- অ্যাডভোকেট এম এ করিম
- ২৬ মে ২০২৩, ১৯:৫৫
১. একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার দিন তারিখ ছিল ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর। ওই জাতীয় নির্বাচনে, দেশবরেণ্য রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ডক্টর কামাল হোসেনকে নেতৃত্বের পুরোভাগে রেখে দেশের প্রধান জনপ্রিয় শক্তিশালী বিরোধীদল বিএনপি এবং তাদের নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট জামায়াতে ইসলামীসহ অপরাপর বিরোধী দল অংশগ্রহণ করেছিল। নির্বাচনে অংশগ্রহণের আলোচনান্তে সরকারপ্রধান শেখ হাসিনা বিরোধী জোটকে আশ্বাস দিয়েছিলেন, সরকারি হস্তক্ষেপ ব্যতীত তার সরকারের অধীনে ওই সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য, নিরপেক্ষ ও অবাধ হবে। ওইরূপ শর্তে বিরোধী জোট নির্বাচনে অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে প্রয়াত ডা: জাফরুল্লাহ চৌধুরীর বলিষ্ঠ ভূমিকা ছিল। ড. কামাল হোসেনের রাজনীতির দর্শন ছিল গণতন্ত্রের মানসপুত্র হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর গণতন্ত্রের দর্শন। ড. কামাল হোসেনের হাত ধরেই ’৭২ সালের বাংলাদেশের সংবিধান রচিত হয়। স্বাধীনতার চেতনার মূল উৎস ছিল গণতন্ত্র, সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের সংবিধানের মূল চার স্তম্ভের অন্যতম ছিল গণতন্ত্র। ড. কামাল হোসেন গণফোরাম নামে এক রাজনৈতিক দল গঠন করে জনগণের ক্ষমতা ও ভোটাধিকার জনগণের কাছে ফিরিয়ে দেয়ার জন্য সংগ্রামরত একজন জননন্দিত সাহসী পুরুষ হিসেবে দেশব্যাপী পরিচিতি পেয়ে গেছে।
২. অবস্থাদৃষ্টে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে রাজনৈতিক হিংসাত্মক ও প্রতিশোধমূলক মিথ্যা মোকদ্দমার বেড়াজালে জেলহাজতে আটক রাখার প্রেক্ষাপটে ড. কামাল হোসেন ও সংগ্রামী জননেতা মির্জা ফখরুলের যৌথ নেতৃত্বেই ঐক্যফ্রন্টের নামে অপরাপর বিরোধী নেতাদের সমন্বয়ে একটি মাত্র জনপ্রিয় মার্কা ‘ধানের শীষ’ নিয়ে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত করা হয়। উল্লেখ্য, পাকিস্তানের শাসনামলে পাক স্বৈরাচার সরকারের শাসনামল থেকে জনগণকে মুক্ত করার কৌশল হিসেবে ১৯৫৪ সালের পাকিস্তানের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিন জাতীয় নেতা শেরেবাংলা, মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী ও সোহরাওয়ার্দীর নেতৃত্ব যৌথভাবে ‘নৌকা মার্কা’ নিয়ে নির্বাচনে অবতীর্ণ হয়ে বিপুল ভোটে জয়লাভ করে সরকার গঠন করেছিলেন। ১৯৫৪ সালের আদলেই ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে ক্ষমতাসীন স্বৈরাচারী সরকারকে হটানোর ওইরূপ ঐক্যফ্রন্টের নামে রাজনৈতিক পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়।
ঐক্যফ্রন্টের নামে ওইরূপভাবে একটি মাত্র মার্কা নিয়ে নির্বাচনে অবতীর্ণ হওয়ার প্রাক্কালে ধানের শীষ মার্কার পক্ষে দেশের সর্বত্র সাজ সাজ রবে মুখরিত হয়ে যায়। ঐক্যফ্রন্টের পক্ষে দেশে গণজোয়ার জোরালোভাবে দৃশ্যমান হবে, তা ক্ষমতাসীন সরকারপ্রধান এবং তাদের চৌদ্দদলীয় জোট সরকার ঘুর্ণাক্ষরে অনুধাবন করতে পারেনি। সংবিধান অনুযায়ী সরকারকে সংসদ নির্বাচন দিতে হবে এবং নির্বাচনের নামে ক্ষমতাসীনরা পুনঃক্ষমতাসীন থাকার শতভাগ নিশ্চয়তাস্বরূপ ঐক্যফ্রন্টের ধানের শীষের নির্বাচনকে প্রতিহত করার কৌশলস্বরূপ নির্বাচনের দিন-ক্ষণের আগের রাতে দেশের বেশির ভাগ সেন্টারের দিনের ভোট রাতেই করে ফেলার কৌশল অবলম্বন করেন। সেই পরিকল্পনার অংশ হিসেবেই নির্বাচন কমিশন এবং প্রশাসনকে ব্যবহার করে ২৯ ডিসেম্বর দিবাগত রাতের গভীরে নির্বাচন সম্পন্ন করে ফেলে, যা বিশ্বে একমাত্র নজিরবিহীন ঘটনা। বাদ বাকি কিছু সেন্টারে দিনের ভোট অনুষ্ঠিত করার নামে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা ভোটকেন্দ্র দখল করে দিনের প্রথম ভাগেই ভোট দেয়ার কাজ তাদের দলের পক্ষে সম্পন্ন করে নেয়। ক্ষমতাসীনরা এক ভিন্ন অপকৌশলে একতরফাভাবে নির্বাচনে জয় পেয়ে যায়। ৩০ ডিসেম্বর শাহ মোয়াজ্জেম হোসেনের সেন্টারে ও মওদুদ আহমদের সেন্টারে তাদের অর্ধশত গাড়িবহর আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী কর্মীরা ভাঙচুর করেছিল। ওই ২০১৮ সালের সংসদ নির্বাচন ছিল শতভাগ অগ্রহণযোগ্য, সংবিধানবিরোধী কলঙ্কজনক নির্বাচন। ২০১৮ সালের নির্বাচন মধ্যরাতের নির্বাচন বলে দেশের সর্বত্র আলোচিত।
৩. ড. কামাল হোসেন ও মির্জা ফখরুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন ঐক্যফ্রন্টের ধানের শীষ মার্কার দেশব্যাপী ব্যালট বিপ্লবের সাজ সাজ রব পরিলক্ষিত না হলে ক্ষমতাসীনরা দিনের ভোট রাতেই করে ফেলার পরিকল্পনা থেকে বিরত থাকত এবং ঐক্যফ্রন্ট ক্ষমতাসীন স্বৈরাচারী সরকারকে ব্যালট বিপ্লবের মাধ্যমে পরাজিত করে জয় পেয়ে যেত। ওই অনাকাক্সিক্ষত ফলাফল দেশে-বিদেশে প্রত্যাখ্যাত হলেও ক্ষমতাসীনরা ক্ষমতা আঁকড়ে আছে এবং ওই অনির্বাচিত ক্ষমতাসীন সরকারের অধীনেই দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে পুনঃক্ষমতাসীন থাকার পথে হাঁটছে। রাজনৈতিক বিচার বিশ্লেষণে এবং বাস্তবতার নিরিখে অবৈধ ক্ষমতাসীন সরকারের অধীনে দ্বাদশ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে না।
৪. ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে একাদশ সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিরুদ্ধে পরবর্তীতে সমালোচনার ঝড় উঠতে থাকে। রাজনৈতিক বিচার বিশ্লেষণে ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে ঐক্য ফ্রন্টের নামে ক্ষমতাসীন অপ সরকারের শাসনামলের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ ছিল সঠিক পদক্ষেপ। ঐক্যফ্রন্টের ধানের শীষ মার্কার দিকে জনগণের ছিল ঐকান্তিক সমর্থন এবং উৎসাহ। ক্ষমতাসীনরা ক্ষমতা আঁকড়ে রাখার হীন স্বার্থের অপকৌশল সংসদীয় গণতন্ত্রের দেশে তা ব্যবহার করবে ঐক্যফ্রন্টের নেতাদের রাজনৈতিক ধ্যান ধারণার নাগালের মধ্যে ছিল না। কেননা গণতান্ত্রিক বিশ্বে এটা ছিল ভোটগ্রহণের অপকৌশলের এক নব্য স্বৈর ফর্মুলা। ড. কামাল হোসেনের ওইরূপ পদক্ষেপ ছিল নির্ভুল রাজনৈতিক প্রজ্ঞার ফসল।
৫. মূলত ২০১৮ ইং সালের ওইরূপ সংসদ নির্বাচনের পরই ক্ষমতাসীন সরকারের প্রকৃত স্বরূপ দেশের প্রধান বিরোধী দলসহ অন্যান্য বিরোধী দল এবং জনগণের অনুধাবন করার ফসলই আসছে দ্বাদশ নির্বাচনকে সামনে রেখে ক্ষমতাসীন সরকারের অধীনে নির্বাচনে অংশগ্রহণ হতে বিরত থাকার ইস্পাতকঠিন সিদ্ধান্ত নিয়ে যুগপৎ আন্দোলনে বিরোধী দলগুলোর একাট্টা অবস্থান। বহির্বিশ্ব, জাতিসঙ্ঘ, আমেরিকা, ব্রিটেন, ইইউ, জাপান, জার্মানিসহ ‘গণতান্ত্রিক’ বিশ্ব দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন, যাতে সব দলের অংশগ্রহণমূলক অবাধ সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় সেই জন্য সরকারের ওপর প্রচণ্ড চাপ প্রয়োগ করে যাচ্ছে। ফলস্বরূপ বিচার বহির্ভূত হত্যা, গুম, খুন, মানবাধিকারবিরোধী কর্মকাণ্ডের জন্য র্যাবের ৭ কর্মকর্তার ওপর আমেরিকা স্যাংশন আরোপ করে একটি উত্তম কাজ করেছেন। বাইডেন প্রশাসন-এর শাসনামলে বিশ্বের দুটি গণতান্ত্রিক সামিটে প্রথম ১০০টি এবং পরে ১১০টি দেশ আমন্ত্রিত হলেও বাংলাদেশ সেখানে আমন্ত্রিত হয়নি। সংসদীয় গণতান্ত্রিক প্রজাতান্ত্রিক স্বাধীন বাংলাদেশ বিশ্বে অনুষ্ঠিতব্য বিশ্বনন্দিত গণতান্ত্রিক সামিটে আমন্ত্রিত হতে বঞ্চিত হওয়ার অর্থ, গণতান্ত্রিক বিশ্ব হতে বাংলাদেশ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবারই নামান্তর।
৬. দেশে হারানো গণতন্ত্র ফিরে পেতে দেশের প্রধান বিরোধী দল বিএনপি এবং তাদের নেতৃত্বাধীন অপরাপর জোট বা বিরোধী দল যা দেশে রাজনৈতিক দলগুলোর সংখ্যাগরিষ্ঠ এবং দেশের মুক্তিকামী জনগণ তাদের যুক্তিযুক্ত দাবি সরকার পদত্যাগ, সংসদ বিলুপ্তির মাধ্যমে নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন করার দাবি করে রাজপথ উত্তপ্ত করে যাচ্ছেন; নতুবা ক্ষমতাসীন সরকারের অধীনে তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না এবং সরকারকে ওই যুক্তিযুক্ত দাবি পাশ কাটিয়ে সংসদ নির্বাচনের নামে ভোটারবিহীন নির্বাচন করলে তা প্রতিহত করার জোরালো বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছেন। ওইরূপ ন্যায়সঙ্গত দাবি দেশের মাটি ও আপামর জনগণের মতামতেরই প্রতিফলন। সরকারপ্রধান মাটিতে কান পাতলেই সেই প্রতিধ্বনি শুনতে পাবেন।
৭. দেশের জনগণের এবং গণতান্ত্রিক বিশ্বের অন্তর্নিহিত চাহিদা, বাংলাদেশে দ্বাদশ নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্রে ফিরে আসুক। তারা সব দলের অংশগ্রহণের মাধ্যমে অবাধ সুষ্ঠু গ্রহণযোগ্য নির্বাচন চাচ্ছেন। বিরোধী দল চাচ্ছে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ তথা তত্ত্বাবধায়ক সরকার। ক্ষমতাসীনরা সংবিধানের কথা বলে বিরোধী দলের দাবি প্রত্যাখ্যানের যুক্তি দিয়ে তাদের সরকারের অধীনেই সুষ্ঠু অবাধ গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের ভুয়া প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন। প্রধান বিরোধী দল বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ হতে বিরত থাকলে সরকার যেকোনো প্রক্রিয়ার পথে হাঁটুক না কেন, নির্বাচনের নামে প্রহসনমূলক ভোটারবিহীন নির্বাচনই হবে। ক্ষমতাসীনরাই ক্ষমতায় থাকবে। সরকারপ্রধানসহ অপরাপর মন্ত্রীরা তাদের সরকারের অধীনেই গ্রহণযোগ্য সুষ্ঠু অবাধ নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি দিয়ে যাচ্ছেন, অপর দিকে তারাই বিএনপিকে ক্ষমতায় আসতে দিবেন না। ২০৪১ সাল পর্যন্ত তারা ক্ষমতাসীন থাকবেন ইত্যাদি কথা বলে যাচ্ছেন। সংসদীয় গণতন্ত্রের দেশে সংসদ নির্বাচনে ভোট প্রয়োগের মাধ্যমে ক্ষমতার রদবদল না হলে এটা কিসের নির্বাচন? দেশ সব দলের অংশগ্রহণে গ্রহণযোগ্য সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার গঠনপ্রক্রিয়া দেখতে চাইলে প্রকারান্তে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারই একমাত্র পন্থা। গণতান্ত্রিক বিশ্ব খোলাসা করে বাস্তবসম্মত এই কথাটি না বললেও কৌশল অবলম্বন তারই প্রতিধ্বনি করে যাচ্ছেন।
৮. ইতোমধ্যে সরকারপন্থী বিরোধী নেতা জি.এম কাদের নয়া দিগন্তে এক সাক্ষাৎকারে স্পষ্টভাবে বলেছেন, সরকার তার দল এবং প্রশাসনকে এক করে ফেলেছেন। প্রশাসন রাষ্ট্রীয় কাঠামোর মধ্যেই অবস্থান করলে সরকার তার দলকে ক্ষমতাসীন রাখার জন্য রাষ্ট্রীয় আইন- শৃঙ্খলা বাহিনীকে ব্যবহার করবে যেখানে বিরোধী দল যত জনপ্রিয়ই হোক না কেন, নির্বাচনে অংশগ্রহণে অবাধ সুষ্ঠু গ্রহণযোগ্য নির্বাচন পাবেন না। বাংলাদেশে ক্ষমতাসীন সরকার রাজনৈতিকভাবে প্রশাসনকে একাকার করে জাতীয় সংসদ নির্বাচন করার যে অবস্থান নিয়েছেন সেখানে সংসদ নির্বাচনের নামে শুধু সরকারপন্থীদের একতরফা নির্বাচনের প্রচেষ্টার কৌশল মাত্র করা হচ্ছে। নির্বাচনের নামে ব্যালট বাক্স কেন্দ্রে যাবে আসবে ভোটারশূন্য অবস্থায়।
৯. সংসদীয় গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা শান্তির আলোকবর্তিকা। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার মধ্যে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, মৌলিক অধিকার গ্যারান্টিযুক্ত, ওইরূপ অমোঘ ব্যবস্থা রক্তপাতের বিপরীতে অবস্থান করে। ক্ষমতাসীন কোনো কোনো নেতা বিএনপি ক্ষমতায় এলে ১ লাখ, ১০ লাখ লোককে মেরে ফেলবে এইরূপ অবান্তর ভয়ভীতি প্রদর্শনের মাধ্যমে তাদের দলের গণতন্ত্রপন্থীদের তাদের স্বৈরশাসনের সমর্থনের মধ্যে রাখতে চান। প্রকৃত গণতন্ত্রে রক্তপাতের কোনো অবস্থান নেই, থাকতে পারে না।
১০. সংবিধানে নির্বাচন কমিশনকে যে ক্ষমতা দেয়া আছে, তারা শুধু সংবিধানে মাতোয়ারা হয়ে সংসদ নির্বাচনের দায়-দায়িত্ব ক্ষমতাসীনদের গণ্ডির মধ্যে ইচ্ছাকৃতভাবে ব্যবহার করে ক্ষমতাসীন স্বৈরাচার সরকারকে ক্ষমতায় রাখার নীলনকশা বাস্তবায়ন করা তাদের কর্মকাণ্ড নয়। নির্বাচন কমিশনের প্রধান কাজী হাবিবুল আউয়াল এবং অপর ৪ জন তাদের পদপদবির বিপরীতে তারা এ দেশেরই সন্তান। মহামান্য রাষ্ট্রপতি তদ্রুপ অবস্থানে রয়েছেন। দেশে হারানো গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনতে তাদেরও শক্তিশালী ভূমিকা থাকা সময়ের ঐতিহাসিক দাবি। তাদের স্ব স্ব অবস্থান থেকেই ওইরূপভাবে সরকারের ওপর তদ্রুপ অবস্থান নিতে পারেন। সরকার তাদের নিয়োগ দান করেছেন দেশের গণতন্ত্রবিহীন অবস্থায়; তা বেমালুম ভুলে গিয়ে গণপ্রজাতান্ত্রিক সংসদীয় গণতান্ত্রিক দেশে সব দলের অংশ গ্রহণে জনগণের ভোট প্রয়োগের ব্যবস্থাদির বাস্তবায়নস্বরূপ নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের আদলে আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত করার পদক্ষেপেই দেশ গণতন্ত্রে ফিরে যাবে। দেশের রাজনীতির সঙ্কটসঙ্কুল অবস্থায় তাদের এই ঐতিহাসিক দায়িত্ব পালনের ভূমিকা তাদের অনায়াসে ইতিহাসে স্থান করে দেবে।
লেখক : কলামিস্ট এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বারের সিনিয়র আইনজীবী