December 17, 2022, by Tasnim Khalil
বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টে একটি ব্রিফিং হয়েছে ৬ ডিসেম্বর। ইতালির এমইপি কাস্তালদোর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই ব্রিফিংয়ে আমি প্যানেলিস্ট হিসাবে ছিলাম। অন্যদিকে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে ছিলেন ব্রাসেলসে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত মাহবুব হাসান সালেহ। ব্রিফিংয়ে আমার বক্তব্য, রাষ্ট্রদূতের বক্তব্য এবং তার বক্তব্যের উত্তরে আমার জবাবের পুরোটা ভিডিওতে দেওয়া হলো।
এই ব্রিফিং নিয়ে বাংলাদেশের সরকার-পন্থী মিডিয়ায় বিভ্রান্তিকর প্রচারণা চলছে। একটা রিপোর্টে দেখলাম রাষ্ট্রদূতের কড়া কথার জবাবে নাকি আমিসহ অন্য প্যানেলিস্টরা চুপ হয়ে ছিলাম। হাস্যকর একটা দাবী! আমার বক্তব্যের সমালোচনা করে রাষ্ট্রদূত যা বলেছেন, আমি সেটার জবাব দিয়েছি। অন্যান্য প্যানেলিস্টরাও পয়েন্ট ধরে রেসপন্ড করেছেন।
আমি কেন বাংলাদেশে বলপূর্বক অন্তর্ধানের বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে ১৯৭১ সালে আল বদর বাহিনীর কথা বললাম, তা নিয়ে রাষ্ট্রদূতের আপত্তি ছিলো। আমি তাকে বলেছি। সাথে এটাও যোগ করছি যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বলা একটি সরকারের নিরাপত্তা বাহিনীগুলো কেন আল বদরের মতোই মানুষকে তুলে নিয়ে গিয়ে গুম করছে, সেটা আমার বোধগম্য নয়।
এশিয়ান হিউম্যান রাইটস কমিশনের ডকুমেন্টেশন কোট করে আমি বলেছিলাম বাংলাদেশে গুমের ডকুমেন্টেড কেস ৬১৯। রাষ্ট্রদূত জাতিসংঘের গুম বিষয়ক কমিটির কাছে প্রেরিত ৭৬ কেসের সাথে এই সংখ্যা গুলিয়ে ফেলেছিলেন, আমি তাকে তার ভুলটা ধরিয়ে দিয়েছি।
তার আরেকটি সমালোচনা ছিলো যে আমরা কেন ১৫ আগস্ট আর ২১ আগস্টের কথা বললাম না। জবাবে আমি বলেছি, দুইটা ঘটনাই মানবাধিকারের চরম ভায়োলেশন ছিলো। এই সূত্রে আমি রাষ্ট্রদূতের কাছে জানতে চাই যে এই দুই ঘটনার তদন্ত ও বিচার তার সরকার করেছে কিনা। তিনি হ্যা-সূচক উত্তর দিলে আমি তাকে আবার জিজ্ঞেস করি শেখ হাসিনার মানবাধিকার লংঘন হলে যেখানে তদন্ত ও বিচার হয় সেখানে গুমের শিকার ব্যক্তিদের পরিবারগুলো রাষ্ট্রের কাছ থেকে একই সাপোর্ট পায়না কেন?
রোহিঙ্গা শরণার্থীরা যে বাংলাদেশে বিচার-বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হোন, এমনেস্টির একটি স্টেটমেন্টের সূত্র ধরে আমি সেটাও বলেছি। আগ্রহীরা পুরো ভিডিওটা দেখে নিতে পারেন।