একজনের উত্থানে অন্যজনের পতন
তৈমূর আলম খন্দকার ০৬ মার্চ ২০২০
বাংলাদেশের সংবিধান মোতাবেক সব ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দু রাষ্ট্রপতি হলেও সংবিধানের ৪৮(৩) অনুচ্ছেদ মোতাবেক বাস্তবে প্রধানমন্ত্রীই সব ক্ষমতার একচ্ছত্র অধিপতি। রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার ভারসাম্য নিয়ে অনেকবার প্রশ্ন উপস্থাপিত হলেও প্রধানমন্ত্রীর একচ্ছত্র ক্ষমতা অটুট ও অক্ষুণ্ন রয়েছে। সরকার ও দলীয় উদ্যোগে উচ্চপর্যায়ের অনেক সভা বা জনসভায় প্রধানমন্ত্রীকে ‘রাষ্ট্রনায়ক’ হিসেবে সম্মোধন করা হচ্ছে, অন্য দিকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দায়িত্বে থাকা সাবেক রাষ্ট্রপতি (সাবেক প্রধান বিচারপতি) সাহাবউদ্দীন আহমেদের ভাষায়, মাজার জেয়ারত ও মিলাদ শরিফে অংশগ্রহণ ছাড়া বর্তমান সংবিধান মোতাবেক রাষ্ট্রপতির তেমন কোনো কার্যকর ভূমিকা নেই। তবে যখন রাষ্ট্রপতিশাসিত বা তার নেতৃত্বাধীন সরকার ছিল, তখনকার অবস্থা ছিল ভিন্ন। ওই সময়ে রাষ্ট্রপতি সরকারিভাবে ক্ষমতা যে পদ্ধতিতে ভোগ করতেন, বর্তমানে প্রধানমন্ত্রী সে প্রক্রিয়াই ক্ষমতা ভোগ করছেন, অর্থাৎ রাষ্ট্রের সবচেয়ে ক্ষমতাধর ব্যক্তি সরকারপ্রধান স্বয়ং। দেশে প্রধানমন্ত্রী শাসিত সরকার চালু রয়েছে।
উত্তরাধিকারসূত্রে ক্ষমতা পাওয়া দুই প্রধানমন্ত্রীর আজ একজন ক্ষমতায় এবং একজন সাবেক। যিনি আজ ক্ষমতায়, তিনি দারুণ ক্ষমতাধর ব্যক্তি হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। সাংবিধানিকভাবে স্বাধীন প্রতিষ্ঠানগুলোর নিয়ন্ত্রণও কার্যত তার হাতে। অন্যজন কারাগারের অন্ধকার প্রকোষ্ঠে দিন যাপন করছেন, যিনি ‘তার চাহিদা’মতো চিকিৎসা পেতে দেশের সর্বোচ্চ আদালতের সম্মতি পেতেও ব্যর্থ হচ্ছেন। তবে দু’জনই মায়ের জাতি নারী এবং বয়সের দিক থেকে পরস্পরের খুব একটা দূরত্বে নয়। ক্ষমতায় থাকলে মন ও শরীর দুটোই তাজা থাকে। আর জেলখানায় থেকে অধিকারবঞ্চিত থাকলে অসুস্থ একজন ৭৫ বয়সের নারীর যে অবস্থা হয়, বিএনপি চেয়ারপারসন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া সে অবস্থায়ই প্রত্যাশায় দিন কাটাচ্ছেন। বাংলাদেশের রাজনীতির প্রেক্ষাপটে এ দু’জনই মূল খেলোয়াড়, বাকি সবাই সাইড খেলোয়াড়, সংস্কৃতির জগতের সহশিল্পীর (Parole) ভূমিকায়। অনেকে ‘যেমন আদেশ’ বা ‘আপনার আদেশই শিরোধার্য’ বলে হুকুম পালন করাটাই দায়িত্ব ও কর্তব্য বলে মনে করেন। এ ভূমিকা পালন করা ছাড়া সাইড খেলোয়াড়দের অন্য কোনো পথ খোলা নেই। কারণ এখন সাধারণত রাজনৈতিক দলে ‘আনুগত্য’ প্রকাশের প্রতিযোগিতায় যে যত তোষামোদকারী সে তত সুবিধাভোগী ও ক্ষমতাবান। ফলে নিজ অস্তিত্ব বিলীন হওয়ার ঝুঁকি নিয়ে মূল খেলোয়াড়দের সামনে সাইড খেলোয়াড়রা জেনে শুনে সত্য বা ন্যায্য বা উচিত কথা বা সঠিক মতামত ব্যক্ত করা হতে বিরত থাকেন, এ কারণে যে কোনো কথায় কখন জানি মূল খেলোয়াড়ের বিরাগভাজন হতে হয় (!)। এ টেনশন নিয়েই তাদের দিন কাটে। ফলে ‘জি হুজুর, জাঁহাপনা’ বলে দিন পার করানোটাই নিরাপদ বলে মনে করা হয়। এভাবেই মূল খেলোয়াড়রা তোষামোদীর চার দেয়ালের সোনার খাঁচায় বন্দী হয়ে নিজেদের একক সিদ্ধান্তই সঠিক ও ‘জনবান্ধব’ বলে চালিয়ে দিচ্ছেন। সিদ্ধান্ত ‘জনবান্ধব’ কি না তা পরীক্ষা-নিরীক্ষার আগেই ‘তোষামোদীর’ তুরুপের তাসে বিচার্য বিষয় বিলীন হয়ে যায় বিধায় ক্ষমতায় থাকাকালে কারো ভুল নিজের চোখে ধরা পড়ে না। যখন ধরা পড়ে তখন এর প্রতিকার থাকে ধরা-ছোঁয়ার বাইরে।
সাম্প্রতিককালে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম জিয়ার মুক্তি নিয়ে শুধু রাজনৈতিক মহলে নয়, সর্বত্র আলোচনা হচ্ছে। মামলায় তার কোন কারণে, কোন পদ্ধতিতে সাজা হয়েছে তা নিয়ে আলোচনা না করলেও, সব মামলার জামিন হলেও ৭৫ বয়স্কা অসুস্থ এ নারীর কেন জামিন হচ্ছে না বা কেন তিনি চাহিদামতো চিকিৎসাসেবা পেতে সরকারের বা রাষ্ট্রের অনুকম্পা পাচ্ছেন না- এটাই এখন জনগণের জিজ্ঞাসা। দেশের সর্বোচ্চ আদালত সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে জামিনে মুক্তি দেয়ার কোনো কারণ খুঁজে পাচ্ছেন না। অন্য দিকে সরকার থেকে বলা হচ্ছে, খালেদা জিয়ার জামিন নিয়ে সরকার কোনো প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে না, এটা একান্তই আদালতের বিষয়। মিডিয়ার খবর, তিনি প্যারোলে (চধৎড়ষব) মুক্তি পাচ্ছেন। সরকার থেকে প্যারোলের জন্য দরখাস্ত করতে উৎসাহিত করা হচ্ছে বলে মন্ত্রীদের বক্তব্যে আভাস পাওয়া যায়।
আইনের দৃষ্টিতে সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তির মুক্তি তিনটি ক্ষমতা বলে হতে পারে। (১) রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা (সংবিধানের অনুচ্ছেদ-৪৯), (২) সরকারের প্রশাসনিক ক্ষমতা (ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারা) ও (৩) আপিল চলাকালে আদালতের ক্ষমতা (ফৌজদারি কার্যবিধির ৪২৬ ধারা)।
সংবিধানের ৪৯ নম্বর অনুচ্ছেদে রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, কোনো আদালত, ট্রাইব্যুনাল বা অন্য কোনো কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রদত্ত যে, কোনো দণ্ডের মার্জনা, বিলম্বন ও বিরাম মঞ্জুর করিবার এবং যে কোনো দণ্ড মওকুফ, স্থগিত বা হ্রাস করিবার ক্ষমতা রাষ্ট্রপতির থাকিবে। (গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান, অনুচ্ছেদ-৪৯)’
ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১(১) ধারায় বলা হয়েছে, ‘Power to suspend or remit sentences- When any person has been sentenced to punishment for an offence, the Government may at any time without conditions or upon any conditions which the person sentenced accepts, suspend the execution of his sentence or remit the whole or any part of the punishment to which he has been sentenced.’
