সেঞ্চুরি, হ্যাটট্রিক, মিরাজ নাটকের চট্টগ্রাম পর্ব

  • নয়া দিগন্ত অনলাইন
  •  ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১৮:৩৮

তামিম ইকবাল ও মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরী – ছবি : সংগৃহীত

ঢাকা পর্ব আসলে ছিল ম্যাড়ম্যাড়ে। ছিল না রান উৎসব। নেই সেঞ্চুরি। তবে বিপিএলের চট্টগ্রাম পর্বটা ছিল ঠাসা উত্তেজনায়। গত মঙ্গলবার আট ম্যাচের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে বিপিএলের চট্টগ্রাম পর্ব। বৃহস্পতিবার থেকে বিপিএল আবার ঢাকায় শুরু হচ্ছে। দুই দিনে চার ম্যাচের পর বিপিএল আবার চলে যাবে সিলেটে।

চট্টগ্রাম পর্বেই বিপিএল ছড়িয়েছে আসল উত্তেজনা। রান উৎসব, সেঞ্চুরি, হ্যাটট্রিক, মিরাজ নাটক, সাকিবের রানে ফেরা, মাহমুদউল্লাহর ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস; সব মিলিয়ে ভক্তরা বেশ উপভোগ করেছে এই পর্বটি।

চট্টগ্রাম পর্ব শেষে পয়েন্ট তালিকায় শীর্ষে রয়েছে সাকিবের বরিশাল। ৬ ম্যাচে ৮ পয়েন্ট দলটির। চার ম্যাচে ৬ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। মিনিস্টার গ্রুপ ঢাকার অবস্থান তৃতীয়। ৬ ম্যাচে দলটির পয়েন্ট ৬। এরপর অবস্থান চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের। সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলেছি এই দলটি, ৭টি। পয়েন্ট ৬। মুশফিকুর রহিমের খুলনা টাইগার্সের অবস্থান পঞ্চমে। ৫ ম্যাচে চার পয়েন্ট দলটির। সবচেয়ে কম ম্যাচ খেলা দল সিলেট। চার ম্যাচে দলটির পয়েন্ট সাকুল্যে দুই, অবস্থান সবার নিচে।

চট্টগ্রাম পর্বে বিপিএলের প্রথম সেঞ্চুরি আসে সিলেটের লেন্ডল সিমন্সের হাত ধরে। একই ম্যাচে সিলেটের বিরুদ্ধে সেঞ্চুরি করে ঢাকাকে জেতান ড্যাশিং ওপেনার তামিম ইকবাল। খেলেন ৬৪ বলে ১১১ রানের দুর্ধর্ষ ইনিংস। এই পর্বে দেখা মেলে আসরের প্রথম হ্যাটট্রিকও। সেটাও সিলেটের বিরুদ্ধে করে দেখান চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের পেসার মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরী। তার হ্যাটট্রিকের বদৌলতেই রোমাঞ্চের জয় পায় চট্টগ্রাম। এই ম্যাচে বিপিএলের চলমান আসরে প্রথম দল হিসেবে ২০০ রান অতিক্রম করে চট্টগ্রাম। করে ৫ উইকেটে ২০২ রান।

চট্টগ্রাম পর্বে ছিল মেহেদী হাসান মিরাজকে নিয়ে জটিলতা। যদিও শেষ পর্যন্ত এই জটিলাত বেশিদূর গড়ায়নি।
ঢাকা পর্বে মিরাজের নেতৃত্বে খেলেছিল চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। কিন্তু চট্টগ্রাম পর্বে একটি ম্যাচের পর পাল্টে যায় দৃশ্য। মিরাজকে রেখে দলটি অধিনায়ক করে নাঈম ইসলামকে। অভিমানে বিপিএল না খেলার সিদ্ধান্ত নিয়ে ঢাকায় আসার প্রস্তুতি নেন মিরাজ। শেষ পর্যন্ত কয়েকদফা আলোচনার পর বরফ গলে। ঢাকায় না এসে দলের সাথে থেকে যান। খেলেন বাকি সব ম্যাচ।

চট্টগ্রাম পর্বে ব্যাট-বলের দাপটে শীর্ষে ছিল সাকিবের ফরচুন বরিশাল। তিন ম্যাচেই দলটি তুলে নেয় দারুণ জয়। শুরুটা খুলনাকে ১৭ রানে হারিয়ে। দ্বিতীয় ম্যাচেও জয় এই খুলনার বিরুদ্ধে। শেষের জয়টা বরিশালের অবশ্য বেশ দাপুটে ঢঙে। দলটি হারায় ১৪ রানে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সকে। এই ম্যাচে ব্যাট-বল হাতে দুরন্ত ছিলেন সাকিব আল হাসান। ৪৫ ইনিংস পর সাকিব দেখা পান টি-টোয়েন্টিতে ফিফটি। বল হাতে নেন তিন উইকেট।

ঢাকার প্রথম পর্বে মিনিস্টার গ্রুপ ঢাকার অবস্থা বাজে ছিল। চট্টগ্রাম পর্বে গিয়ে দুই ম্যাচ জিতে ঢাকায় ফিরেছে দলটি। প্রথম ম্যাচেই সিলেটকে হারায় তারা ৯ উইকেটে। দ্বিতীয় জয় দারুণ গতিতে এগিয়ে চলা কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের বিরুদ্ধে। অন্যদিকে ঘরের মাঠে ভালো করতে পারেনি চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলে বেশি হার দলটির। শুরুটা তাদের খুলনার কাছে ৬ উইকেটে হেরে। দ্বিতীয় ম্যাচে সিলেটকে ১৬ রানে হারিয়ে জয়ে ফেরে দলটি। কিন্তু বাকি দুই ম্যাচে আবার হার। কুমিল্লার সাথে ৫২ রানে হারের পর শেষ ম্যাচে বরিশালের কাছেও হারতে হয় নাঈম ইসলামদের।

বৃহস্পতিবার থেকে মিরপুরে শুরু হচ্ছে আবার বিপিএল ফিরতি ঢাকা পর্ব। দিনের প্রথম ম্যাচে বেলা সাড়ে ১২টায় মুখোমুখি হবে খুলনা টাইগার্স ও সিলেট সানরাইজার্স। দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে সন্ধ্যা সাড়ে ৫টায় চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের।

এবারের ঢাকা পর্বে দুই দিনে চারটি ম্যাচ। আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স ও ফরচুন বরিশালের ম্যাচের মধ্য দিয়ে শুরু হবে বিপিএলে সিলেট পর্ব। এখানে অনুষ্ঠিত হবে মোট ছয় ম্যাচ। ১১ ফেব্রুয়ারি থেকে আবার ঢাকায় শুরু হবে বিপিএলের শেষ পর্ব।