হাসিনা নির্ভর আওয়ামী লীগে সম্পাদক পদে কাদেরেই ভরসা

 

আওয়ামী লীগের ২২তম কাউন্সিল

 আমার দেশ

২৪ ডিসেম্বর ২০২২

আবারো হাসিনা সভাপতি, সম্পাদক কাদের

আবারো হাসিনা সভাপতি, সম্পাদক কাদের

নিজস্ব প্রতিবেদক

আওয়ামী লীগের সাজানো কাউন্সিলে শেখ হাসিনা ওবায়দুল কাদেরের উপরই ভরসা রেখেছেন। দেশে ফ্যাসিবাদ চালিয়ে নিতে শেখ হাসিনা রানিংমেট হিসাবে তৃতীয়বারের মত ওবায়দুল কাদেরকেই পছন্দ করেছেন।

শনিবার ছিল আওয়ামী লীগের ২২তম কাউন্সিল।

কাউন্সিল অধিবেশনে নিয়ম অনুযায়ী নতুন কমিটি গঠন করা হয়। ২২টি কাউন্সিলে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ১০টি কাউন্সিল ও নতুন কমিটি হয়েছে। তিনি নিজে দশমবার দলটির সভাপতির পদ ধরে রেখেছেন। এতেই প্রমান করে আওয়ামী লীগ দল হিসাবে টিকে আছে শেখ হাসিনাকে নির্ভর করে।

প্রতিবারই কাউন্সিলের আগে লোক দেখানো একটি নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়। এই কমিশন শেখ হাসিনাকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ঘোষণা করেন। শেখ হাসিনার পছন্দেই মনোনীত হয় দলের সাধারণ সম্পাদক কে হবেন। এতে দেখা যায় সাধারণ সম্পাদক পদেও অন্য কোন প্রার্থী থাকে না। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করা হয়। বাকী পদ গুলো শেখ হাসিনা নিজের পছন্দ অনুযায়ী পিক অ্যান্ড চুজ করেন। এটি হচ্ছে আওয়ামী লীগের কাউন্সিলের নির্বাচনী স্টাইল। শেখ হাসিনা আওয়ামী কাউন্সিলের নির্বাচনী স্টাইল দেশের উপরও চাপিয়ে দিয়েছেন।
২০০৮ সালের ডিসেম্বরে সাজানো নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসার পর শেখ হাসিনা সংবিধান থেকে নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধানকে বাতিল করে দিয়েছেন। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধান বাতিল করার ফলে আওয়ামী লীগের কাউন্সিলের মতই জাতীয় নির্বাচনে শেখ হাসিনার পছন্দের বাইরে কেউ নির্বাচিত হতে পারেন না। শেখ হাসিনা যাকে জাতীয় সংসদে যাকে বিরোধী দলের নেতা হিসাবে চান তাঁকে সেইভাবে মনোনয়নের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশনকে দিয়ে বিজয়ী করে আনেন।

২২তম জাতীয় সম্মেলনের নামে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য হিসাবে শেখ হাসিনা যাদের নাম ঘোষণা করেছেন-বেগম মতিয়া চৌধুরী, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, কাজী জাফর উল্লাহ, ইঞ্জিনিয়ার মোশারফ হোসেন, শ্রী পীযুষ কান্তি ভট্টাচার্য্য, ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক, লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) মুহাম্মদ ফারুক খান এমপি, মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, শাজাহান খান, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া (বীর বিক্রম), অ্যাড. কামরুল ইসলাম এমপি ও সিমিন হোসেন রিমি।

এছাড়া যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক পদে মাহবুব উল আলম হানিফ, ডা. দীপু মনি, ড. হাছান মাহমুদ ও আ. ফ. ম. বাহাউদ্দিন নাছিম রয়েছেন। পাশাপাশি কোষাধ্যক্ষ নির্বাচিত হয়েছেন এইচ এন আশিকুর রহমান এমপি।

এদিকে আওয়ামী লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর মধ্যে অর্থ ও পরিকল্পনা বিষয়ক সম্পাদক হয়েছেন ওয়াসিকা আয়শা খান এমপি। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক পদে ড. শাম্মী আহমেদ, আইন বিষয়ক সম্পাদক পদে অ্যাডভোকেট নজিবুল্লাহ হিরু, কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক পদে ফরিদুন্নাহার লাইলী, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক পদে ড. সেলিম মাহমুদ, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক পদে আমিনুল ইসলাম, ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক পদে অ্যাডভোকেট সিরাজুল মোস্তফা, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক পদে ড. আবদুস সোবহান গোলাপ এমপি মনোনীত হয়েছেন।

অন্যদিকে বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক পদে দেলোয়ার হোসেন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক পদে ইঞ্জিনিয়ার মো. আবদুস সবুর, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক জাহানারা বেগম, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক পদে অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস, শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক পদে শামসুন নাহার চাঁপা, শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক পদে মো. সিদ্দিকুর রহমান, সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক পদে শ্রী অসীম কুমার উকিল এমপি, স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক পদে ডা. রোকেয়া সুলতানা মনোনীত হয়েছেন।

এছাড়া সাংগঠনিক সম্পাদক হয়েছেন আহমদ হোসেন, বি. এম মোজাম্মেল হক, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন এমপি, এস. এম কামাল হোসেন, মির্জা আজম এমপি, অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন, শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল এবং সুজিত রায় নন্দী। এছাড়া উপ-দফতর সম্পাদক হয়েছেন সায়েম খান।

তবে শ্রম, যুব ও ক্রীড়া এবং উপ-প্রচার সম্পাদকের পদ ফাঁকা রাখা হয়েছে। এসব পদ পরে পূরণ করা হবে বলে জানিয়েছেন দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনা।