৮ মাসে সবচেয়ে কম রেমিট্যান্স গত মাসে, চাপ বাড়বে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে

  • নয়া দিগন্ত অনলাইন
  •  ০১ নভেম্বর ২০২২, ২২:৫৪

 


বৈদেশিক মুদ্রা সরবরাহ বাড়ানোর অন্যতম উৎস রেমিট্যন্স সরবরাহ আরো কমে গেল। আগের মাসের ধারাবাহিকতায় গত অক্টোবরে রেমিট্যান্স প্রবাহ কমেছে ৭.৩৭ শতাংশ। গত বছরের অক্টোবরে যেখানে দেশে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৬৪ কোটি ৮৭ লাখ ডলার, সেখানে গত মাসে তা কমে নেমেছে ১৫২ কোটি ৫৪ লাখ ডলারে। এ রেমিট্যান্স গত ৮ মাসের মধ্যে সবচেয়ে কম। রেমিট্যান্স প্রবাহ কমে যাওয়ায় বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আরো চাপে পড়ে গেলো। কারণ, আগামী সপ্তাহে এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের দায় দেড় বিলিয়ন ডলারের ওপরে পরিশোধ করতে হবে। গতকাল বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ছিল ৩৫.৭৯ বিলিয়ন ডলার। দেড় বিলিয়ন ডলার বাদ দিলে রিজার্ভ ৩৪ বিলিয়নের ঘরে নেমে যাবে। আর ঋণ পাওয়ার শর্ত হিসেবে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল আইএমএফের হিসেব পদ্ধতি অনুসরণ করে ৮ বিলিয়ন ডলার বাদ দিলে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ২৬ বিলিয়ন ডলারে নেমে যাবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান থেকে দেখা যায়, গত ফেব্রুয়ারিতে ১৪৯ কোটি ৪৪ লাখ (১.৪৯ বিলিয়ন) ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা। এর পর আট মাস পর সর্বনিম্ন রেমিট্যান্স আসলো অক্টোবরে। গত জুলাইতে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স এসেছিল ২০৯ কোটি মার্কিন ডলার। এর পরের মাস থেকে কমতে শুরু করে। গত আগস্টে এসেছিল ২০৩ কোটি ৭০ লঅখ মার্কিন ডলার। সেপ্টেম্বরে এক ধাক্কায় কমে ১৬৪ কোটি ডলারে নেমে যায়। আর অক্টোবরে তা আরো কমে নামলো ১৫২ কোটি ডলারে।

কেন রেমিট্যান্স প্রবাহ কমছে এমন প্রশ্নের জবাবে একটি ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী গতকাল নয়া দিগন্তকে জানিয়েছেন, ডলারের মূল্য কমিয়ে আনার জন্য রেমিট্যান্সের ডলারের মুল্য বেধে দেয়া হয়। প্রথমে ১০৮ টাকা করা কর প্রতি ডলার, যার আগের দিন ছিল ১১৫ টাকা। পরে তা দুই দফায় এক টাকা কমিয়ে ১০৭ টাকায় নামিয়ে আনা হয়। রেমিট্যান্স প্রবাহ কমে যাওয়ার অন্যতম কারণ গুলোর মধ্যে একটি বলে মনে করা হচ্ছে। অপরদিকে করোনার মধ্যে হুন্ডি তৎপরতা কমে গিয়েছিল। ওই কর্মকর্তা জানিয়েছেন, হুন্ডি তৎপরতা আরো বেড়ে গেছে। সবমিলেই রেমিট্যান্সের ওপর বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে।

অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ এই সূচক কমায় রিজার্ভ নেমেছিল ৩৬ বিলিয়ন ডলারের নিচে। গতকাল মঙ্গলবার দিন শেষে তা ৩৫ দশমিক ৭৯ বিলিয়ন ডলারে নেমে গেছে। আগামী সপ্তাহে এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) ১ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলারের মতো আমদানি বিল পরিশোধের পর রিজার্ভ নেমে আসবে ৩৪ দশমিক ৩০ বিলিয়ন ডলারে। গত বছরের আগস্টে এই রিজার্ভ অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে ৪৮ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করে। এক বছর আগে ২৭ অক্টোবর রিজার্ভ ছিল ৪৬ দশমিক ৫০ বিলিয়ন ডলার।