হরতালের ডাক : তফসিলের পরও সংঘাতমুখর রাজনীতি

তফসিল ঘোষণার পর অশান্ত হয়ে উঠেছে রাজনৈতিক পরিস্থিতি। এমনিতেই বিরোধী দলগুলোর ধারাবাহিক কর্মসূচি চলছিল। এরমধ্যে ঘোষণা করা হলো তফসিল। একতরফা এ তফসিলকে বিএনপিসহ সমমনা দলগুলো প্রত্যাখ্যান করেছে। প্রতিবাদে গতকাল অর্ধদিবস হরতাল পালিত হয়েছে। অবরোধ তো ছিলোই। এছাড়া আগামী রোববার ও সোমবার ৪৮ ঘণ্টার হরতালের ডাক দিয়েছে বিএনপিসহ সমমনা বিরোধী দলগুলো। তফসিল ঘোষণার পর বুধবার রাত থেকেই প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিভিন্ন দল। বেশ কয়েক জায়গায় বিএনপি-আওয়ামী লীগ সংঘর্ষ হয়েছে। ট্রেন ও বাসে আগুন দেয়া হয়েছে। তফসিল প্রত্যাখ্যান করে বিক্ষোভকালে সংঘর্ষ হয়েছে সিলেট, হবিগঞ্জ, চট্টগ্রাম ও নোয়াখালীতে।

বাম গণতান্ত্রিক জোটের ডাকা আধাবেলা হরতালের সমর্থনে বের করা মিছিলেও হামলা হয়েছে। এ ছাড়া টাঙ্গাইলে কমিউটার ট্রেনে ও গাজীপুরে রেললাইনে আগুন দেয়ার ঘটনা ঘটেছে। বিভিন্ন জেলায় যানবাহনে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। অবরোধের সমর্থনে গতকালও রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় সড়ক-মহাসড়কে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা। এ সময় তারা টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ করার চেষ্টা করেন। এ ছাড়া অবরোধের সমর্থনে মিছিল করেছে জামায়াত, এলডিপি, গণতন্ত্র মঞ্চ, ১২ দলীয় জোট, এবি পার্টি, গণঅধিকার পরিষদসহ সমমনা রাজনৈতিক দলগুলো। বিরোধী জোটের অবরোধের কারণে সারা দেশ থেকে কার্যত বিচ্ছিন্ন ছিল রাজধানী ঢাকা।

এদিকে আমাদের জেলা প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্যে জানা গেছে, টাঙ্গাইল রেলওয়ে স্টেশনে দাঁড়িয়ে থাকা কমিউটার ট্রেনে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। গতকাল ভোররাতে এ ঘটনা ঘটে। এতে ট্রেনের দু’টি বগি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। টাঙ্গাইল ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সিনিয়র স্টেশন অফিসার মোহাম্মদ ইদ্রিচ বলেন, রাত ৩টার দিকে খবর পেয়ে স্টেশনে গিয়ে ট্রেনের আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। ট্রেনের ইঞ্জিনের কাছাকাছি দু’টি বগি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কমিউটার ট্রেনটি টাঙ্গাইল টু ঢাকামুখী স্টেশনে দাঁড়িয়ে ছিল। পুলিশ জানিয়েছে, বুধবার রাত ৩টায় পঞ্চগড় থেকে ছেড়ে আসা একটি ট্রেন টাঙ্গাইল স্টেশন ত্যাগ করার পর আগুন লাগে। আগুনের সূত্রপাত তদন্ত শেষে জানা যাবে। এদিকে গাজীপুরে আলাদা স্থানে দু’টি গাড়িতে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এ ছাড়া ভুরুলিয়া এলাকায় রেললাইনেও আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়।

এদিকে নারায়ণগঞ্জে হরতালের সমর্থনে বের করা বাম গণতান্ত্রিক জোটের মিছিলে লাঠিপেটা করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় জোটের অন্তত ১৫ নেতাকর্মী আহত হন। সকাল পৌনে ৭টার দিকে নগরের ডিআইটি বাণিজ্যিক এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। বাম গণতান্ত্রিক জোটের ডাকা অর্ধবেলা হরতালের সমর্থনে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিলের চেষ্টা করলে পুলিশের বাধার মুখে পণ্ড হয়ে যায়। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে মানববন্ধন করেন শিক্ষার্থীরা।

