যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামীলীগ , সখী তুমি কার ?

Minar Rashid

(১)
আজকের শিরোনামটি একটি বাংলা সিনেমা থেকে ধার করে নেয়া। সিনেমাটি দেখি নাই , শিরোনাম থেকে কাহিনীটি মোটামুটি অনুমান করে নিয়েছি । শুধু গল্পের সেই নায়কের মনেই নয় , আরো অনেকের মনেই নিজ নিজ বলয়ের সখীদের নিয়ে এমন প্রশ্নের সৃষ্টি হয় । দেশের মানুষের মনে এমন প্রশ্নের সৃষ্টি করেছে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ ।

হিন্দু -বৌদ্ধ -খ্রীষ্টান ঐক্য পরিষদের চৌদ্ধগোষ্ঠি উদ্ধার করে তারা একটি বিবৃতি দিয়েছে। অথচ দেশের সবাই জানে এটি মূলত হিন্দু -বৌদ্ধ- খ্রীষ্টান-আওয়ামী ঐক্য পরিষদ । তারপরেও আওয়ামীলীগের একটি বৈদেশিক শাখা উক্ত সংগঠনটির উপর এভাবে চড়াও হয়েছে !

তাদের সেই বিবৃতিটি যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রকাশিত সাপ্তাহিক আজকাল পত্রিকায় ছাপা হয়েছে । বিবৃতিটি পড়ে অবাক না হয়ে পারা যায় না । যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামীলীগের অভিযোগ, ঐক্য পরিষদ ইসরাইলী গোয়েল্দা সংস্থা মোসাদের টাকা খেয়ে আমাদের দেশে রাম রাজত্ব কায়েমের ষড় যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে ! এখানে অবশ্য (আওয়ামী স্বভাবের কারনেই) মোসাদের সাথে বিএনপি জামায়াতকেও জড়িয়ে ফেলেছে । কিন্ত ভূ-রাজনৈতিক গণনায় এটা কারো কাছেই বিশ্বাস যোগ্য হবে না ।
মোসাদ আর যাই করুক , এই কাজটি কখনই করবে না ।

এখানে প্রশ্ন আসতে পারে , মোসাদ কি শুধুমাত্র ঐক্য পরিষদ পর্যন্তই সীমাবদ্ধ রয়েছে , নাকি আরো অনেক দূর পর্যন্ত অগ্রসর হয়েছে ? আওয়ামী লীগের এই শাখাটি তাদের দল ও নেত্রীকে ধোয়া তুলসী পাতা বানাতে গিয়ে সম্ভবত মানুষের সেই সন্দেহকে আরো পোক্ত করে ফেলেছে ।
কারণ এদেশের মানুষ ঘাষ খেয়ে বড় হয় না।

(আজকালের সেই প্রতিবেদনটি পড়তে নিচের লিংকে ক্লিক করতে পারেন ) –
http://www.ajkalnewyork.com/newsite/2016/03/11/30617.html…

(২)

বেশি চালাকি করতে গিয়ে এরা আরো করুণভাবে ধরা খায়।
তাদের প্রতি জনগণের সন্দেহটিকেই এরা হুবহু উল্টোদিকে ঘুরিয়ে দিতে চায় । তাতে জনগণের সন্দেহ আগের চেয়ে আরো বেড়ে যায় । আওয়ামীলীগের প্রচার সম্পাদক ও প্রাক্তন মন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছেন , বাংলাদেশ ব্যাংকের লুটের টাকার ভাগ লন্ডন থেকে তারেক রহমানও পেয়েছেন ! কিন্তু জনগণ বলছে পদ্মা সেতুতে আবুলের মত এখানেও ব্যাংকের গভর্ণরকে বলির পাঁঠা বানানো হয়েছে ।

বিল ক্লিনটন যখন মনিকা কেইসে ফেঁসে যান তখন হঠাৎ করে সুদানের কিছু ফার্মাসিউটিকেল কোম্পানীতে মিসাইল আক্রমণ করে বসে । সারা বিশ্বের শান্তিকামী মানুষ এটাকে ‘ মনিকা মিসাইল’ নামে অভিহিত করেন ।

