ডলার সংকটের এ সময়ে দ্রুত কমছে বেসরকারি খাতে স্বল্পমেয়াদি বিদেশি ঋণ। প্রতি মাসে কমে গত ফেব্রুয়ারি শেষে ঋণ স্থিতি নেমেছে ১ হাজার ১০৭ কোটি ডলার। আগের মাস শেষে যা ছিল ১ হাজার ১২৫ কোটি ডলার। এর আগে ২০২২ সাল শেষে স্বল্পমেয়াদি বিদেশি ঋণ ওঠে ১ হাজার ৬৪২ কোটি ডলার।
সংশ্লিষ্টরা জানান, বৈশ্বিক মূল্যস্ফীতির কারণে এখন যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশের ট্রেজারি বিল ও বন্ডের সুদহার অনেক বেড়েছে। এখানকার ব্যবসায়ীরা আগামীতে যথাসময়ে ঋণ পরিশোধ করতে পারবে কিনা, তা নিয়ে অনেকের মধ্যে সংশয় তৈরি হয়েছে। যে কারণে বিদেশি ঋণ সরবরাহকারীদের অনেকে এখন ঋণ দিতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। অন্যদিকে, সুদহার ও বিনিময় হারের কারণে ব্যবসায়ীদের অনেকে ঋণ নিতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। এসব কারণে এখন বিদেশি ঋণ আসছে কম। বরং বিভিন্ন উপায়ে ডলার কিনে আগের ঋণ সমন্বয় করা হচ্ছে।
প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, আগে সব সময় যে পরিমাণ নতুন ঋণ আসত, পরিশোধ হতো তার বেশি। তবে গত বছর থেকে নতুন ঋণের চেয়ে পরিশোধ বেড়েছে। চলতি বছরের জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে স্বল্পমেয়াদি বিদেশি ঋণ পরিশোধ হয়েছে ৪১২ কোটি ৫১ লাখ ডলার। একই সময়ে নতুন ঋণ এসেছে মাত্র ৩৪৭ কোটি ৪৫ লাখ ডলার। এর মানে, নতুন ঋণের চেয়ে পরিশোধ বেশি হয়েছে ৬৫ কোটি ডলার বা ১৮ দশমিক ৭২ শতাংশ। গত বছর ২ হাজার ৫৮০ কোটি ডলার নতুন ঋণের বিপরীতে পরিশোধ হয় ৩ হাজার ১১৪ কোটি ডলার। ২০২২ সালে ৩ হাজার ৭২৬ কোটি ডলার নতুন ঋণের বিপরীতে যেখানে পরিশোধ ছিল ৩ হাজার ৬৭৩ কোটি ডলার।
স্বল্পমেয়াদি ছাড়াও বেসরকারি খাতে আরও অনেক ধরনের বিদেশি ঋণ রয়েছে। সব মিলিয়ে গত ডিসেম্বর পর্যন্ত বেসরকারি খাতে বিদেশি ঋণ স্থিতি দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৯৫ কোটি ডলার। আবার সরকার প্রকল্প বাস্তবায়নসহ বিভিন্ন কাজে বিদেশি ঋণ নেয়। সরকারি খাতের ঋণ স্থিতি দাঁড়িয়েছে ৭ হাজার ৯৬৯ কোটি ডলার। সব মিলিয়ে প্রথমবারের মতো বিদেশি ঋণ ১০০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে। গত ডিসেম্বর পর্যন্ত বিদেশি ঋণের স্থিতি দাঁড়িয়েছে ১০ হাজার ৬৪ কোটি ডলার। আগের প্রান্তিক শেষে যা ছিল ৯ হাজার ৬৫৫ কোটি ডলার। বিপুল অঙ্কের এ বিদেশি ঋণের বিপরীতে এখন দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ যেখানে ১৯ দশমিক ৯৭ বিলিয়ন ডলার, ২০২১ সালের আগস্টে রিজার্ভ সর্বোচ্চ ৪৮ বিলিয়ন ডলারের ঘর ছাড়িয়েছিল।
সমকাল