চট্টগ্রামে নগরের বিভিন্ন স্থানে তফসিল প্রত্যাখ্যান করে তাৎক্ষণিক ঝটিকা মিছিল করেছে বিএনপি ও জামায়াত। অন্যদিকে তফসিলকে স্বাগত  জানিয়ে আনন্দ মিছিল বের করে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা। এরমধ্যে নগরীতে টিসিবি’র  ভ্যানসহ ৩টি গাড়িতে আগুন  দিয়েছে দুর্বৃত্তরা।  অপরদিকে বিএনপি’র লোকজনই এসব আগুন সন্ত্রাস করছে, এমন অভিযোগ তুলে দলটির নগর কার্যালয়ে হামলা করেছে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।

নগরের পাঁচলাইশ থানার বাদুরতলা এলাকায়  টিসিবি’র  ট্রাকে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। রাত সাড়ে ১০টার দিকে ওয়াসা মোড়ে পার্কিং করে রাখা দুইটি বাসে আগুন দেয়া হয়। আর  এই ঘটনার প্রতিবাদে স্থানীয় এমপি মহিউদ্দিন বাচ্চুর অনুসারী যুবলীগ-ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা রাত ১২টার দিকে  নগরের কাজীর দেউড়িতে অবস্থিত চট্টগ্রাম  মহানগর বিএনপি’র কার্যালয়ে হামলা করে। মূল ফটক ভেঙে প্রবেশ  করার চেষ্টা করে তারা।

ওদিকে নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ‘হেলমেট’ পরা ?যুবকেরা গণহারে হামলা-ভাঙচুর চালিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ সময় তারা উপজেলা বিএনপি’র সদস্য সচিব ও বসুরহাট পৌরসভা বিএনপি’র সভাপতির বাড়িসহ কমপক্ষে ১৫টি বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর চালান বলে দলটির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে।

এদিকে বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী জানিয়েছেন, গত ২৪ ঘণ্টায় ৪৯০ জন বিএনপি’র নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, মামলা দায়ের করা হয়েছে ১২টি। এসব মামলায় আসামি করা হয়েছে ১৩৭০ জনকে। সহিংসতা প্রতিরোধ এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় রাজধানী ঢাকাসহ সার দেশে ২২৯ প্লাটুন বিজিবি (বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ) মোতায়েন করা হয়েছে। ঢাকা ও আশপাশের জেলায় ৩২ প্লাটুন ও সারা দেশে ১৯৭ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন রয়েছে।

রোববার থেকে ৪৮ ঘণ্টা হরতালের ডাক বিএনপি’র
একতরফা নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার প্রতিবাদে ও সরকার পতনের একদফা দাবিতে আগামী  রোববার ও সোমবার সারা দেশে ৪৮ ঘণ্টার সর্বাত্মক হরতাল ডেকেছে বিএনপি। রোববার সকাল ৬টা থেকে মঙ্গলবার সকাল ৬টা পর্যন্ত সারা দেশে সর্বাত্মক এই হরতাল কর্মসূচি পালিত হবে। গতকাল বিকালে ভার্চ্যুয়াল সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন। তিনি বলেছেন, তপসিল প্রত্যাখ্যান করে অবাধ, গ্রহণযোগ্য ও সুষ্ঠু নির্বাচন, বেগম খালেদা জিয়াসহ গ্রেপ্তার নেতাদের মুক্তি ও নেতাকর্মীদের হয়রানির প্রতিবাদ এবং সরকারের পদত্যাগ, নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠার দাবিতে এ কর্মসূচি পালিত হবে। এদিকে পৃথক সংবাদ সম্মেলনে ও বিবৃতিতে একই কর্মসূচি ঘোষণা করেছে এলডিপি, গণতন্ত্র মঞ্চ, লেবার পার্টি, গণঅধিকার পরিষদ, ১২ দলীয় জোটসহ সমমনা জোট ও দল।

