হতাশা নিয়ে ঈদের ছুটিতে বিনিয়োগকারীরা

হতাশা নিয়ে ঈদের ছুটিতে বিনিয়োগকারীরা

হতাশা নিয়ে শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকারীরা ঈদের ছুটি কাটাচ্ছেন। শুধু চলতি জুনের প্রথম দশ কার্যদিবসে তালিকাভুক্ত ৭৫ শতাংশ শেয়ারের দর পতন হয়েছে। এই কয়েক দিনে তালিকাভুক্ত ৫৫ কোম্পানির শেয়ারে কমপক্ষে ১০ শতাংশ পুঁজি হারিয়েছেন তারা। দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) চলতি জুনের লেনদেন পর্যালোচনায় এমন চিত্র মিলেছে।

পর্যালোচনায় দেখা গেছে, গত ২ জুন থেকে ১৩ জুন পর্যন্ত মোট ১০ কার্যদিবসের মধ্যে সূচক বেড়েছে পাঁচ দিন, কমেছেও পাঁচ দিন। তবে ঊর্ধ্বমুখী থাকা পাঁচ দিনে ডিএসইএক্স সূচকে যেখানে ৭৪ পয়েন্ট যোগ হয়, সেখানে বাকি পাঁচ দিনে ২০৮ পয়েন্ট হারায়। এ সময়ে প্রায় ১৭ হাজার বিনিয়োগকারী পুরো শেয়ার বিক্রি করে দিয়েছেন। দুই হাজারের বেশি বিনিয়োগকারী বিও হিসাব বন্ধ করেছেন।

গত ১২ ফেব্রুয়ারি থেকে যে লাগাতার দর পতন চলছে, এর আগে ২০২১ সালের অক্টোবরের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে যে দর পতন শুরু হয়, তা ঠেকাতে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি দফায় দফায় ফ্লোর প্রাইস বা স্বাভাবিক সার্কিট ব্রেকারের নিয়ম পরিবর্তন করে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. আল-আমীন মন্তব্য করেন, এ বাজারের বিনিয়োগকারীদের দুর্দশার শেষ নেই। কোরবানি ঈদের আগে নিজেরাই ‘কোরবানি’ হয়ে আছেন। ভালো করতে নিয়ে উল্টো নিয়ন্ত্রক সংস্থার হস্তক্ষেপ বাজারে খারাপ অবস্থা তৈরি করছে।
তিনি বলেন, জাতীয় বাজেট নতুন করে হতাশা নিয়ে এসেছে। বিভিন্ন কারণে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা শেয়ার বিক্রি করছেন, যার চাপ বাজার নিতে পারছে না। একের পর এক মন্দ আইপিও দিয়ে বাজার থেকে অন্যদিকে কারসাজি করেও বহু শতকোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে মুষ্টিমেয় মানুষ। মুনাফার আশায় বিনিয়োগ করে মানুষ ক্রমাগত টাকা হারাচ্ছে।

পর্যালোচনায় দেখা গেছে, ঈদের আগের দুই সপ্তাহে সর্বাধিক প্রায় ২৬ শতাংশ দর পতন হয়েছে খান ব্রাদার্স পিপি ওভেন ব্যাগ ইন্ডাস্ট্রিজের। গত ৩০ মে এর দর ছিল ১৬৩ টাকা। বৃহস্পতিবার সর্বশেষ ১২১ টাকা দরে কেনাবেচা হয়। এ শেয়ারের চলতি দফার দর পতন শুরু হয় গত ১৬ মে সর্বোচ্চ ২০৬ টাকায় কেনাবেচার পর থেকে। এ হিসাবে ৪১ শতাংশ দর পতন হয়েছে। গত ২৭ মে থেকে সর্বশেষ ১৪ কার্যদিবস প্রতিদিনই সর্বোচ্চ দর হারাচ্ছে। থাকছে ক্রেতাশূন্য অবস্থায়। শুধু চলতি জুনে দর পতনে এর পরের অবস্থানে থাকা বিআইএফসির সাড়ে ২২ শতাংশ, এনসিসি ব্যাংকের ২১ শতাংশ এবং ওরিয়ন ইনফিউশনের প্রায় ২১ শতাংশ দর পতন হয়েছে। এ ছাড়া ১৫ থেকে প্রায় ১৮ শতাংশ পর্যন্ত দর পতন হয়েছে সোনালী আঁশ, সোনালী পেপার, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক এবং ফিনিক্স ইন্স্যুরেন্সের। বড় শেয়ারগুলোর মধ্যে ওয়ালটনের শেয়ারদর কমেছে ১৩ শতাংশ, কোহিনূর কেমিক্যাল প্রায় ১৩ শতাংশ, এসিআই লিমিটেড সাড়ে ১২ শতাংশ এবং বেস্ট হোল্ডিংস পৌনে ১২ শতাংশ দর হারিয়েছে।

samakal