- ২৪ ডেস্ক
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) নির্বাচনে একচেটিয়া জয় পেয়েছে ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেল ‘সম্প্রীতির শিক্ষার্থী জোট’। ৪৪ বছরের দীর্ঘ বিরতির পর সংগঠনটি এই ছাত্র সংসদের নেতৃত্বে ফিরল। মোট ২৬টি পদের মধ্যে ভিপি ও জিএসসহ ২৪টি পদেই জয়লাভ করেছে তারা।

বৃহস্পতিবার ভোরে সপ্তম চাকসু নির্বাচনের ফল ঘোষণা করা হয়। ঘোষিত ফল অনুযায়ী, সহসভাপতি (ভিপি) পদে ৭ হাজার ৯৮৩ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন মো. ইব্রাহিম হোসেন। তিনি ছাত্রশিবিরের চট্টগ্রাম মহানগর দক্ষিণের সভাপতি। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছাত্রদলের সাজ্জাদ হোসেন পেয়েছেন ৪ হাজার ৩৭৪ ভোট। সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে ৮ হাজার ৩১ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন একই প্যানেলের সাঈদ বিন হাবিব। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবিরের সাহিত্য সম্পাদক। তার প্রতিদ্বন্দ্বী ছাত্রদলের মো. শাফায়াত পেয়েছেন ২ হাজার ৭৩৪ ভোট।
তবে সহসাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদে জয় পেয়েছে ছাত্রদল। সংগঠনটির প্রার্থী আইয়ুবুর রহমান ৭ হাজার ১৪ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। এই পদে ছাত্রশিবিরের সাজ্জাদ হোসেন পেয়েছেন ৫ হাজার ৪৫ ভোট। এছাড়া সহ খেলাধুলা ও ক্রীড়া সম্পাদক পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে জয়ী হয়েছেন তামান্না মাহবুব নামের এক শিক্ষার্থী।
এর আগে সর্বশেষ ১৯৮১ সালের চাকসু নির্বাচনে ছাত্রশিবির জয় পেয়েছিল। সেবার ভিপি হয়েছিলেন জসিম উদ্দিন সরকার এবং জিএস হয়েছিলেন আবদুল গাফফার। এরপর ১৯৯০ সালের নির্বাচনে তারা হেরে যায়। দীর্ঘ তিন দশকেরও বেশি সময় পর এই নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন নেতৃত্ব পেল চাকসু।
একসময় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্রশিবিরের ব্যাপক প্রভাব থাকলেও ২০১৪ সালের পর থেকে তাদের কার্যক্রম প্রকাশ্যে তেমন দেখা যায়নি। গত বছরের আগস্টে প্রায় এক দশক পর ক্যাম্পাসে প্রকাশ্যে ফেরে সংগঠনটি। এর এক বছরের মধ্যেই চাকসু নির্বাচনে তাদের এই বড় বিজয় বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতিতে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মনির উদ্দিন জানিয়েছেন, অত্যন্ত শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ একটি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রথমবারের মতো ভোট দিতে পেরে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন অনেক নতুন প্রজন্মের শিক্ষার্থী। তাদের মতে, জাতীয় নির্বাচনে ভোট দিতে না পারলেও চাকসুতে ভোটদানের অভিজ্ঞতা তাদের জন্য একটি বড় গণতান্ত্রিক অনুশীলন।