‘তাঁর বিদায়ে কতটা মর্মাহত হয়েছি, তা বলে শেষ হবে না। একটা বিরাট শূন্যতা।’—ব্র্যাকের প্রতিষ্ঠাতা স্যার ফজলে হাসান আবেদকে অন্তিম শ্রদ্ধা জানিয়ে কথাগুলো বলতে গিয়ে অশ্রুসিক্ত হয়ে পড়েন গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা ও নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তাঁর কণ্ঠ রুদ্ধ হয়ে পড়ে।
রাজধানীর আর্মি স্টেডিয়ামে ফজলে হাসান আবেদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন শুরু হয় আজ রোববার সকাল সাড়ে ১০টায়। বেলা ১১টার দিকে আর্মি স্টেডিয়ামে আসেন ড. ইউনূস। তিনি স্যার আবেদের কর্মময় জীবনের স্মৃতিচারণা করে বলেন, ‘তিনি প্রতিটি বিষয়ের গভীরে গেছেন এবং ব্যাপ্তি সৃষ্টি করেছেন। এটা করতে গিয়ে তাঁকে বহু প্রতিষ্ঠান সৃষ্টি করতে হয়েছে। তাঁর অবদান হলো—তিনি এসব প্রতিষ্ঠান সৃষ্টি করেছেন, এর সঙ্গে সঙ্গে এসব প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনার সিস্টেমটাও সৃষ্টি করেছেন।’
অধ্যাপক ইউনূস বললেন, ‘তিনি (স্যার আবেদ) হঠাৎ হঠাৎ করে প্রতিষ্ঠান করে গেছেন, একটা আরেকটার সঙ্গে জড়িত না—এমন না। এটাও তাঁর একটা বড় অবদান। হেন বিষয় নেই, তিনি সেটাতে মনোযোগ দেননি। মনোযোগ দিয়েছেন এবং সেটাকে নমুনা হিসেবে ছেড়ে দিয়ে আসেননি। সেটাকে সর্বব্যাপী করেছেন।’
স্যার আবেদকে নিয়ে ড. ইউনূস আরও বলেন, ‘মানুষের ঘরে ঘরে গিয়ে যে একটা বার্তা দেওয়া যায় এবং পরিবর্তন আনা যায় সেটাও তিনি প্রমাণ করেছেন। ওরাল স্যালাইন এর বড় প্রমাণ। বাংলাদেশে এখন আমরা এর উপকার দেখছি।’
প্রয়াত ফজলে হাসান আবেদের ব্যক্তি প্রচেষ্টার দিকেও দৃষ্টিপাত করেন অধ্যাপক ইউনূস। বলেন, ‘তিনি একক ব্যক্তি হিসেবে সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টায় সবকিছু করেছেন। এটা একটা বড় দৃষ্টান্ত হবে আমাদের জন্য।’ স্যার আবেদের মৃত্যুতে যে একটি গভীর শূন্যতার সৃষ্টি হয়েছে, তাকে সামাল দেওয়ার জন্য একযোগে কাজ করার এবং আবেদ প্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠানগুলোকে সচল রাখার আহ্বান জানান তিনি। তিনি বলেন, ‘যে মূল্যবোধ থেকে, উপলব্ধি থেকে তিনি এসব করেছেন, তা জানা নতুন প্রজন্মের জন্য অত্যন্ত জরুরি। আমি তরুণ প্রজন্মকে আহ্বান জানাচ্ছি, তাঁর জীবন থেকে শিক্ষা নিয়ে তাঁর মতো হওয়ার চেষ্টা করতে হবে।’