হারিছ চৌধুরীর মৃত্যু-দাফন নিয়ে জট খুললেন কন্যা সামিরা

বিএনপি নেতা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরীর মৃত্যু ও দাফন নিয়েও ধূম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে। ১/১১ এর পর থেকে টানা ১৪ বছর আত্মগোপনে থাকায় এই ব্যক্তি আদৌ মারা গেছেন কি-না, গেলেও কোথায়, কখন মারা গেছন, দাফন হয়েছে কোথায়- এমন নানা প্রশ্ন সামনে এসেছে।

harish chawdhury samiraহারিছ চৌধুরী ও মেয়ে সারিমা, ফাইল ছবি

গত বুধবার হারিছ চৌধুরীর চাচাতো ভাই সিলেট জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি আশিক চৌধুরী জানান, লন্ডনের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত বছরের সেপেম্বর মাসে মারা গেছেন হারিছ চৌধুরী। সে বছরের আগস্টে তার করোনা শনাক্ত হয়েছিল। তবে পরিবারের পক্ষ থেকে তার মৃত্যুর খবর গোপন রাখা হয়।

এই তথ্য নাকচ করে বিএনপির সিলেট জেলা কমিটির সদস্য আবদুল কাহের শামীম জানান, হারিছ চৌধুরী ঢাকায় মারা গেছেন, দাফনও হয়েছে ঢাকায়। একই তথ্য দিয়েছেন হারিছ চৌধুরীর জন্মস্থান সিলেটের কানাইঘাটের আওয়ামী লীগ নেতা আলী হোসেন কাজল।

harish chawdhury with tareq ziaতারেক রহমানের সঙ্গে হারিছ চৌধুরী, ফাইল ছবি

হঠাৎ উধাও হয়ে যাওয়া হারিছ চৌধুরীর আত্মগোপনে থাকা নিয়ে রহস্যের শেষ নেই। সে কারণে তার মৃত্যু নিয়েও এক ধরনের ধূম্রজাল তৈরি হয়েছে। এমতাবস্থায় সঠিক তথ্য জানাতে মুখ খুলেছেন তার লন্ডন প্রবাসী কন্যা ব্যারিস্টার সামিরা তানজিন চৌধুরী।

সরকারি চাকরি ছেড়ে ঢাকায় চলে আসা সামিরা এক সাক্ষাৎকারে নিশ্চিত করেছেন, হারিছ চৌধুরী লন্ডনে নয়, ঢাকায় মারা গেছেন। করোনাসহ নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে গেলো বছর ৩ সেপ্টেম্বর ঢাকার একটি হাসপাতালে মারা যান। ঢাকার বাইরে দাফনের কথা বললেও সেটা কোথায়- তা প্রকাশ করেননি তিনি।

গ্রামের বাড়িতে দাফন না করার বিষয়ে কান্নায় ভেঙে পড়া সামিরা বলেন, নিরাপত্তার কারণে মরদেহ গ্রামে না নিতে বলেছিলেন চাচা আশিক চৌধুরী। কাউকে না জানিয়ে বন্ধু-বান্ধবদের পরামর্শে একা গোসল করাতে নিয়েছি, অন্যত্র দাফনের ব্যবস্থা করেছি।

হারিছ চৌধুরী এতদিন আত্মগোপনে ছিলেন উল্লেখ করলেও কোথায় এবং কীভাবে ছিলেন, তা স্পষ্ট করেননি সামিরা তানজিন। যারা লন্ডন কিংবা আসামে তার লুকিয়ে থাকা বা মৃত্যুর কথা বলছেন, তাদের নিয়েও কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি তিনি।

প্রসঙ্গত, বহুল আলোচিত ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় ২০১৮ সালে হারিছ চৌধুরীর যাবজ্জীবন সাজা হয়। এ ছাড়া জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় একই বছরের ২৯ অক্টোবর তাকে ৭ বছরের জেল এবং ১০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছিল।