২০১৪ সালে বিএনপি জোটের বয়কটের কারণে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন বিতর্কিত হয়েছে। নির্দলীয় সরকারের দাবি এবং নির্বাচন ঠেকাতে ওই সময় বিএনপির আন্দোলনে দেখা গেছে ব্যাপক সহিংসতা।
বর্তমান পরিস্থিতিতে রাজনীতির মাঠে বিএনপি জোটকে অনেকটাই কোনঠাসা দেখা যায়। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান দাবি করেন সরকার তাদেরকে কঠোরভাবে দমন করছে।
বিএনপির নির্দলীয় সরকারের দাবি যে সরকার মানবে না সেটি বার বারই সরকারি দল বলে আসছে। আওয়ামী লীগ নেতাদের বক্তব্যে বোঝা যায় দলীয় সরকারের অধীনে বিএনপিকে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে বাধ্য করতে চায়।
আওয়ামী লীগ নেতা তোফায়েল আহমেদ বলেন- “এবারতো বিএনপির নির্বাচন না করার কোনো উপায় নাই। নির্বাচন তাদের করতেই হবে। আর যদি নির্বাচন না করে তাহলে আমরা জানি না বিএনপির ভবিষ্যৎ কী হবে?”
নির্বাচন কমিশন সবসময় বাংলাদেশের রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ। আওয়ামী লীগ বলছে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন প্রক্রিয়া সঠিক পথেই এগুচ্ছে।
তোফায়েল আহমেদের মতে আগামী নির্বাচনে ঐতিহাসিক এবং গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবেন রাষ্ট্রপতির নিয়োগ দেয়া নতুন কমিশন। অন্যদিকে শুরুতে সার্চ কমিটির সদস্যদের নিয়েই প্রশ্ন তুলেছিল বিএনপি।
সাবেক নির্বাচন কমিশনার অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন নির্বাচন কমিশনের ওপর রাজনৈতিক দলের আস্থাটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
“কারণ রাজনৈতিক দলগুলো হচ্ছে ইলেকশন কমিশনের একটা বড় স্টেকহোল্ডার। তাদের যদি আস্থা না থাকে তাহলে সে নির্বাচন কমিশন যত ভালভাবেই নির্বাচন পরিচালনা করুক না কেন সেই আস্থার সংকট থেকেই যাচ্ছে”।
কমিশনের প্রতি আস্থা নিয়ে মি. হোসেন বলেন, যদি নূন্যতম পক্ষে সবার কাছে মোটামুটি গ্রহণযোগ্য হয় তাহলেও সকল দলের আস্থা এরমধ্যে থাকবে। তার ভাষায়, “নির্বাচন কমিশন হান্ড্রেড পার্সেন্ট গ্রহণযোগ্য সবার কাছে করা সম্ভব নয়।”
বিএনপির প্রতিষ্ঠার পর ইতিহাসে সবচে বেশি সময় এখন ক্ষমতার বাইরে রয়েছে। বর্তমান রাজনীতিক পরিস্থিতির কারণেই আগামী নির্বাচন এবং নতুন কমিশন বিএনপির জন্য গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। নির্বাচন কমিশন গঠনে বিএনপি আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব দিয়েছে।
নজরুল ইসলাম খান বলেছেন “সত্যি সত্যি সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণ যাদের প্রতিনিধি বানাতে চায় তারা দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নেবে। আমরা বিশ্বাস করি জনগণ যদি সে সুযোগটা পায় তাহলে আমাদের সুযোগ আছে ক্ষমতায় আসার।
সে কারণে আমাদের কাছে এটা অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ যে নির্বাচন কমিশনটা যেন অনুগত না হয়, সরকারের ইচ্ছাপূরণের হাতিয়ার না হয়। যদি সেটাই হয় তাহলে জনগণের যত সমর্থনই থাকুক না কেন আমরা বিজয়ী হতে পারবো না।”
সংসদে বিরোধীদল না হলেও বিএনপি জোটই মূলত বাংলাদেশে রাজনীতিক বিরোধী শক্তি। তাই আগামী নির্বাচন এবং নতুন নির্বাচন কমিশনের গ্রহযোগ্যতার বিচারে বিএনপির রাজনীতি ও সিদ্ধান্তের দিকে বিশেষ দৃষ্টি থাকবে সবার।