আসল পাঁঠাটি কে ?

Minar Rashid

বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের অর্থ চুরির ঘটনায় বিদায়ী গভর্নর ড. আতিউর রহমানকে বলির পাঁঠা বানানো হয়েছে বলে দাবি করেছেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মিজানুর রহমান।
মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড: মিজানুর রহমানের ‘এক চোখ কানা’ এই অপবাদ ঘোচাতে মাঝে মাঝে ছন্দহীন ভাবে এরকম দুয়েকটি সত্য কথা বলে ফেলেন ।
বলির পাঁঠা বলা হয় যখন উপর মহলের কারো কুকীর্তি ঢাকতে ছোটখাটো কাউকে শাস্তি বা বলি দেয়া হয় । ড: মিজানের মুখ থেকে এই কথা বের হওয়ার পর বোঝা যাচ্ছে যে এই ধারণাটি দেশের ভেতরে কতটুকু ছড়িয়ে পডেছে । সকলের মনেই স্বভাবতই প্রশ্ন জেগেছে , এখানে আসল পাঁঠাটি কে ?

ড: মিজানের মত আরেকজন এই ধরনের ছন্দহীন সত্য কথা বলে খ্যাতি অর্জন করেছেন । তিনি অর্থমন্ত্রী আবুল আল আব্দুল মুহিত । শেয়ার বাজার কেলেংকারির তদন্ত রিপোর্ট হাতে পেয়ে দাঁতে জিভ কেটে বলেছিলেন , তদন্ত রিপোর্টে এমন কিছু প্রভাবসালী মানুষের নাম আছে যাদের নাম নিতেও ভয় লাগে । তার এই সহজ সরল স্বীকারোক্তির পর আসলেই সেই নাম গুলি আর জনগণের কাছে প্রকাশ করা হয় নি । কান টানলে মাথা বেরিয়ে আসতে পারে এই ভয়ে মিডিয়াও সেই কানটি ধরে বেশি টানাটানি করে নাই । জনগণ নিজ নিজ চিন্তাশক্তি খাটিয়ে সেই চেহারাগুলি অনুমান করে নিয়েছে ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের টাকা খোয়া যাওয়া নিয়ে এতদিন নীরব থাকা দৈনিক প্রথম আলো হঠাৎ করে জ্বনাব মুহিতের একটি সাক্ষাত্কার ছাপিয়েছে । সেখানে খোলাখুলি কিছু কথা তিনি বলে ফেলেছেন । টাকা খোয়া যাওয়ার জন্যে ব্যাংকের কর্মকর্তাদের তিনি সরাসরি দায়ী করেছেন । সদ্য পদত্যাগী গভর্নর সম্পর্কেও অনেক ক্ষোভের কথা প্রকাশ করেছেন । তাতে ভেতরের অনেক কথা বেরিয়ে এসেছে ।

অন্যদিকে পদত্যাগের পর আতিউর রহমান জানিয়েছেন যে তিনি বীরের মত পদত্যাগ করেছেন । ওয়াকেবহাল মহলের জিজ্ঞাসা – এটা যদি বীরের মত পদত্যাগ হয় , তবে চোরের মত পদত্যাগ কোনটি ? তার পদত্যাগের সময় প্রধানমন্ত্রীর চোখেও নাকি পানি এসে গিয়েছিল ।

প্রধানমন্ত্রী আজ এক সমাবেশে বলেছেন , সততা থাকলে জোর গলায় কথা বলা যায়। কিন্তু কিছুদিন আগে বেগম খালেদা জিয়াকে টার্গেট করে বলেছিলেন , চোরের মায়ের বড় গলা ।
জনগণের মনে আবারো প্রশ্ন জেগেছে –
আজকের এই জোর গলা কি নেহায়েত সততার জন্যে, নাকি অন্য কোন কারণে ?