খেলাধুলা |
অবহেলা আর নজরদারির অভাবে গত তিন মাসে জাতীয় পর্যায়ে খেলা ৭ ক্ষুদে কিশোরী ফুটবলার বাল্যবিবাহের শিকার হয়েছেন কুড়িগ্রামের প্রত্যন্ত এলাকায়।
যে তালিকায় আছেন ২০১৭ বঙ্গমাতা গোল্ডকাপের সেরা খেলোয়াড় স্মরলিকা পারভীন। করোনার কারণে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ এবং দারিদ্রের কাছে হার মেনে বাল্যবিবাহ দিয়েছেন অভিভাবকরা। ২০১৭ সালে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব গোল্ডকাপের সেরা খেলোয়াড় হন স্মরলিকা পারভীন। হ্যাটট্রিক কন্যা খ্যাত পারভিন পুরস্কার নেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত থেকে।
এই ছবি এখন শুধুই স্মৃতি। ফুটবল মাঠের পরিবর্তে পারভিন ও তার দলের ৭ কিশোরী সংসার পাঠে ব্যস্ত এখন। বাল্যবিয়ের কালো থাবায় গ্রাস করেছে তাদের জীবন। খেলোয়াড়ি প্রতিভা ঢেকে গেছে চার দেয়ালের মাঝে।
কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলার সীমান্তবর্তী সাবেক ছিটমহল দীঘলটারী দক্ষিণ বাঁশজানী গ্রামের ২০ জন কিশোরী ফুটবলার বছর তিনেক আগে অংশ নেন বঙ্গমাতা ফুটবলে। ইউনিয়ন ও উপজেলার এবং জেলার বাধা টপকে বিভাগীয় চ্যাম্পিয়ন হয়ে জাতীয় পর্যায়ে খেলে পারভিনের দল। সেমি ফাইনালে চট্টগ্রামের বাঁশখালী স্কুলের কাছে হারলেও হ্যাটট্রিক করেন স্মরলিকা পারভীন।
সেসব এখন অতীত! করোনার থাবায় দারিদ্র পীড়িত সংসার হয়েছে আরও নিঃস্ব। বাধ্য হয়েই অভিভাবকরা বিয়ে দিয়ে দেন স্মরলিকাদের। এই মেয়েদের বয়স কম থাকায় নিবন্ধন করতে না পেরে শুধুমাত্র গ্রামীণ আর ধর্মীয় রীতিতে বিয়ে দেন পরিবারের লোকজন। করোনায় স্কুল বন্ধ, প্রতিকুল পরিবেশ, দারিদ্র, অসচেতনতাসহ নানা কারণে ভালো ঘর পাওয়ায় স্বরলিকাকে বিয়ে দেন কৃষক বাবা।
এদিকে, করোনার থাবায় দারিদ্র বাড়ছে এলাকায়, দিনে দিনে বাড়ছে বাল্যবিয়ের হার। সেটা স্বীকারও করছেন অভিভাবকরা।
গেলো তিন মাসে বাঁশজানী দলের অধিনায়ক ১০ম শ্রেণি পড়ুয়া স্বরলিকা, ১০ম শ্রেণির আরেক ছাত্রী জয়নব, ৯ম শ্রেণির শাবানা, ৮ম শ্রেণির রত্না, আঁখি, শারমিন এবং আতিকার বিয়ে হয়ে গেছে। এলাকায় শুধু কিশোরী ফুটবলার নয়; বাল্যবিয়ের স্বীকার হচ্ছে সাধারণ কিশোরীরাও।
ইউএইচ/