প্রেক্ষিতে তারা “ধারালো দা” এবং “বাশ” দিয়ে পিটিয়ে আহত করে বিএসএফ সদস্যদের।এরই প্রেক্ষিতে বিএসএফ ৫-৭ রাউন্ড লাইভ বুলেট ফায়ার করে।যার ফলে চোরাকারবারিরা বাংলাদেশের দিকে পালিয়ে যায়।
ভারতের মিডিয়ায় অতিরঞ্জিত করে কোন বিষয় উপস্থাপনের বিষয়টি নতুন নয়।বাংলাদেশের মিডিয়াগুলোতে সীমান্ত হত্যা ছোট স্ক্রলে যাবার মত খবর হলেও ভারতের মিডিয়ায় ”দাবী” করা খবরকেই ব্রেকিং নিউজ হিসেবে প্রকাশ করা হয়।সে একই খবর বারবার প্রকাশ করা হয়,যাতে মিডিয়াগুলো সে নিউজের TRP পেতে পারে।
তবে আশংকাজনক হলেও সত্য এখনো ভারতের মিডিয়াগুলোতে বিএসএফ এর সীমান্ত হত্যা নিয়ে কোনরুপ প্রতিবাদ কিংবা নিউজ করা হয়না।বিগত দিনগুলোতে ভারত-চীন সীমান্তে উত্তেজনায় বাংলাদেশের নীরবতা নিয়েও ভারতের মিডিয়াগুলোতে বেশ হইচই হয়েছে।এমনকি বাংলাদেশে করোনা ভ্যাক্সিন এর আবিস্কার কিংবা হিউম্যান ট্রায়াল হওয়া নিয়েও ভারতীয় মিডিয়ার “অবিশ্বাস” এবং “কটাক্ষ” করা ছিল চোখে পড়বার মত।
বাংলাদেশের রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত “বিটিভি” ব্যতীত খুব বেশী চ্যানেল এখনো ভারতে প্রবেশাধিকার পায়নি।অথচ,ভারতের তরফ থেকেও কলকাতায় বাংলাদেশী চ্যানেল দেখানো নিয়েও কয়েকবার আশ্বাস দিয়েছিল ভারত।পাকিস্তানী মিডিয়ার প্রবেশাধিকার থাকলেও বাংলাদেশী মিডিয়ার প্রবেশাধিকার নিয়ে ভারতের নীরবতা বাংলাদেশীদের হতাশ করেছে।আকাশ সংস্কৃতির এ যুগে ভারতের সাংস্কৃতিক অংগনে বাংলাদেশী মিডিয়ার প্রবেশ এখন সময়ের দাবী।ঠিক তেমনভাবে বাংলাদেশী মিডিয়াগুলোর কন্টেন্ট নির্মাণেও আরো মনযোগী হতে হবে।ইউটিউবে বাংলাদেশী চ্যানেলগুলোর লাইভ স্ট্রীম থাকলেও তাতে ভারত থেকে ততটা ভিউ হয় না।আধুনিক এবং রুচিশীল কন্টেন্ট নির্মাণ এবং ভারতীয় আকাশে বাংলাদেশী মিডিয়ায় সম্প্রচারের মাধ্যমে অন্তত ভারতীয় মিডিয়ার মিথ্যাচার এবং টি.আর.পি বাড়াবার বিপরীতে বাংলাদেশী মিডিয়ার আধিপত্য বৃদ্ধি করা এখন অতীব প্রয়োজন।