বর্তমান অবৈধ সরকার যখন বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরি নিয়ে বেকায়দায় পড়ে গেছে তখন কাকতালীয়ভাবে মাওলানা নিজামীর ফাঁসির রায়টিও এগিয়ে এসেছে । এই ফাঁসি নিয়ে মানুষ ব্যস্ত হয়ে পড়বে । আর চাপা পড়ে যাবে ব্যাংক থেকে চুরি যাওয়া জনগণের টাকা খোয়ার বেদনাটি । ‘মনিকা মিসাইল’ এর মত এই বিষয়টি মানুষের মুখে মুখে ঘুরছে ।

মানুষের সচেতনতার উত্তাপ সর্বত্র পৌছে গেছে । তারই প্রভাবে যুক্তরাষ্ট্রের আওয়ামী লীগের মুখ থেকে কিছু কিছু সত্য কথা বের হয়ে পড়েছে । কিন্তু এই কিছিমের চিকনা বুদ্ধি দিয়ে মানুষের আক্রোশ থেকে কতটুকু বাঁচা সম্ভব, তা একমাত্র সময়ই বলতে পারবে ।

তথাকথিত এই সব যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসি দেওয়ার পর জাতির প্রাপ্যটি স্পষ্ট না হলেও এই সব লুটেরাদের একজনকে যদি ফাঁসিতে লটকানো যেত , তবে জাতির ভাগ্যটি সত্যি সত্যিই বদলে যেত ।

যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের বিবৃতি

হিন্দুরা বাংলাদেশেরাম রাজত্বকায়েম করতে চায়

সাপ্তাহিক আজকাল : 11/03/2016

আজকাল রিপোর্ট: গো মাংস খাওয়া নিষিদ্ধ ঘোষণা, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পোশাক নিয়ে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রীষ্টান ঐক্য পরিষদের নেতারা যে বক্তব্য দিয়েছেন তাকে অশালীন অভিহিত করে তার প্রতিবাদ জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ। সংগঠনের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, নিউইয়র্কের হিন্দু বৌদ্ধ খ্রীষ্টান ঐক্য পরিষদ নেতারা সংবাদ সম্মেলন করে নিজেদের দাবি দাওয়া, ক্ষোভ প্রকাশের সাথে সাথে সরকারের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান, বঙ্গবন্ধুর সমালোচনা, গণতন্ত্রের মানসপুত্র খ্যাত হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী প্রমুখের বিরুদ্ধে বিরূপ মন্তব্য এবং দলীয় সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পোশাক নিয়ে শিষ্টাচার বর্জিত সমালোচনা করার ধৃষ্টতা দেখিয়েছেন। হিন্দু নেতৃবৃন্দের উদ্দেশে তারা বলেন, ইসরাইলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের টাকায় দেশের মধ্যে সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প ছড়িয়ে আপনারা হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গা বাঁধানোর চেষ্টা করছেন। দেশে অস্থিতিশীলতা তৈরি করে প্রমাণ করার চেষ্টা করছেন সরকার ব্যর্থ, সরকারকে নামতে হবে। আর তখন বিশ্ব মোড়লরা বাংলাদেশে হস্তক্ষেপ করবে আর আপনারা সেখানে রামরাজত্ব কায়েম করার অপেক্ষায় বসে আছেন।
বিবৃতিতে আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ বলেন, এতদিন আমরা জানতাম বাংলাদেশে বসবাসকারী মুসলিম ছাড়াও অন্যান্য সম্প্রদায়ের লোক হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টানসহ যারা বাংলাদেশে বসবাস করেন তারা সকলেই বাঙালি। আমরা সবাই মিলেমিশে একাত্ম হয়ে বাঙালি হয়ে গেছি, আমাদের মধ্যে কোন পার্থক্য বা বিভেদ নেই। আমরা মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে অংশগ্রহণ করি নিতান্ত দেশপ্রেমের তাড়নায়। স্বাধীনতা অর্জন করেছি সকলের সম্মিলিত অংশগ্রহণে। মুক্তিযুদ্ধে যাওয়ার সময় কেউ ভাবেনি কে মুসলিম, কে হিন্দু, কে বৌদ্ধ, কে খ্রিস্টান। স্লোগান ছিল, বাংলার বৌদ্ধ, বাংলার খ্রিস্টান, বাংলার হিন্দু, বাংলার মুসলিম আমরা সবাই বাঙালি। এই চেতনায় শাণিত হয়েছিলাম বলেই মাত্র ৯ মাসের যুদ্ধে আমরা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ অর্জন করতে পেরেছি।
হিন্দু জনগোষ্ঠীর কথা উল্লেখ করে তারা বলেন, স্বাধীনতার ৪৪ বছর ধরে তারাও এ বাংলায় বসবাস করছে, লেখাপড়া করছে, ব্যবসা-বাণিজ্য করছে, সরকারের এমন কোন পর্যায় নেই যেখানে তাদের অংশগ্রহণ নেই। মন্ত্রী থেকে শুরু করে গ্রাম্য দফাদার পর্যন্ত হিন্দুদের অবস্থান অতীতে যেমন ছিল আজও তেমনি আছে। এখানে কোন বৈষম্য তৈরি হয়নি। বরং আওয়ামী লীগ সরকারকে বরাবর সমালোচনার ঝুঁকিতে থাকতে হয় হিন্দুদের উচ্চপদে চাকরি দেয়ার কারণে। কারণ আওয়ামী লীগ উপমহাদেশে ভারতীয় কংগ্রেসের পরেই একটি সেক্যুলার রাজনৈতিক দল। এই দল এবং সরকার এদেশের সকল ধর্মের মানুষের প্রতি সমআচরণ করতে সাংবিধানিকভাবে অঙ্গীকারাবদ্ধ। আজ সেই হিন্দুরা সরকারের বিরুদ্ধে, দেশের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে তাদের ভেতরে লুকিয়ে থাকা জঘন্য, হিং¯্র, জঙ্গি, মৌলবাদী,ধর্মান্ধতার বিষাক্ত রূপ প্রকাশ করেছে।