টাঙ্গাইলে কমিউটার ট্রেনে আগুন ৩ সদস্যের কমিটি গঠন
টাঙ্গাইল প্রতিনিধি: টাঙ্গাইলে ঘারিন্দা রেল স্টেশনে দাঁড়িয়ে থাকা টাঙ্গাইল কমিউটার ট্রেনে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এতে ট্রেনের দুটি বগি সম্পূর্ণ ও একটি বগি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বুধবার রাত ৩টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। আগুন লাগার সময় পাশেই ছিল পঞ্চগড় এক্সপ্রেস ট্রেন। এতে পঞ্চগড় এক্সপ্রেস ট্রেনে থাকা যাত্রীরা ভয়ে ট্রেন থেকে নেমে পড়েন। এদিকে খবর পেয়ে সকালে রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অন্যান্য সদস্যরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এ ঘটনায় ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে রেল কর্তৃপক্ষ।
স্টেশন সূত্রে জানা যায়, ঘারিন্দা রেলস্টেশনে সিসি ক্যামেরা থাকলেও ট্রেনটির যে বগিগুলোতে আগুন লেগেছে সেই অংশ সিসি ক্যামেরার আওতার বাইরে ছিল। টাঙ্গাইল স্টেশনে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রেনে রাত পৌনে ৩টায় আগুন দেখতে পেয়ে ফায়ার সার্ভিসে খবর দেয় স্টেশন কর্তৃপক্ষ। খবর পেয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা। এ সময় ট্রেনের ইঞ্জিনের কাছাকাছি দুটি বগি পুরোপুরি এবং একটি বগি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। টাঙ্গাইল ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের অফিসার ইনচার্জ ইদ্রিস আলী বলেন, ফায়ার সার্ভিসের ৩টি ইউনিট চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন।

এ প্রসঙ্গে রেলওয়ে পাকশি বিভাগের মহা ব্যবস্থাপক শাহ্‌ সুফি নুর মোহাম্মদ বলেন, প্রাথমিকভাবে এটি নাশকতা বলে মনে হচ্ছে। এ ঘটনায় ৩ সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত শেষে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানা যাবে। টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার বলেন, নাশকতার উদ্দেশ্যেই কমিউটার ট্রেনটিতে আগুন দেয়া হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। রাত ১২টা থেকে ট্রেনটি স্টেশনেই দাঁড়িয়ে ছিল। এ ঘটনায় রেলওয়ে পুলিশ মামলা দায়ের করবে। তারাও এ নিয়ে কাজ করছেন। কারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে তা তদন্ত করে বের করা হবে।

তফসিল ঘোষণাকে কেন্দ্র করে হবিগঞ্জে সংঘর্ষ জামায়াত নেতা আটক মামলা দায়েরের প্রস্তুতি
স্টাফ রিপোর্টার, হবিগঞ্জ থেকে জানান, তফসিল ঘোষণাকে কেন্দ্র করে হবিগঞ্জে বিএনপি, পুলিশ ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের মাঝে কয়েক দফা ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে রিয়াজুদ্দিন নামে এক জামায়াত নেতাকে আটক করেছে পুলিশ। বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে জেলা শহরের টাউন হল রোডে প্রথম সংঘষের্র ঘটনা ঘটে। পরে রাত পৌনে ৯টার দিকে শহরের শায়েস্তানগর এলাকায় আবারো পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ হয় বিএনপি নেতাকর্মীদের। এ সময় তারা পুলিশের ওপর ককটেল নিক্ষেপ করে পুলিশকে তাড়া করে। পরে পুলিশ রাবার বুলেট ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে। সংঘর্ষে দুই পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন বলে পুলিশের দাবি। এ ছাড়া জেলা নির্বাচন অফিসে অন্তত ৭টি ককটেল নিক্ষেপ করে আন্দোলকারীরা। শহরে অতিরিক্ত পুলিশ ও র‌্যাব  মোতায়েন করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হাসিবুল ইসলাম বলেন, বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীরা কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করে ও পুলিশের ওপর দু’বার হামলা চালায়। এতে দু’জন পুলিশ আহত হয়। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। তবে বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে। যারা এ ভাঙচুর ও বিস্ফোরণের সঙ্গে জড়িত তাদের আইনের আওতায় আনা হবে। এদিকে বিএনপি’র অভিযোগ তফসিল ঘোষণার প্রতিবাদে তারা বিক্ষোভ মিছিল করতে গেলে পুলিশ তাদের ওপর হামলা করে। এতে দু’পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।

নবীগঞ্জে আওয়ামী লীগের বিক্ষোভ-সংঘর্ষ, আহত ৫
ষ্টাফ রিপোর্টার, নবীগঞ্জ থেকে জানান, নবীগঞ্জে তফসিলকে স্বাগত জানিয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত বিক্ষোভ ও পথসভায় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। বুধবার রাতে এ ঘটনা ঘটে। এর জের ধরে গতকাল দুপুরে আবারো দু’পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। মুহূর্তেই শহর রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। সংঘর্ষে গুরুতর আহত সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ও ইউপি সদস্য বাবলু আহমদকে সিলেট ওসমানী মেডিকেলে পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া আহত হন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবু সিদ্দিকসহ ৪ নেতাকর্মী। তাদেরকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। আওয়ামী লীগ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানায়, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিলকে স্বাগত জানিয়ে বিক্ষোভ ও পথসভার আয়োজন করে উপজেলা আওয়ামী লীগ। গত বুধবার রাত সাড়ে ৮টায় শহরে মিছিল শেষে নতুন বাজার মোড়ে পথসভা অনুষ্ঠিত হয়। সভাপতিত্ব করেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. গিয়াস উদ্দিন। এ সময় উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবু সিদ্দিক ও যুবলীগ যুগ্ম আহ্বায়ক লোকমান আহমদ খান তাদের অনুসারীদের নিয়ে পথসভায় অংশ নেন। সমাবেশ শেষে তাদের নামাজে রেখে বিক্ষোভ মিছিল শুরু নিয়ে কৈফিয়ত তলব করেন। এ সময় ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাবেদুল আলম চৌধুরী সাজু ও পৌর ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও ইউপি সদস্য বাবলু আহমদের বাকবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে দু’পক্ষের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। মুহূর্তেই দুই গ্রুপ মুখোমুখি সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। এ সময় শহর রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। মিলু গ্রুপের ধাওয়ায় পিছু হটে সাইফুল গ্রুপ। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। এ সময় সাইফুল গ্রুপের হামলায় গুরুতর আহত হন সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ও ইউপি সদস্য বাবলু আহমদ। এ নিয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবু সিদ্দিক বলেন, বিএনপি জামায়াতের এজেন্টরা সবসময়ই দলের অভ্যন্তরে বিশৃঙ্খলায় সক্রিয়। পরপর দুটি ঘটনা তারই অংশ। বিগত সময় তাদের চুরি ও দলের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করার অভিযোগে বহিষ্কার করা হয়েছিল। সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাইফুল জাহান চৌধুরী বলেন, আওয়ামী লীগ সভাপতির নির্দেশক্রমে উপজেলা চেয়ারম্যান ও যুবলীগ আহ্বায়ক আলহাজ ফজলুল হক চৌধুরী সেলিম মীমাংসার একপর্যায়ে মোস্তাক আহমদ মিলু পিস্তল দিয়ে হত্যার হুমকি দিলে পরিস্থিতির অবনতি ঘটে। এ ঘটনা পূর্বপরিকল্পিত। অভিযুক্ত উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাক আহমদ মিলু বলেন, পুলিশ ও আওয়ামী লীগ নেতারা ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন। দলের অভ্যন্তরে বিদ্রোহ এবং ষড়যন্ত্রে লিপ্তদের মুখোশ নতুন করে উন্মোচনের কিছু নেই।

তফসিল ঘোষণার পর সুধারামে জামায়াত-শিবিরের ঝটিকা মিছিল, ভাঙচুর
স্টাফ রিপোর্টার নোয়াখালী থেকে জানান, তফসিল ঘোষণার পরপরই তফসিল ঘোষণার প্রতিবাদে ও বাতিলের দাবিতে নোয়াখালী জেলা শহরে ঝটিকা মিছিল করেছে জামায়াত-শিবির। গত বুধবার রাত ৮টার দিকে জেলা জামে মসজিদ এলাকা থেকে মিছিলটি শুরু হয়ে আদালত প্রাঙ্গণ এলাকায় গিয়ে শেষ হয়। মিছিলটি মাত্র ৫ মিনিট স্থায়ী ছিল। জেলা জামায়াতে ইসলামের আমীর মাওলানা ইসহাক খন্দকার মিছিলের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এ ছাড়া তফসিল ঘোষণার পর জেলা শহরের মাইজদী শহীদ ভুলু স্টেডিয়াম, নতুন বাসস্ট্যান্ড, শহরের বিশ্বনাথ এলাকা,  বাংলাবাজার এলাকার পলোয়নপুল এলাকা, আমিন বাজার ও রমজানবিবি এলাকায় রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে এবং বেশ কয়েকটি পিকআপ ভ্যান ও সিএনজিচালিত অটোরিকশায় হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করা হয়। জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বেগমগঞ্জ সার্কেল) নাজমুল হাসান রাজীব জানান, রাত ৮টার দিকে সেনবাগ উপজেলার সমির মুন্সীরহাট এলাকায় চৌমুহনী-ফেনী আঞ্চলিক মহাসড়কের উপর বিএনপি জামায়াত কর্মীরা টায়ারে অগ্নিসংযোগ করে।

নোয়াখালীতে বিএনপি’র ৪৩ নেতাকর্মীর বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর, ২৫৭ গ্রেপ্তার
নির্বাচনী সিডিউল ঘোষণার পর থেকে নোয়াখালীতে বিএনপি’র ৪৩ নেতাকর্মীর বাড়িঘরে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট চালিয়েছে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা। এ পর্যন্ত জেলায় গ্রেপ্তার হয়েছে ২৫৭ জন। ১০ থেকে ১২ হাজার নেতাকর্মী এলাকা ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। গতকাল বিকাল ৪টায় নোয়াখালী জেলা আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে বিএনপি আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য দেন জেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট আবদুর রহমান। তিনি বলেন, ৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে হানাদার বাহিনীর অত্যাচারকেও হার মানিয়েছে বর্তমান পুলিশ ও আওয়ামী পেটোয়া বাহিনী। তিনি লিখিত বক্তব্যে বলেন, গত বুধবার নির্বাচন সিডিউল ঘোষণার পর আওয়ামী লীগের আনন্দ মিছিল শেষে জেলা শহরের দত্তেরহাট এলাকায় বিএনপি নেতাদের ৬টি বাড়ি ও ব্যাবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলা ভাঙচুর করে, মাইজদী বাজার এলাকায় কারা অন্তরীণ জেলা কৃষক দলের আহ্বায়ক ভিপি পলাসের বাড়িঘরসহ ২২ জন নেতাকর্মীর বাড়িতে হামলা করে, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপি’র সদস্য সচিবের বাড়িসহ ১৫ নেতাকর্মীর বাড়িতে হামলা ভাঙচুর করে আওয়ামী লীগের কর্মীরা। এসব হামলার সময় হামলাকারীরা নারী, বৃদ্ধ ও শিশুকেও মারধর করে আহত করে।

সংবাদ সন্মেলনে জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এডভোকেট রবিউল হাসান পলাশ জানান, সরকার একতরফা নির্বাচন সংঘটিত করার জন্য নোয়াখালীতে গত কয়েক দিনে ২৫৭ জন নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করে অকথ্য নির্যাতন করেছেন। দত্তেরহাট এলাকায় জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক সাবের আহমেদকে না পেয়ে তার ছোট দুই ভাইকে গ্রেপ্তার করেছে। পুলিশের পাশাপাশি আওয়ামী পেটোয়া বাহিনীর অভিযানের মুখে নোয়াখালীর ১০/১২ হাজার নেতাকর্মী এলাকা ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। এ সময় এডভোকেট কাজী কবির আহমেদ, এডভোকেট খোকন ও এডভোকেট মো. আবদুল কাইয়ুম দিদার উপস্থিত ছিলেন। বাড়িঘরে হামলা ও ভাঙচুরের ব্যাপারে জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক শহিদুল্লা খান সোহেল বিএনপি’র এ অভিযোগ প্রত্যাখান করে বলেন, আওয়ামী লীগ জ্বালাও পোড়াও ও ভাঙচুরের রাজনীতি পছন্দ করে না। বিএনপি যদি আমাদের নেতাকর্মীদের ব্যাপারে প্রমাণ দিতে পারে আমরা কঠিন ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। এ ব্যাপারে কোনো থানায় কোনো অভিযোগ নেই বলে জেলা পুলিশ সূত্র জানিয়েছে।

ঝালকাঠিতে যুবলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষ, আহত ৪
ঝালকাঠি প্রতিনিধি: ঝালকাঠি শহরে হরতালবিরোধী শান্তি মিছিলের মহড়া চলাকালে যুবলীগের দুই গ্রুপ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। সকাল ৯টায় শহরের পোস্ট অফিস সড়কে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সৈয়দ মিলনসহ উভয় গ্রুপের চারজন গুরুতর আহত হয়। এ সময় ৮/১০টি মোটরসাইকেল ভাঙচুরসহ ব্যাপক ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় শহরজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