ফৌজদারি কার্যবিধির ৪২৬ ধারায় বলা হয়েছে যে, Suspension of sentence pending appeal. “Release of appellant on bail (1) Pending any appeal by a convicted person, the Appellate Court may, for reasons to be recorded by it in writing, order that the execution on the sentence or order appealed against be suspended and, also, if he is in confinement, that he be released on bail or on his own bond. (2) The power conferred by this section on an Appellate Court may be exercised also by the High Court Division in the case of any appeal by a convicted person to a Court subordinate thereto.”
সংবিধান, ফৌজদারি কার্যবিধি বা অন্য কোনো আইনে বিধিবদ্ধভাবে ‘প্যারোল’ (Parole) বলে কোনো শব্দ নেই। তবে বিভিন্ন আদালতের রায় ও রেফারেন্সে, বিভিন্ন অভিধানে (Dictionary) প্যারোলের সংজ্ঞা বা ব্যাখ্যা পাওয়া যায়। তা নিম্নে উল্লেখ করা হলো :
১। Black’s Law Dictionary-তে Parole সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, ‘The release of a prisoner from imprisonment before the full sentence has been served. Although not available under some sentences, parole is usu. granted for good behavior on the condition that the parolee regularly report to a supervising officer for a specified period. (Judicial Dictionary, Justice L.P. Singh & P. Majumdar)’
২। চৌধুরী মুনীর উদ্দিন মাহফুজ সম্পাদিত ‘আইনি শব্দমালা’ অভিধানে বলা হয়েছে, ‘প্যারোল হচ্ছে কোনো বিচারাধীন হাজতি আসামি বা কয়েদিকে কোনো শর্তের অধীন অপর কোনো ব্যক্তির অধীনে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য মুক্তি দেয়া। কোনো ব্যক্তিকে প্যারোলে মুক্তিদানের ক্ষমতা সরকারের হাতে ন্যস্ত। কোনো হাজতি বা কয়েদিকে, তার নিকটতম কোনো আত্মীয়স্বজন অসুস্থ হলে বা মৃত্যুবরণ করলে দেখার জন্য স্বল্প সময়ের জন্য মুক্তি প্রদান করা হয়ে থাকে। সাধারণত এ ধরনের অধিকার রাজনীতিবিদ বা বিশিষ্ট ব্যক্তিরাই ভোগ করে থাকেন। Parole ১৯৬০ সালের Probation of offenders ordinance দ্বারা পরিচালিত হয়। আদালত কোনো অপরাধীর ইচ্ছানুসারে কারাদণ্ডের পরিবর্তে প্রবেশন আসামির অধীনে ও তত্ত্বাবধানে থাকার আদেশ দিতে পারেন। ১৯৬০ সালের Probation of offenders ordinance এর ৪ ও ৫ ধারা অনুযায়ী, আদালত তরুণ অপরাধীদের এবং কতিপয় অপরাধের ক্ষেত্রে প্রথম অপরাধকারীকে প্রবেশনের আদেশ দিতে পারেন।’
৩। মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম প্রণীত Law Dictionary-তে প্যারোল সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, ‘প্যারোল, বচন, শর্তাধীন মুক্তি পালাইয়া যাইবে না এই শর্তসাপেক্ষে মুক্তি। কোনো বিচারাধীন হাজতি আসামি বা কয়েদিকে শর্তাধীনে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য মুক্তি প্রদান করাকেই প্যারোল বলা হয়। এক প্রকার শর্তাধীন খাজনা। যাহা দ্বারা দণ্ডপ্রাপ্ত অপরাধীকে তাহার মেয়াদ সমাপ্ত হইবার পূর্বে মুক্তি দেওয়া হয়, কিন্তু উক্ত মেয়াদের বাকি সময় তাহাকে সরকারি কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে থাকিতে হয় এবং প্যারোলের শর্ত ভঙ্গ করা হইলে পুনশ্চঃ কারান্তরালে যাইতে হয়। সচরাচর যুদ্ধবন্দী কর্তৃক দেওয়া, পলায়ন করা হইতে বিরত থাকিবার প্রতিশ্রুতি।’
৪। Oxford, Advanced Learner’s Ditcionary-তে প্যারোল সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, ‘The release of a prisoner before the end of a sentence if he or she promises to behave well, or temporarily for a special purpose.’
৫। মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান এবং আনিসুজ্জামান সম্পাদিত ‘আইন শব্দকোষ’ অভিধানে প্যারোল সম্পর্কে বলা হয়েছে, ‘প্যারোল বি. শর্তাধীন সাময়িক মুক্তি; কারাগার হইতে বন্দীর শর্তাধীন মুক্তি। বিশেষ বিবেচনায়, নির্দিষ্ট সময়ের অন্তে বন্দি কারাগারে প্রত্যাবর্তন করিবেন, এই শর্তে তাহার সাময়িক মুক্তিদান।’
বিভিন্ন অভিধানে প্যারোল সম্পর্কে যে ব্যাখ্যা দেয়া হয়েছে, বেগম খালেদা জিয়া মুক্তির প্রশ্নে সরকারি দলের কোনো কোনো নেতা প্যারোলের আবেদন করার যে সুড়সুড়ি দিচ্ছেন, তা এখানে কতটুকু যুক্তি সঙ্গত বা বেগম জিয়ার মতো রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের জন্য এ ধরনের প্যারোল কি প্রযোজ্য? রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনা যখন ব্যক্তিকেন্দ্রিক হয়ে পড়ে, তখন গণতন্ত্র, মানবতা, আইন, আদালত সবই হয়ে উঠে ব্যক্তিনির্ভর। বাংলাদেশের সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খাইরুল হকের মতে, রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনা তিন ভাগে বিভক্ত : (১) রাজতন্ত্র, (২) একনায়কতন্ত্র বা গোষ্ঠীকেন্দ্রিক ও (৩) প্রজাতন্ত্র। একটি মামলার রায়ে তিনি মন্তব্য করেন যে, ‘রাষ্ট্র বা Generic শব্দটি এবহবৎরপ। রাষ্ট্র কী ধরনের শাসন ব্যবস্থা পরিচালিত তাহার ওপর নির্ভর করে রাষ্ট্রের চরিত্রগত বা বৈশিষ্ট্যগত অবস্থান। যেমন, রাষ্ট্র যদি রাজ-নিয়ন্ত্রিত হয় তবে তাহাকে বলা হয় রাজতন্ত্র (monarchy), যদি এক ব্যক্তিকেন্দ্রিক হয় তাহা হইলে তাহাকে বলা হয় একনায়কতন্ত্র। ইহা গোষ্ঠীকেন্দ্রিক (oligarchi) হইতে পারে। কিন্তু প্রকৃত জন-মানুষের শাসন ব্যবস্থা প্রচলিত হইলে ঐ রাষ্ট্র ব্যবস্থাকেই বলে প্রজাতন্ত্র বা Republic। প্রায় সকল ক্ষেত্রেই ঐরূপ প্রজাতান্ত্রিক রাষ্ট্রে লিখিত সংবিধান থাকে (৬০ DLR পৃষ্ঠা ৫১১)।’ রাষ্ট্রের প্রকারভেদ সম্পর্কে বিচারপতি খায়রুল হকের ব্যাখ্যা যদি অনুসরণ করা হয় তাহলে বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনা এ তিনটির মধ্যে কোন ক্যাটাগরির অন্তর্ভুক্ত? এ বিবেচনার ভার পাঠকসমাজের ওপর রইল। বর্তমানে রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনা যে পদ্ধতিতে চলছে এ জন্যই কি এ দেশবাসী রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধ করেছিল?
