সৌভাগ্যের পরশমণি!

Daily Nayadiganta


ঘটনার দিন প্রাতঃভ্রমণে বের হয়েছিলাম একেবারে কাকডাকা ভোরে। আমাদের নায়েম রোডটি এমনিতেই ধানমন্ডির মধ্যে সবচেয়ে নীরব নির্জন এবং কোলাহলমুক্ত। অধিকন্তু সড়কটির কাছেই বিজিবি সদর দফতর। ঢাকা কলেজ, গভর্নমেন্ট ল্যাবরেটরি স্কুল এবং টিচার্স ট্রেনিং কলেজ ক্যাম্পাসের সুবিশাল বৃক্ষবাজির ঘনত্বের কারণে ভোরের দিকে একটু বেশি সময় অন্ধকারাচ্ছন্ন থাকে। আমি যে সময়টিতে সাধারণত বের হই তখন অন্যান্য প্রাতঃভ্রমণকারী থাকেন না। ফলে বাড়ি থেকে বের হয়ে প্রায় এক কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে মিরপুর রোডে উঠে লোকজনের সন্ধান পাই। এভাবেই চলে আসছিল গত প্রায় ২৫ বছর ধরে। কিন্তু এরই মধ্যে সে দিন হঠাৎ লক্ষ করলাম যে, কেউ একজন অদ্ভুতভাবে আমাকে অন্ধকার গলির মধ্যে অনুসরণ করছে। লোকটি একবার সামনে এসে আমাকে দেখছে আবার কিছুটা পিছিয়ে কী যেন চিন্তা করছে।

হাঁটা থামিয়ে লোকটিকে কাছে ডাকলাম এবং সালাম দিলাম। লোকটি ভারি আশ্চর্য হলেন এবং কিছুটা ইতঃস্তত করে আমার নাম ‘গোলাম মাওলা রনি’ কি না তা জানতে চাইলেন। আমার উত্তর পেয়ে তিনি বুঝলেন যে, আমিই তার কাক্সিক্ষত মানুষ যাকে তিনি বহু দিন ধরে খুঁজছেন। তিনি নিজেকে ‘সরকারি কর্মচারী’ বলে পরিচয় দিলেন এবং বললেন যে, তার বস যিনি সিভিল সার্ভিসের একজন কর্তাব্যক্তি তিনিও আমার নিদারুণ ভক্ত। সাধ্যমতো মনোযোগ দিয়ে তার কথাগুলো শুনলাম এবং বুঝতে পারলাম যে, তার বস আমার নিবন্ধগুলো নিয়মিত পড়েন এবং এই কারণে তিনি আমার সাথে দেখা করতে আগ্রহী। ভদ্রলোকের অভিব্যক্তি দেখে অনুভব করলাম যে, আমার সাথে তার সাক্ষাতের বিষয়টি তিনি তার বসকে জানানোর জন্য ছটফট করছেন। ইতোমধ্যে আমরা হাঁটতে হাঁটতে মিরপুর রোডে চলে এলাম। এবার বিদায়ের পালা। কারণ হাতের বাম দিকের ফুটপাথ ধরে ধানমন্ডি লেকের দিকে যাবো আর যে লোকটির কথা বলছি তিনি ডান দিকে নীলক্ষেত যাবেন।