আহতদের মধ্যে মিলনসহ তিনজনকে বরিশাল শেবাচিমে এবং অপর এক যুবলীগ কর্মীকে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। আহতরা হলেন- জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সৈয়দ মিলন, ঝালকাঠি সরকারি কলেজ লীগের সাবেক সভাপতি তরিকুল ইসলাম অপু, যুবলীগ কর্মী মো. সাগর ও অপর গ্রুপের যুবলীগ কর্মী মামুন হোসেন ওরফে কঠিন মামুন। ঘটনার পর থেকে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে শহরে পুলিশ টহল দিচ্ছে। জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক রেজাউল করিম জাকির বলেন, দলীয় নির্দেশনা অনুযায়ী জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে হরতালবিরোধী শান্তি সমাবেশ হওয়ার কথা ছিল। তবে সৈয়দ মিলনের সমর্থকরা তাদের পৃথকভাবে মহড়া দিয়ে পেছন দিক থেকে দুইজন স্বেচ্ছাসেবক লীগ কর্মীর ওপর মোটরসাইকেল উঠিয়ে দেয়। এতে তারা আহত হলে নেতাকর্মীরা তাদের প্রতিরোধ করেন।

অন্যদিকে সৈয়দ মিলনের সমর্থক আহত সরকারি কলেজ লীগের সাবেক সভাপতি তরিকুল ইসলাম অপু ও মো. সাগর জানান, তারা অবরোধবিরোধী মোটরসাইকেল মহড়া দেয়ার সময় পোস্ট অফিস সড়কে পৌঁছলে সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হাফিজ আল মাহমুদ, যুবলীগ আহ্বায়ক রেজাউল করিম জাকির ও কাউন্সিলর কামাল শরীফের নেতৃত্বে তাদের অনুসারীরা হামলা চালিয়ে তাদের কুপিয়ে জখম করে। পরে তাদের সঙ্গে থাকা ৮/১০টি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে। এ ব্যাপারে ঝালকাঠি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নাসির উদ্দিন জানান, ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সৈয়দ মিলনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শেবাচিমে প্রেরণ করা হয়েছে। কারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে তা তদন্ত করা হচ্ছে। তবে এটা দলীয় অভ্যন্তরীণ কোন্দল হতে পারে। এ ব্যাপারে কোনো লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি।

শ্রীপুরে মধ্যরাতে দাঁড়িয়ে থাকা মিনিবাসে আগুন
শ্রীপুর  (গাজীপুর) প্রতিনিধি জানান, গাজীপুরের শ্রীপুরে জৈনা বাজার ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা তাকওয়া পরিবহনের একটি মিনিবাসে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। বুধবার রাত পৌনে ১২টার দিকে উপজেলার জৈনাবাজার এলাকার ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের নয়েছ টাওয়ারের পাশে এ ঘটনা ঘটে।
মিনিবাসটির চালক মো. মাসুম জানান, সারাদিন যাত্রী পরিবহন করে রাতে ময়মনসিংহের ভালুকা থেকে জৈনাবাজার আসেন। এ সময় গাড়িতে কোনো যাত্রী না থাকায় তিনি বাসটিকে জৈনাবাজারে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের উপর দাঁড় করিয়ে নিজের সহকারীকে নিয়ে পাশের হোটেলে ভাত খেতে যান।

জয়পুরহাটে ট্রাকে আগুন দিয়েছে দুর্বত্তরা
জয়পুরহাট প্রতিনিধি জানান, জয়পুরহাট-হিলি সড়কের পুরানাপৈল নামক স্থানে পাথরবোঝাই একটি ট্রাকে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। চালক-হেলপার ও অন্য চালকরা এসে আগুন নিভিয়ে ফেলে। এ ঘটনায় তেমন কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। গতকাল ভোরে পুরানাপৈল রেল ক্রসিং এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
ট্রাকচালক হোসেন আলী জানান, পঞ্চগড় থেকে ট্রাকে পাথর নিয়ে নওগাঁ যাচ্ছিলেন তিনি। ভোর ৫টার দিকে পুরানাপৈল রেল ক্রসিংয়ের অদূরে গতনশহর এলাকায় এসে গতি কমায়। ঠিক তখনই ১০-১২ জন যুবক এসে ট্রাকে এলোপাতাড়ি ইট-পাটকেল ছুড়তে ছুড়তে ট্রাকের কাছে এসে আগুন ধরিয়ে দিয়ে দ্রুত পালিয়ে যায়। এ সময় চালক ও হেলপারসহ অন্য গাড়ির লোকজন এসে পাশের খাল থেকে পানি ও রাস্তার বালু দিয়ে আগুন নিভিয়ে ফেলেন।

