নিজস্ব প্রতিবেদক
কুমিল্লায় স্কুলশিক্ষিকা স্ত্রীর সামনেই জিল্লুর রহমান (৪৫) নামে এক যুবলীগ নেতাকে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা।
বুধবার সকালে কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের ২৫নং ওয়ার্ডের পুরাতন বাজার এলাকায় এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
নিহত জিল্লুর রহমান ওই এলাকার মৃত মোখলেছুর রহমানের ছেলে। তিনি ২০১৬ সালে ২৫নং ওয়ার্ড থেকে কাউন্সিলর পদে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছিলেন। এছাড়াও আসন্ন ওয়ার্ড যুবলীগের কাউন্সিলে তিনি সভাপতি প্রার্থী ছিলেন বলেও জানা গেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, তিন ছেলে ও এক মেয়ের জনক জিল্লুর রহমানের স্ত্রী জাহানারা বেগম পাশের তারাপাইয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা। প্রতিদিনের মতো বুধবার সকাল ৮টার দিকে জিল্লুর রহমান তার স্ত্রীকে স্কুলে পৌঁছে দেয়ার জন্য মোটরবাইক নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে রাস্তায় অপেক্ষা করছিলেন। তার স্ত্রী এসে বাইকে ওঠার আগ মুহূর্তেই তিন/চারটি মোটরসাইকেলে হেলমেট পরা অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা এসে জিল্লুরকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে চলে যায়।
এসময় তার স্ত্রীর চিৎকার শুনে স্থানীয়রা এসে জিল্লুরকে উদ্ধার করে কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
হাসপাতালে উপস্থিত জিল্লুর রহমানের চাচাতো ভাই কাউসার জানান, সকালে লোকজনের চিৎকার শুনে ঘটনাস্থলে এসে দেখি জিল্লুর ভাই রক্তাক্ত অবস্থায় রাস্তায় পড়ে আছেন। দ্রুত তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসি। কিন্তু বাঁচানো সম্ভব হয়নি।
কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের ২৫ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর এমদাদুল হাসান জানান, খবর পেয়ে আমরা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ছুটে এসেছি। জিল্লুর রহমানের এমন মৃত্যু মেনে নেয়া যায় না। দীর্ঘদিন ধরে তিনি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত। হত্যায় জড়িতদের দ্রুত চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।
সদর দক্ষিণ মডেল থানার ওসি নজরুল ইসলাম জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল ও হাসপাতালে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। লাশ কুমিল্লা মেডিকেলের মর্গের রাখা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
কুমিল্লার পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলাম বলেন, নিঃসন্দেহে এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। এখানে রাজনৈতিক ইস্যু আছে। দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব আছে। আমরা সব বিষয়ে খোঁজ-খবর নিচ্ছি। হত্যাকারীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা হবে।
তিনি বলেন, যেহেতু তার (জিল্লুর) স্ত্রী ঘটনাস্থলে ছিলেন- তিনিই প্রধান সাক্ষী। তার ভাষ্য ও অন্যান্য বিষয় খতিয়ে দেখা হচ্ছে। হত্যায় জড়িত কেউ ছাড় পাবে না। যার যে পরিচয়ই থাকুক না কেন- হত্যাকারীকে ‘হত্যাকারী’ হিসেবেই দেখা হবে।