যতটুকু মনে পড়ে, ১/১১ সরকারের সময় বিচারাধীন কারাবন্দী হিসেবে প্রশাসনিক আদেশে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী কারামুক্ত হয়ে বিদেশে চলে গিয়েছিলেন। বেগম খালেদা জিয়ার ওপর বিভিন্ন কারণে প্রধানমন্ত্রী নাখোশ বা অসন্তুষ্ট থাকতে পারেন, কিন্তু কোনো প্রকার ভীতি বা অনুগ্রহ, অনুরাগ বা বিরাগের বশবর্তী না হয়ে সবার প্রতি আইন অনুযায়ী যথাবিহিত আচরণ করার শপথ তিনি করেছেন। সে কারণে নৈতিকভাবে বেগম জিয়ার মুক্তির প্রশ্নে প্রতিবন্ধক হতে পারেন কি?
বলা হয় যে, ‘বিচার বিভাগ স্বাধীন’। বিচারপতি এস কে সিনহার পরে পিরোজপুরে ০৩/৩/২০২০ তারিখে সরকার দলীয় সাবেক সংসদ সদস্যকে সকালে জামিন না দেয়ায় দায়রা জজকে বদলি করে বিকেলে সে নেতার জামিন করানোর ঘটনায় বিচার বিভাগ কতটুকু স্বাধীন সে প্রশ্ন সহজেই উঠতে পারে। বিশ্বের যে কোনো আদালতের চেয়ে বাংলাদেশের উচ্চ আদালতের দেয়া Interpretation অনেক উন্নতমানের। কিন্তু যেখানে দুদকের মামলায় সকালে জামিন নামঞ্জুর হয়ে বিকেলে মঞ্জুর হয়ে যায় সেখানে উন্নতমানের চিকিৎসার জন্য বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির প্রশ্নে এত টালবাহানা কেন?
বেগম জিয়ার মুক্তির প্রশ্নে বিএনপি আন্দোলন করতে পারে না বলে সরকারের সাইড খেলোয়াড়রা উপহাস করে নানা ধরনের টিপ্পনি কাটেন। বিএনপি আন্দোলনের দিনক্ষণ নির্ধারণ করেই কাক্সিক্ষত সফলতা অর্জন করতে পারছে না বলে অনেকের ধারণা। এ মুহূর্তে প্রয়োজন ঐক্যফ্রন্ট ও বিএনপি নেতাকর্মীদের ‘স্বেচ্ছায় কারাবন্দী’ হওয়ার মতো কর্মসূচি ঘোষণা করা। বেগম খালেদা জিয়াকে বাঁচাতে হবে- এ অঙ্গীকার নিয়েই মাঠে থাকতে হবে এবং এ জন্য নেতাকর্মীদের ‘স্বেচ্ছায় কারাবন্দী’ হওয়ার কর্মসূচি নেয়াই এখন সম্মানজনক। এ ক্ষেত্রে ২০ দল ও ঐক্যফ্রন্ট কতটুকু সক্রিয় ভূমিকা রাখবে সেটাও এখন দেখার বিষয়। বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি এ সরকারের জন্য হুমকি হবে জেনেই তার মুক্তির পথে দৃশ্যত এত আইন ও এত প্রতিবন্ধকতা। প্রতীয়মান হচ্ছে যে, ‘একজনের উত্থানে অন্যজনের পতন’ নীতিকে সরকার সঠিক মনে করে বলেই বেগম জিয়ার মুক্তির প্রশ্নে এত বাহানা (!), জনগণের এ ধারণা পোষণ করা কি অযৌক্তিক?
লেখক : রাজনীতিক, কলামিস্ট ও আইনজীবী (অ্যাপিলেট ডিভিশন)
E-mail: [email protected]