জয়পুরহাট সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হুমায়ুন কবির জানান, ট্রাকে আগুন লাগার খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে আসলে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ একটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করেছে সেটার সূত্র ধরেই ঘটনার সঙ্গে জড়িত দুষ্কৃতকারীদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হবে বলে তিনি জানান।

গাজীপুরে বাস, পিকআপ ও রেললাইনে আগুন
স্টাফ রিপোর্টার, গাজীপুর থেকে জানান, গাজীপুরের ঢাকা-ময়মনসিংহ ও ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে দূরপাল্লার যানবাহন কম চলাচল করলেও অভ্যন্তরীণ রোডের বাস ও হালকা যানবাহন চলাচল করছে। ভোরে জেলার কালিয়াকৈর উপজেলার সফিপুর এলাকায় ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা তাকওয়া পরিবহনের একটি বাসে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরে রাত পৌনে ১২টার দিকে শ্রীপুর উপজেলার জৈনা বাজার এলাকার ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে দাঁড়িয়ে থাকা একটি মিনি বাসে আগুন লাগিয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা। এতে পুড়ে যায় বাসটি।
এর আগে টঙ্গীতে আগুন দেয়া হয় একটি চলন্ত পিকআপ ভ্যানে। জেলা সদরের ভুরুলিয়া এলাকায় রেল লাইনের উপরে কাঠ ফেলে তাতে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। স্থানীয় লোকজন দ্রুত সময়ের মধ্যে এসব আগুন নিভিয়ে ফেলে।

নারায়ণগঞ্জে বাম জোটের মিছিলে পুলিশের লাঠিচার্জ, আহত ২০
স্টাফ রিপোর্টার, নারায়ণগঞ্জ থেকে জানান, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল প্রত্যাখ্যান করে বাম গণতান্ত্রিক জোটের ডাকা অর্ধবেলা হরতালের সমর্থনে নারায়ণগঞ্জে মিছিল বের করলে বাধা দিয়ে নেতাকর্মীদের লাঠিপেটা করেছে পুলিশ। এতে ২০ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন জোটের নেতারা। বৃহস্পতিবার সকাল পৌনে ৭টার দিকে শহরের দুই নম্বর রেলগেইট এলাকায় বঙ্গবন্ধু সড়কে এ ঘটনা ঘটে।

তফসিল প্রত্যাখ্যান করে সকাল ৬টা থেকে দুপুর দুইটা পর্যন্ত সারা দেশে অর্ধবেলা হরতালের ডাক দেয় বাম জোট। হরতাল সমর্থনে সকালে শহরে মিছিল বের করে জোটের নেতারা। মিছিলটি দুই নম্বর গেট এলাকায় আসলে পুলিশ তাদের বাধা দেয়। বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক শিবনাথ চক্রবর্তী বলেন, ‘আমাদের শান্তিপূর্ণ মিছিলে বাধা দিয়ে ব্যানার কেড়ে নিয়ে লাঠিচার্জ করে পুলিশ। এতে আমাদের কমপক্ষে ২০ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। সবাই আমরা হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছি।’

আহতদের মধ্যে সিপিবি’র জেলা সভাপতি হাফিজুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক শিবনাথ চক্রবর্তী, বাসদের জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম খান বিপ্লব, গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্টের জেলা কমিটির সহ-সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন সোহাগ, বাসদের সাংস্কৃতিক সংগঠন চারণের জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক জামাল হোসেন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম, সাবেক সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রাতুল, রি- রোলিং স্টিল মিলের সংগঠক রেজাউল করিম, ছাত্রফ্রন্টের নেতা জিহাদ হোসেন, গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্টের গাবতলী শাখার মো. আলম, সিপিবি’র নুরুল ইসলাম, শরৎ মণ্ডল, শ্রমিক ফ্রন্টের রোকন মিয়ার নাম পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহাদাত হোসেন দাবি করেন, রাস্তা অবরোধ করলে হরতাল সমর্থকদের সরিয়ে দেয়া হয়। কোনো লাঠিচার্জ করা হয়নি।

মাানব জমিন