আওয়ামী লীগের এই বিবৃতিতে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের যেসব হিন্দু নেতারা আজ এমন কঠিন অগ্নিমূর্তি ধারণ করে নিজেদের আসল চেহারার প্রকাশ ঘটালেন তাদের এমন আচরণে আমাদের নিজেদেরও লজ্জা লাগছে। মানুষ এমন নির্লজ্জ বেহায়া হতে পারে? যে নেতৃবৃন্দ এসব করেছেন এরা সবাই বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষ, প্রত্যেকের সাথে আমাদের সম্পর্ক চমৎকার, আমরা অনেকে একই স্কুল কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েছি। এই যুক্তরাষ্ট্রেও আমরা পারিবারিক বন্ধুত্বের বন্ধনও ধরে রেখেছি। মিটিং মিছিল, রাজনীতি, সমাজনীতি, সংস্কৃতি, একই আদর্শের হওয়ায় পরস্পর খুব কাছাকাছি অবস্থান করছি। অথচ আজ সেই বন্ধুরা তাদের বিষাক্ত ছোবল এমনভাবে মারলো, সেই বিষ আমাদের সারা অঙ্গে ছড়িয়ে আমরা নীল হয়ে গেছি।
তাই আজ আমরাও বলতে দ্বিধা করব না, গ্রামের অশিক্ষিত সহজ সরল মানুষগুলো তখন বলতো হিন্দুদের বোগল তলে ইট, ওদের বিশ্বাস করো না। আরো বলতো তারা ডুব দেয় বাংলাদেশের পুকুরে আর ভেসে ওঠে ইন্ডিয়া গিয়ে। অর্থাৎ তারা টাকা ইনকাম করে বাংলাদেশে আর বাড়ি বানায় ভারতে। এমন সব কথা চালু থাকলেও সমাজের বিবেকবান মানুষ এসব আমলে নিত না, এটি নিন্দুকের বক্তব্য হিসেবে উড়িয়ে দেয়া হয়েছে। আজ তাদের চরিত্র মৌলবাদীর জঘন্য হিং¯্র চরিত্র হিসেবে প্রকাশ পেয়েছে। তারা আজ বাংলাদেশের বিরুদ্ধে আইএস-এর প্রতিভু হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। আমরা জানি বাংলাদেশের বিরোধী শক্তি কারা? যারা এদেশের স্বাধীনতা চায়নি, এখনো চায় না, তারাই কেবল দেশবিরোধী অপশক্তি। সেই তালিকায় আছে, বিএনপির একটা অংশ, ভাসানী ন্যাপের একটা অংশ, সিরাজ সিকদারের মতো সন্ত্রাসীদের একটা অংশ, জামায়াত ইসলামসহ আরো কিছু ইসলামপন্থী রাজনৈতিক দল। সারা বিশ্বে জামায়াতের কানেকশন ও তাদের অর্থায়নে তৈরি হয়েছে কিছু জঙ্গি সংগঠন যেমন হরকাতুল জেহাদ, লস্করে তৈয়বা, আনসারউল্লা বাংলাটিম, আনসার আল ইসলাম প্রভৃতি। সর্বশেষ যে সংগঠন তৈরি হয়েছে সেটি হচ্ছে আইএস অর্থাৎ ইসলামিক স্টেট। আজ তারা মুখে কালো কাপড় বেঁধে একে-৪৭ রাইফেল হাঁকিয়ে মানুষ খুন করে অথবা তলোয়ার দিয়ে মুসলমানদের মস্তক বিচ্ছিন্ন করে। এভাবে নাকি তারা ইসলামি খেলাফত প্রতিষ্ঠা করতে চায়।
কথা উঠেছে সারা বিশ্বে মুসলিম রেজিম ধ্বংস করার জন্য মুসলমানদের মধ্যে কলহ সৃষ্টির জন্য, প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর মধ্যপ্রাচ্যকে ধ্বংস করার জন্য ইঙ্গ-মার্কিন সা¤্রাজ্যবাদের পোষ্য ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের অর্থ দিয়ে চলছে আন্তর্জাতিক জামায়াতে ইসলাম। সেই অর্থে আজ সারা মুসলিম বিশ্বে যুদ্ধ করছে মুসলমানরা পরস্পরের বিরুদ্ধে। ধ্বংস করছে প্রাচীন, মিসরীয় সভ্যতা, ফোরাত নদীর তীরে টাইগ্রিস, ইউফ্রেটিস সভ্যতা, হাজার বছরের আফগান সভ্যতা।
আজ একবিংশ শতাব্দীতে মোসাদের বণ্টনকৃত টাকার অংশীদার হচ্ছে নিউইয়র্কের হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের নেতারা। তারাও আজ মুসলিম জঙ্গি মৌলবাদী মিলিটেন্টের মতো আবির্ভূত হয়ে বাংলাদেশের অস্তিত্বের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে। সরকার যেমন জঙ্গি দমনে জিরো টলারেন্সে গিয়ে মার্কিন প্রশাসনের প্রশংসা কুড়িয়েছে, তেমনি হিন্দুত্ববাদী  মৌলবাদীদের দমন করে উপমহাদেশে শান্তি ফিরিয়ে এনে সকল সম্প্রদায়ের জন্য নিরাপদ বাসযোগ্য বাংলাদেশ তৈরি করতে পারলে বিশ্বের সর্বত্রই এই সরকার প্রশংসিত হবে।
হিন্দু নেতারা নিজেদের দাবি করেছেন তারা সংখ্যালঘু অর্থাৎ তারা গোটা বাংলাদেশের জনসংখ্যার একটি অতি ক্ষুদ্র অংশ। এদেশ মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ ইতিহাস ঐতিহ্য সমৃদ্ধ একটি দেশ। এখানে ৯০ ভাগ মুসলিম জনগণ বসবাস করছে। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হাজার হাজার মুসলিম সাধক, গাউস, কুতুব, পীর আউলিয়া, দরবেশ এখানে এসেছেন ইসলাম প্রচারের জন্য, এটি একটি পুণ্যভূমিও বটে।