বিদায়ের সময় ভদ্রতা করে তাকে বললাম, আপনার বসকে আমার দাওয়াত পৌঁছে দেবেন। তিনি যদি আমার অফিসে আসেন খুব খুশি হবো। ঘটনার দু’দিন পর বেলা সাড়ে ১১টার দিকে আমার দফতরে বসে কাজ করছিলাম। তখন রিসিপশন থেকে জানানো হলো- অমুক মন্ত্রণালয়ের একজন লোক আমার সাথে দেখা করতে এসেছেন। আমি কাজের চাপে উল্লিøখিত প্রাতঃভ্রমণের সময় যার সাথে কথা হয়েছিল সে ঘটনা ভুলে গিয়েছিলাম। কাজেই আমার স্বভাব অনুযায়ী সব দর্শনার্থীর সাথে দেখা করার যে অভ্যাস রপ্ত করেছি সে কারণে মন্ত্রণালয়ের কর্তা বলে পরিচয়দানকারীকে আমার কক্ষে আসতে বললাম। তিনি এলেন এবং আমি প্রথম দর্শনেই বুঝে গেলাম যে, আগন্তুক কোনো সাধারণ ব্যক্তি নন। তার সৌম্যকান্তি দর্শন এবং হাস্যময় অভিব্যক্তি আমাকে মুগ্ধ করল। তিনি মাত্র ৩০ সেকেন্ডের সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে আমাকে খুব সহজে বুঝিয়ে দিলেন যে, নায়েম রোডের প্রাতঃভ্রমণকালে তার বিষয়ে কথা হয়েছিল এবং আজ সচিবালয়ে তার শেষ কর্মদিবস এবং ফেয়ারওয়েল ছিল। তিনি সেটা শেষ করে সোজা আমার অফিসে চলে এসেছেন সাক্ষাতের জন্য। ভদ্রলোকের সাথে প্রাথমিক আলোচনায় আরো জানলাম, তিনি অষ্টম বিসিএসের কর্তা ছিলেন এবং দেশ-বিদেশে বহু গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন শেষে আজ সরকারি চাকরি জীবনের শেষ দিনটিতে সহকর্মীদের আবেগঘন বিদায়ী অনুষ্ঠান দ্বারা আপ্যায়িত হয়ে খোশ মেজাজে আমার সাথে দেখা করতে এসেছেন। ভদ্রলোকের কথাবার্তা ও আচরণে বেশ আশ্চর্য হলাম। কারণ ইতঃপূর্বে তার অধঃস্তন কর্তৃক জেনেছিলাম যে, তিনি তুখোড় মেধাবী ছাত্র হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম শ্রেণীতে প্রথম স্থান অধিকার করেছিলেন। চাকরি জীবনে উপসচিব পর্যন্ত পদোন্নতিতে তিনি তার ব্যাচের সবাইকে চমকে দিয়েছিলেন এবং ভালো পদে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন। কিন্তু পরে রাজনৈতিক হয়রানির শিকার হয়ে পদবঞ্চিত এবং কর্মক্ষেত্রে বহু দুর্ভোগ-দুর্দশার শিকার হয়েছেন।

সে অবস্থায় আশা করেছিলাম যে, ভদ্রলোক হয়তো অন্যান্য মানুষের মতো গড়গড়িয়ে নিজের দুঃখের কথা বলবেন এবং চাকরি জীবনের শেষ দিনের বিদায়ী সংবর্ধনার কারণে বিমর্ষ থাকবেন। কিন্তু বাস্তবে তিনি ছিলেন বেশ প্রফুল্ল এবং আমার সাথে সাক্ষাতের আনন্দে যারপরনাই আনন্দিত। তিনি আমার জন্য একগাদা বই নিয়ে এসেছেন উপহার হিসেবে এবং সেগুলো দিতে গিয়ে তিনি জীবনঘনিষ্ঠ কিছু প্রশ্ন করলেন। আমি তার প্রশ্নের মর্মার্থ বুঝলাম এবং অনুভব করলাম যে, ভদ্রলোক মূলত ভিন্ন জগতের মানুষ। তিনি ইতিবাচক চিন্তা করেন এবং নিজের স্বার্থ প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তি নিয়ে তার কোনো মাথাব্যথা নেই। বরং মানুষের আর্থিক উন্নয়ন, ধর্মাচার, সফলতা-সার্থকতা নিয়ে তিনি চিন্তাভাবনা করেন। তার জীবনের চাওয়া-পাওয়ার অধিক্ষেত্র খুবই সীমিত। সুতরাং সরকারি চাকরি থেকে অবসর লাভের সুযোগ পেয়ে তিনি খুশি এই কারণে যে, এখন থেকে তিনি প্রাণভরে সেই কর্ম করতে পারবেন যা তিনি পছন্দ করেন এবং ভালোবাসেন।

ভদ্রলোকের কথাবার্তা শুনে আমার মধ্যে এক ধরনের আধ্যাত্মিকতা চলে এলো। আমরা উভয়ে এমন কর্থাবার্তা বলাবলি শুরু করলাম যা সচরাচর আমার মুখ থেকে বের হয় না। অন্য দিকে, আগন্তুক ভদ্রলোকও সম্ভবত তেমনভাবে ইতঃপূর্বে বলেননি বা শোনেননি। আমরা বলছিলাম- কেন একজন সুবক্তা জ্ঞানী হয় না। জ্ঞানী কেন সফল হয় না। সফলরা কেন সুনাম ও সুখ্যাতি পায় না। জনপ্রিয় লোকজন কেন অতি দ্রুত পতনের দ্বারপ্রান্তে যায়। ক্ষমতাবানরা কেন অত্যাচারী ও দুর্নীতিবাজ হয়। ধনীরা কেন সুখী হয় না। সুখী লোকজনের কেন অনেক অভাব থাকে। অভাব কেন স্বভাব নষ্ট করে। মানুষ কখন বোধের মধ্যে পতিত হয়। তকদির এবং তদবির আসলে কিভাবে কাজ করে ইত্যাদি।

