‘৩শ কোটি টাকা সিঙ্গাপুরের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে আছে’

 

এ কথা বলে প্রতারণা, অর্থ আত্মসাৎ, গ্রেপ্তার ২

আজাদী প্রতিবেদন | শনিবার , ২৪ জুন, ২০২৩

‘ম্যাগনেটিক সীমানা পিলার’ বিক্রির টাকা দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে দুই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে বন্দর থানা পুলিশ। গত বৃহস্পতিবার রাতে নগরীর বন্দর এলাকা থেকে মো. জুয়েল হোসেন (৩৩) ও মো. আজম (৫৫) নামে দুই প্রতারককে গ্রেপ্তার করা হয়।

পুলিশ জানিয়েছে, সীমানা বিক্রির ৩০০ কোটি টাকা সিঙ্গাপুরের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে আছে এবং সেই টাকা ফিরিয়ে এনে সাত কোটি টাকা করে ভাগ করে দেওয়া হবে–এই প্রলোভনে বিভিন্নজনের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন আটকরা। বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সঞ্জয় কুমার সিনহা জানান, গ্রেপ্তার জুয়েল প্রতারক চক্রের মূল হোতা। ভোলার চরফ্যাশনে তার বাড়ি। আগে নগরীর বন্দর থানা এলাকায় সবজি বিক্রি করতেন। এলাকার বেশ কয়েকজনের সঙ্গে সুসম্পর্কের সুবাদে জুয়েল ‘বন্ধুমহল গ্রীণবাংলা সমবায় সমিতি’ নামে নিবন্ধনবিহীন একটি প্রতিষ্ঠান খোলেন। গ্রেপ্তার আজম সমিতির কোষাধ্যক্ষ এবং শেখ মোহাম্মদ ইসা সভাপতি ও শাওন সম্পাদক। তারা জুয়েলের সহযোগী। জুয়েল তার পরিচিতদের বলতেন, তার কাছে থাকা একটি ম্যাগনেট সীমানা পিলার বিদেশি একটি প্রতিষ্ঠানের কাছে ৩০০ কোটি টাকায় বিক্রি করেছেন তিনি। যার মধ্যে ৪০ লাখ টাকা ইতোমধ্যে তার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা হয়েছে। বিক্রির ৩০০ কোটি টাকা সিঙ্গাপুরের একটি ব্যাংকে জমা আছে। এসব টাকা এককভাবে নিজের অ্যাকাউন্টে আনা সম্ভব নয়, সেজন্য কয়েক জনের ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে এসব টাকা দেশে আনতে হবে। এসব টাকা দেশে এনে জনপ্রতি সাত কোটি টাকা করে দেওয়া হবে।

জুয়েল ও তার সহযোগীরা ৫৯ জনের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার তথ্য পুলিশ পেয়েছে। আরও ভুক্তভোগী আছে বলে তারা জানতে পেরেছেন। এছাড়া টাকা আনতে সিঙ্গাপুরে নেওয়ার কথা বলে অন্তত ৩০ জনকে পাসপোর্ট তৈরি করে দেওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে, যা পুলিশ যাচাই বাছাই করছে।

বন্দর থানার উপ–পরিদর্শক কিশোর মজুমদার জানান, বন্দর থানার কলসী দিঘীর পাড় এলাকার সোহাগ নামে এক ব্যক্তি জুয়েল ও তার তিন সহযোগীর বিরুদ্ধে প্রতারণার মামলা করেন। তার অভিযোগ, সোহাগের বন্ধ হয়ে যাওয়া জুতার ব্যবসায় সাত কোটি টাকা বিনিয়োগের প্রলোভন দেখিয়ে জুয়েল তার কাছ থেকে প্রথমে ৫০ হাজার টাকা নেন। এভাবে গত ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত দফায় দফায় চার লাখ ২০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়। কয়েক দফায় চার লাখ টাকারও বেশি টাকা দেওয়ার পর তিনি জানতে পারেন জুয়েল এভাবে সাত কোটি টাকা দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে আরও বিভিন্ন জনের কাছে থেকে টাকা সংগ্রহ করেছেন।

‘গত ১৬ মে সোহাগ কথিত সমবায় প্রতিষ্ঠানে গেলে তাকে জুয়েল, আজম, শেখ মোহাম্মদ ইসা ও শাওন নামে অপর একজন মিলে মারধর করেন। আমরা জুয়েলসহ প্রতারক চক্রের বিষয়ে তদন্তে নেমেছিলাম। সোহাগের সঙ্গে কথা বলার সময় তিনি কথিত সমবায় সমিতির অফিসে তাকে মারধরের বিষয়টি চেপে গিয়েছিলেন। জুয়েল ও আজমকে গ্রেপ্তারের পর সেটি জানিয়েছেন এবং মামলা করেছেন।’