মুদ্রিত সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক
পুরান ঢাকার লালবাগের আজিমপুরে দায়রা শরিফ আবাসিক এলাকায় সাবেক সংসদ সদস্য হাজী সেলিমের মালিকানাধীন গুলশানারা মাসুদা টাওয়ারে অভিযান চালিয়ে কোটি টাকা মূল্যের ৬টি বিলাসবহুল গাড়ি জব্দ করেছে যৌথবাহিনী। গতকাল রোববার সকালে এ অভিযান পরিচালনা করে যৌথবাহিনীর আজিমপুর ক্যাম্প-৪৬ ব্রিগেড (অজেয় চার), নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও লালবাগ থানা পুলিশ। গুলশানারা মাসুদা টাওয়ারের আন্ডারগ্রাউন্ড পার্কিংয়ের একটি গোপন কক্ষ থেকে গাড়িগুলো উদ্ধার করা হয়।
এর আগে গত শনিবার দৈনিক নয়া দিগন্তে ‘ধানমন্ডিতে গোপন বৈঠকে রাষ্ট্রবিরোধী পরিকল্পনা’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। রাজধানীর ধানমন্ডি আবাসিক এলাকায় হাজী সেলিমের মদিনা টাওয়ার অবস্থিত। এই প্রতিবেদন প্রকাশের একদিন পর গতকাল সেনাবাহিনীসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বাড়িটিতে অভিযান চালিয়ে ৬টি বিলাসবহুল গাড়ি জব্দ করে। গাড়িগুলোর মূল্য প্রায় ৮০ কোটি টাকা।
জানা গেছে, ১২তলা বিশিষ্ট ভবনটির নিচতলায় বিশেষভাবে টিন দিয়ে ঘেরা একটি আলাদা রুম তৈরি করা হয়েছিল। সেখানে গাড়িগুলো লুকিয়ে রাখা হয়। উদ্ধার হওয়া গাড়িগুলোর তালিকা সূত্রে পাওয়া গেছে। এর মধ্যে রয়েছে- দুটি বিএমডব্লিউ, যার একটি সাদা ও অন্যটি লাল রঙের। এ ছাড়া একটি কালো রঙের নিশান পেট্রোল, একটি সাদা প্রোটন প্রাইভেটকার, একটি সাদা টয়োটা আইএসটি এবং একটি লাল রঙের টয়োটা রাস জিপ গাড়ি।
অভিযানের সময় গাড়িগুলোর কোনো বৈধ কাগজপত্র ভবনের দায়িত্বে থাকা ম্যানেজার দেখাতে পারেননি। এমনকি কেন আলাদা রুমে টিন দিয়ে গাড়িগুলো লুকিয়ে রাখা হয়েছিল, সে বিষয়েও তিনি কোনো সঠিক ব্যাখ্যা দিতে ব্যর্থ হন।
যৌথবাহিনীর এক কর্মকর্তা জানান, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে তারা এ অভিযান চালান। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, উদ্ধার হওয়া এসব বিলাসবহুল গাড়ি সাবেক সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের নেতা হাজী সেলিম ব্যবহার করতেন। তবে গাড়িগুলোর প্রকৃত মালিকানা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
অভিযান শেষে গাড়িগুলো জব্দ করা হয় এবং ভবনের ম্যানেজারকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আজিমপুর আর্মি ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হয়।
এ দিকে মদিনা গ্রুপে বসে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যারা নিয়মিত বৈঠক করছেন এবং রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ড চালানোর জন্য শত কোটি টাকা অর্থায়ন করছেন তাদের কাউকেই গ্রেফতার করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
মামলার আসামি মদিনা গ্রুপের নির্বাহী পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব:) এ কে এম ইকবাল ছাড়াও হাজী সেলিমের পিএস সোহেল হাওলাদার, মদিনা গ্রুপের ট্রেডিং ম্যানেজার সৈয়দ জসিম উদ্দিন, মদিনা গ্রুপের ম্যানেজার (অর্থ) কায়সার হোসেন, মদিনা গ্রুপের পাথর সেকশনের ম্যানেজার শহীদ হাসান খান, মদিনা গ্রুপের রড ম্যানেজার কামরুল হাসান, মদিনা গ্রুপের ম্যানেজমেন্ট ম্যানেজার হেলাল উদ্দিন ও অফিসের বিভিন্ন সেকশনের কর্মকর্তা বিল্লাল হোসেন এবং এম আবিদুর রহমানকে গ্রেফতার করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
Source: https://dailynayadiganta.com/printed-edition/JOxDjQXKMzPg