ইসলামের মূল ফান্ডামেন্টাল বিষয়ের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে কুরবাণী দেয়া। এটি সরাসরি সৃষ্টিকর্তার নির্দেশে হয়েছে। হযরত ইব্রাহীম (আ:) আল্লাহর প্রতি ভালবাসার নিদর্শন হিসেবে তার সবচেয়ে প্রিয় বস্তু তার সন্তানকে জবাই করতে উদ্যত হলে স্বয়ং আল্লাহ্ পাক পুত্রের স্থলে জানোয়ারকে জবাই করা ফরজ করে দেন। সেই থেকে মুসলমান সম্প্রদায় গরু, উটসহ বিভিন্ন হালাল প্রাণী জবাই করার নির্দেশ পেয়েছেন সৃষ্টিকর্তার মাধ্যমে। এটি সৃষ্টিকর্তাকে খুশি করার মহোৎসব ও সেই সুবাদে গরু জবাইয়ের মাংস খাওয়া অনেকটা যৌক্তিকতায় পরিণত হয়েছে। গো-মাংস একটি প্রধান খাদ্য এবং এটি প্রচুর প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবারও বটে। নিজেরা সংখ্যালঘু হয়ে ৯০ ভাগ মুসলমানদের সাথে বসবাস করে তাদের সহযোগিতায় এদেশে থেকেও আজ তারা গরু জবাই নিষিদ্ধের দাবি করে রীতিমতো সারা বিশ্বের মুসলমানের বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে যে ধৃষ্টতা প্রদর্শন করেছেন তার জন্য রাষ্ট্রের প্রচলিত আইনে এমনকি মুসলিম আইনে তাদের বিচার করা উচিত।
হিন্দু নেতৃবৃন্দের উদ্দেশে আওয়ামী লীগ নেতারা বলেন, আপনারা চরম সাম্প্রদায়িক, চরম হিংসুটে, চরম ইসলামবিরোধী। আপনারা কি একটু ভেবে দেখেছেন ইন্ডিয়াতে কি হচ্ছে মুসলমানদের ওপর? কাশ্মিরে কি হচ্ছে? আসাম, কলকাতা, দিল্লিসহ সারা ভারতে মুসলমানরা গরু জবাই করার কারণে হিন্দুরা তাদের জবাই করে দিচ্ছে প্রতিনিয়ত। খোদ নরেন্দ্র মোদি যখন গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন উগ্র হিন্দুরা সে সময় ট্রেনে আগুন দিয়ে ২০০০ মুসলমান যাত্রীকে পুড়িয়ে মেরেছে। তখন আপনাদের মতো বিশ্ব মানবতাবাদী নেতারা কোথায় ছিলেন? কোথায় ছিল আপনাদের বিবেক? সুতরাং বাংলাদেশ থেকে বাংলাদেশের বিরোধিতা করার সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করুন। দেশের মধ্যে সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প ছড়িয়ে আপনারা হিন্দু মুসলিম দাঙ্গা বাঁধানোর চেষ্টা করছেন মোসাদের টাকায়। দেশে অস্থিতিশীলতা তৈরি করে প্রমাণ করার চেষ্টা করছেন সরকার ব্যর্থ, সরকারকে নামতে হবে। আর তখন বিশ্ব মোড়লরা বাংলাদেশে হস্তক্ষেপ করবে আর আপনারা সেখানে রামরাজত্ব কায়েম করার অপেক্ষায় বসে আছেন।
বাংলাদেশে কেবল হিন্দুরা নির্যাতিত হয় না, সকল ধর্মের মানুষ জামায়াত বিএনপি জঙ্গি মৌলবাদীদের হাতে নাজেহাল হয়েছে, নির্যাতিত হয়েছে। ২০০১-এর নির্বাচনের পরে নির্যাতন কি শুধু হিন্দুদের ওপর হয়েছিল? খোদ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ওপর ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট ১১টি বোমা নিক্ষেপ করা হয়েছিল। আপনারা এখানে আছেন ভালই আছেন। বাংলাদেশ থেকে এসেছেন বাংলাদেশের পাসপোর্ট নিয়ে, আপনারা সবাই হয়ত নয়, অনেকে বিনিয়োগ করছেন ভারতে, বাড়িঘর বানাচ্ছেন ভারতে গিয়ে আর উসকানি দিচ্ছেন বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যা নিতান্ত নীতি-নৈতিকতার বাইরে।

আপনাদের কাছে আমরা অন্তত এমন আচরণ আশা করিনি। আপনারা ১৬ কোটি মানুষের নেত্রী জাতির পিতার কন্যার ব্যক্তিগত সমালোচনা করেছেন তাকে শ্রীমতি বলে উপহাস করেছেন, জাতির পিতাকে কটাক্ষ করেছেন, অপমান করছেন, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর বিরুদ্ধে কলঙ্ক লেপন করেছেন, আপনারা ধৃষ্টতার সীমা লঙ্ঘন করেছেন যা ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ। যুক্তরাষ্ট্র আ.লীগসহ প্রবাসের সকল দেশপ্রেমিক বাঙালি মুসলমান সম্প্রদায় আপনাদের এমন বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও ঘৃণা জানাই। উপরন্তু শাস্তির দাবি করছি আমরা আপনাদের মতো সাম্প্রদায়িক বিষ ছড়ানোর কীটগুলোর।