হতাশায় নিমজ্জিত শান্তরা

হতাশায় নিমজ্জিত শান্তরা

বাংলাদেশ দলে প্রতিভার ছড়াছড়ি। এই ক্রিকেটাররা প্রশংসাও পাচ্ছেন। বিদেশি কোচিং স্টাফ, ভারতের সাবেক ও বর্তমান ক্রিকেটারও সম্মান দেখান মেহেদী হাসান মিরাজদের। কিন্তু সমস্যা হয়েছে– প্রতিভাবান খেলোয়াড়রা মাঠে প্রতিভা দেখাতে পারছেন না। ভারতে খুবই হতাশ করা সময় পার করছেন তারা। স্বাগতিকদের কাছে যেভাবে টানা দুই ম্যাচে হেরেছেন নাজমুল হোসেন শান্তরা, তা চোখে লাগার মতোই। ব্যাটাররা যেন রান করা ভুলে গেছেন। গোয়ালিয়রে প্রথম ম্যাচে অলআউট ১২৭ রানে। দিল্লির সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে করেছে ৯ উইকেটে ১৩৫ রান। সিরিজ হারের পর হোয়াইটওয়াশের শঙ্কা নিয়ে কাল হায়দরাবাদে শেষ ম্যাচ খেলবেন নাজমুল হোসেন শান্তরা।

বিশ্বকাপে পাঁচ দলের গ্রুপে তিন ম্যাচ জিতে গর্বের শেষ ছিল না। ক্রিকেটার থেকে শুরু করে কোচিং স্টাফ সবাইকে গোঁফে তা দিতে দেখা গেছে। এগুলো ছিল দুর্বলতা লুকানোর কৌশল। ২০ ওভারের ক্রিকেটে বাংলাদেশ যে ভালো দল নয়, সেটা পরিষ্কার হয়ে গেছে ভারতে। অভিজ্ঞ ক্রিকেটার নিয়েও প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তোলা সম্ভব হয়নি। লিটন কুমার দাস ৯১টি, শান্ত ৪৮, তাওহিদ হৃদয় ৩১, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ১৪০ টি২০ খেলা ব্যাটার। ৮ টি২০ বিশ্বকাপ খেলা ব্যাটার মাহমুদউল্লাহ। বাকিরাও কম খেলেননি। তারাই কিনা ভারতের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারছেন না।

ভারতের নিতিশ কুমার রেড্ডির অভিষেক বাংলাদেশের বিপক্ষে গোয়ালিয়রে। অভিষেকে নার্ভ কিছুটা দুর্বল থাকলেও পরের ম্যাচেই বাজিমাত করেন তিনি। পাঁচ রানে জীবন পেয়ে খেলেন ৭৪ রানের ঝোড়ো ইনিংস। বোলারদের তুলাধুনা করেছেন মিডল অর্ডার এ ব্যাটার। ওই যে রিংকু সিং; তিনিও হৃদয়ের চেয়ে কম ম্যাচ খেলেছেন। অথচ তারাই কিনা সুযোগ কাজে লাগান দারুণভাবে। জাতীয় দলের এক অফিসিয়াল নাম প্রকাশ না করার শর্তে হতাশা ব্যক্ত করেন, ‘টি২০ দেখা বন্ধ করে দেন। এই দলের কাছ থেকে কিছু আশা করা ঠিক হবে না। ওরা কিছুই পারে না। একজনও আন্তর্জাতিক মানের ক্রিকেটার নেই। নিতিশ দ্বিতীয় ম্যাচ খেলতে নেমে যেভাবে ব্যাটিং করলেন, তা অবিশ্বাস্য। ওরা সুযোগ পেলে সেটা কাজে লাগাতে মরিয়া থাকেন। আর আমাদের খেলোয়াড়দের বড় কোনো লক্ষ্য নেই।’

বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা নিজেদের আন্তর্জাতিক মানে চিন্তা করতে পারেন না। দেশের ক্রিকেট বিশেষজ্ঞদের সবারই মতামত তাই। বিসিবি পরিচালক নাজমুল আবেদীন ফাহিম বলেছিলেন, ‘লোকাল স্ট্যান্ডার্ড’কে নিজেদের মানদণ্ড হিসেবে দেখেন শান্তরা। দেশে-বিদেশে খেলেনও নিচু মানের ক্রিকেট। স্লো ও লো উইকেট পেলে ১২০ রানের ইনিংসে লড়াই করতে পারেন লিটনরা।

ভারতের সাবেক পেসার ও ধারাভাষ্যকার ওয়াতুল ওয়াসান মনে করেন বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা মানসিকভাবে পিছিয়ে। বোর্ডে বড় স্কোর দেখলে ঘাবড়ে যায় তারা। তিনি বলেন, ‘আমার মনে হয়, ওরা ভেবেই নেয় এত বড় রান তাড়া করা যাবে না। হয়তো মানসিকভাবে আগেই হেরে যায়। বোলিংয়ের ক্ষেত্রেও একই সমস্যা। মার খেলে ফিরে আসতে পারে না। প্ল্যান বি বা সি তে যেতে শেখেনি। বিষয়গুলো ভেতর থেকে আসতে হয়। নিজেকে সফল হতে হয়। এই ট্রমা থেকে ক্রিকেটারদের বের করে আনতে পারে ভালো মেন্টর।’

samakal