২০ দিনে ৪ বাড়ি ও প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর ককটেল বিস্ফোরণ

২০ দিনে ৪ বাড়ি ও প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর ককটেল বিস্ফোরণ

রাজধানীতে ২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশ পণ্ড হওয়ার পর বিভিন্ন জেলায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ধরপাকড় চালাচ্ছে বলে অভিযোগ দলটির নেতাদের। পুরোনো মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া থেকে বাঁচতে বাড়িছাড়া বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতারা। এ অবস্থায় চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে ২০ দিনে দলটির চার নেতার বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে মুখোশধারী দুর্বৃত্তরা। প্রতিটি বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলার ধরন একই। হঠাৎ এ ধরনের ভয়ংকর ঘটনা দেখে আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন হামলার শিকার পরিবারের সদস্যরা। কোনো অভিযোগ না করায় পুলিশও মুখোশধারীদের শনাক্তের উদ্যোগ নেয়নি।

বিএনপি নেতাদের দাবি, আওয়ামী লীগ কর্মীরা এ হামলা চালিয়েছে। ভোটের আগে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করতে হামলা, ভাঙচুর ও নেতাদের নামে গায়েবি মামলা দেওয়া হচ্ছে।

আলমগীরের স্ত্রী মরিয়ম বেগম বলেন, হঠাৎ রাত ৪টার দিকে বাড়ির বাইরে ককটেল বিস্ফোরণের শব্দে ঘুম ভেঙে যায়। তখন দেখি আমার ও শ্বশুরের ঘরের জানালার দিকে ইটপাটকেল ছুড়ছে দুর্বৃত্তরা। পরে দেখি, সিঁড়ি ও ব্যালকনিতে আগুন জ্বলছে। আমি আতঙ্কিত হয়ে এক কক্ষ থেকে অন্য কক্ষে যাওয়ার সময় আমার ১১ মাসের ছেলে আরহামের মাথায় ও হাতে আঘাত লাগে। শ্বশুরের কক্ষে গিয়ে দেখি ককটেলের গ্যাসে তাঁর মুখ ফুলে গেছে।

এর এক সপ্তাহ আগে ১৩ নভেম্বর রাত ৪টার দিকে ১০-১২ জন মুখোশধারী পৌরসভা ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও পৌর বিএনপির সভাপতি শামসুল আলম আজাদের বাড়িতে হামলা চালায়। এ সময় তারা ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে বাড়ির প্রথম ও দ্বিতীয় তলার জানালার গ্লাস ভাঙচুর করে।

গত ৮ নভেম্বর বুধবার সকাল ৬টার দিকে ফৌজদারহাট জলিল গেট এলাকায় বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম মহাসচিব (কারাবন্দি) আসলাম চৌধুরীর প্রতিষ্ঠান সোনালী সিএনজি স্টেশনে হামলা চালায় মুখোশধারীরা। সেখানেও ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে সিএনজি স্টেশনের অফিসের দরজা-জানালার গ্লাস ভাঙচুর করা হয়। এ ছাড়া ২৯ অক্টোবর সীতাকুণ্ড উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব কাজী মহিউদ্দিনের বাড়িতে একই কায়দায় হামলা চালানো হয়।

সীতাকুণ্ড উপজেলা বিএনপি সদস্য সচিব কাজী মহিউদ্দিন বলেন, আওয়ামী লীগ ও তাদের অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা বিএনপি নেতাদের বাড়ি এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে গুপ্ত হামলা চালাচ্ছে। এ ঘটনায় পরিবারের সদস্যরা আতঙ্কে রয়েছেন।

অভিযোগ অস্বীকার করে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোরশেদ হোসেন চৌধুরী বলেন, যুবদলের অভ্যন্তরীণ কোন্দলে এ ধরনের ঘটনা ঘটছে। আওয়ামী লীগ বা প্রশাসনের কোনো লোক সেখানে যায়নি। এগুলো তাদের সাজানো হামলাও হতে পারে। ঘটনা যদি সত্য হয়, তাহলে তারা থানায় মামলা করেনি কেন?

সীতাকুণ্ড মডেল থানার ওসি তোফায়েল আহমেদ বলেন, ঘটনাগুলো শুনেছি। তবে কেউ অভিযোগ নিয়ে আসেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সমকাল