পুরো আলোচনার বিষয়বস্তু বিস্তারিত লিখতে গেলে নিবন্ধের পরিধি অনেক বড় হয়ে যাবে। কাজেই সে দিনের আলোচনার চৌম্বক অংশটুকু যা কি না আমার নিজের জন্য স্মরণ রাখা অতীব জরুরি এবং আশা করছি পাঠকদেরও যা ভালো লাগবে, তা সংক্ষিপ্তাকারে নিম্নে পেশ করছি। মানবজীবনের তাবৎ সফলতার মূলে দুটি প্রাথমিক উৎস রয়েছে। প্রথমটি হলো- মানবের অভ্যন্তরীণ উৎস যেখানে মহান আল্লাহ তাঁর বান্দার সব প্রয়োজনের রসদ-কাঁচামাল-খনিজ পদার্থ সংরক্ষণ করে রেখেছেন। এসব সম্পত্তির একটি অংশকে বস্তুগত-প্রকাশ্য অথবা দৃশ্যমান বলা যেতে পারে। এসব সম্পত্তির কার্যকারিতা বিজ্ঞান এবং গণিতের সূত্রমতো চলে। মানুষের শরীর, পরিশ্রম এবং মূলধন এই তিনটি জিনিস ব্যবহার করে সারাজীবন যা পাওয়া যায় তা এই সফলতার অন্তর্ভুক্ত। এখানে অলৌকিক, আশাতীত এবং নিয়মের বাইরে কিছু ঘটে না। মানবমণ্ডলীর ৮০ শতাংশ প্রাণী কঠোর পরিশ্রম করে মূলত তার শরীরের অভ্যন্তরের শক্তি ব্যবহার করে খুব সাদামাটা জীবনযাপন করে ভবলীলা সাঙ্গ করে থাকে।

মানবের উল্লিখিত শারীরিক শক্তিজাত সম্পদ তখনই মূল্যবান সম্পদে পরিণত হয় এবং মানুষের সফলতা বিজ্ঞান ও গণিতের সূত্র অতিক্রম করে জ্যামিতিক সূত্র অনুসরণ করে যখন তার শরীরের অভ্যন্তরের অবস্তুগত সম্পদ, বুদ্ধিমত্তার সংযোগ ঘটে। বুদ্ধির সাথে দক্ষতা-অভিজ্ঞতা এবং প্রজ্ঞা সংযুক্ত হলে মানবের শরীরজাত সব সম্পদের শ্রীবৃদ্ধি ঘটে যায়। পরবর্তী ধাপে মানব যখন তার শ্রম-মেধা ও প্রজ্ঞার সাথে মানবিক মূল্যবোধের সংযোগ ঘটায় তখন তার সব সফলতা মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে এবং সুগন্ধ ছড়াতে শুরু করে।

মানুষের শরীরের বস্তুগত ও অবস্তুগত সব সম্পদ এবং সম্পদ দ্বারা উৎপাদিত সফলতার পূর্ণতার জন্য শরীরের বাইরে প্রকৃতি ও পরিবেশের মধ্যে আল্লাহ প্রদত্ত নিয়ামতগুলোর সংযোগ আবশ্যক। এসব সম্পদের মধ্যে কয়েকটি যেমন- আলো, বাতাস, পানি সবার জন্য অবারিত। এগুলো ছাড়া অন্য নিয়ামতগুলো লুকানো থাকে মাটির উপরি ভাগে, পানির উপরি ভাগে এবং পাহাড়ের উপরি ভাগে। কিছু নিয়ামত লুক্কায়িত থাকে ভ‚মি-পানি-পাহাড়, বনাঞ্চল, মরুভূমি এবং মেরু অঞ্চলের অভ্যন্তরে। এসব নিয়ামতের সাথে মানুষের দেহজ নিয়ামতের সংযোগ ঘটানোর জন্য দরকার বিশেষ কোনো জ্ঞান বা বিজ্ঞানের দক্ষতা। মানুষ যখন এই কাজ করতে পারে তখন তার সফলতা জ্যামিতিক হার অতিক্রম করে অনন্য উচ্চতায় চলে যায়।

মানবের উল্লিখিত সহায়-সম্পদ অর্জন বা সফলতা তখনই সার্থকতা পায় যখন তা অন্য মানুষের শরীরের মধ্যে থাকা বস্তুগত ও অবস্তুগত সম্পদের সাথে সংযোগ স্থাপন করতে পারে। মানুষের অন্তরে প্রেম বা মহব্বত না থাকলে কোনো সফল মানুষই এই স্তরের সার্থকতা অর্জন করতে পারে না। একজন হাজী মোহাম্মদ মোহসীন, দানবীর রনদা প্রসাদ, আলফ্রেড নোবেল অথবা হজরত ওসমান রা:-এর মতো মর্যাদাবান ধনী ও সফল মানুষ হিসেবে সার্থকতার ইতিহাসে নিজের নাম লিখতে চাইলে আপনার অন্তর শর্তহীন মহব্বতে পরিপূর্ণ হতে হবে।

আমাদের সমাজের সফল মানুষরা সার্থকতার জন্য যখন শর্তযুক্ত চেষ্টা তদবির করেন, তখন তাদের সেই চেষ্টা ব্যর্থ হয়ে যায় এবং কিছু কিছু ক্ষেত্রে গুনাহের কারণ হয়ে থাকে যাকে আরবিতে বলা হয় রিয়া, মানে সুনাম সুখ্যাতি পাওয়ার লোভ। নিজেকে বড় হিসেবে প্রমাণের প্রচেষ্টা অথবা নিজের শ্রেষ্ঠত্ব কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার চেষ্টা অথবা কোনো পদ পদবি পুরস্কারের লোভে তাড়িত মানুষ তার সব সহায় সম্পদ এবং জীবনটি বিলিয়ে দেয়ার পরও দুনিয়া ও আখিরাতে সার্থকতা লাভ করতে পারে না। কেবল শর্তহীন মহব্বতে পরিপূর্ণ আত্মার প্রচেষ্টাই মানুষকে মাকামে মাহমুদে পৌঁছে দিতে পারে।

এখন প্রশ্ন হলো- মানুষের অন্তরকে কিরূপে শর্তহীন মহব্বত দিয়ে পরিপূর্ণ করা সম্ভব? আপনি যদি এই প্রশ্নের উত্তর জানতে চান তবে বলব, আপনাকে সোহবত শিখতে। অর্থাৎ মানুষের সাথে মেলামেশা এবং উত্তম আচরণেই কেবল অন্য মানুষের জন্য আপনার হৃদয়ে মহব্বত পয়দা হতে থাকবে। তবে আপনি যদি তরিকা না জানেন অর্থাৎ স্থান কাল পাত্র সম্পর্কে যদি আপনার জ্ঞান বুদ্ধি বিবেক ভোঁতা থাকে তবে লোকজনকে ভালোবাসতে গিয়ে আপনি আঘাত পাবেন, অপমানিত হবেন এবং ক্ষেত্রবিশেষে অত্যাচারের শিকার হবেন। সে ক্ষেত্রে শুধু তরিকা না জানার কারণে আপনার সব অর্জন বিফলে চলে যাবে।

আপনি যদি উপরোক্ত স্তরগুলো সফলতার সাথে অতিক্রম করতে পারেন তবে দৃশ্যমান সব সুখ-সম্পদ, মান-সম্মান, খ্যাতি-যশ সব কিছুই আপনার যোগ্যতা অভিজ্ঞতা শিক্ষা-দীক্ষা, পদ-পদবি এবং আপনার সময়ের সাথে সামঞ্জস্য বজায় রেখে করায়ত্ত হতে পারে যদি কোনো দৈব দুর্বিপাকের খপ্পরে না পড়েন। তবে এই স্তরের সফলতা এবং সার্থকতার কার্যকারণ আপনি যেমন বুঝতে পারবেন তদ্রুপ আপনাকে ঘিরে থাকা লোকজনও বুঝতে পারবে। অর্থাৎ আপনার মেধা শ্রম দক্ষতা শিক্ষা দীক্ষা মানবিক গুণাবলি ইত্যাদির বৈজ্ঞানিক গাণিতিক ও জ্যামিতিক সমীকরণই যে, আপনার প্রাপ্তির যোগফল তা কারোরই বুঝতে অসুবিধা হবে না। কিন্তু আপনি যদি এই সফলতা ও সার্থকতার বাইরে মহাজাগতিক বা অলৌকিক কিছু হাসিল করতে চান যার সমীকরণ বিজ্ঞান বা অঙ্ক দিয়ে মেলানো যাবে না সে ক্ষেত্রে আপনার মহব্বত তরিকত হকিকতকে ঊর্ধ্বলোকে নিয়ে যেতে হবে মহান আল্লাহর দরবারে এবং সেখানে যাওয়ার সব বন্দোবস্তু কিন্তু আপনার দেহের মধ্যেই লুকানো রয়েছে। আপনাকে শুধু একটু কষ্ট করে অন্তর্লোকে অনুসন্ধান চালিয়ে ঊর্র্ধ্বলোকের বাহন এবং অন্য পাথেয়গুলো খুঁজে বের করতে হবে। আর তখনই আপনি হয়ে উঠবেন পরিপূর্ণ মানুষ বা আশরাফুল মাখলুকাতের অতি উঁচু স্তরের সম্মানিত ও মর্যাদাবান ব্যক্তিত্ব!

লেখক : সাবেক সংসদ সদস্য