সেই ২৮ অক্টোবর এই ২৮ অক্টোবর

মনজুরুল ইসলাম : ২৮ অক্টোবর বিরোধী দল বিএনপি এবং ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের পাল্টাপাল্টি মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে রাজনীতির মাঠ এখন উত্তপ্ত। দুটি দলই রাজধানী ঢাকায় খুব কাছাকাছি দূরত্বে সমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, সমাবেশ থেকে সরকার পতনের চূড়ান্ত কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। সরকার বাধা না দিলে তাদের আন্দোলন শান্তিপূর্ণ থাকবে-দলটির পক্ষ থেকে এমন প্রতিশ্রুতিও দেওয়া হয়েছে।

অপরদিকে সরকারি দল আওয়ামী লীগ একই দিন রাজপথ নিজেদের দখলে রাখার কথা বলেছে। এরই মধ্যে বুধবার এক দলীয় কর্মসূচিতে আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা ও ঢাকা দক্ষিণের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস বলেছেন, ‘লগি-বইঠা’ নিয়ে আবারও গণতন্ত্র রক্ষা করব। (সমকাল অনলাইন, ২৫ অক্টোবর)। তাঁর এমন বক্তব্যের পর এ প্রশ্নগুলো ওঠা খুব স্বাভাবিক যে, গণতন্ত্র ‘রক্ষা’ করতে কেন লগি-বইঠা লাগবে? লগি-বইঠা দিয়ে কি আদৌ গণতন্ত্র রক্ষা হয়েছিল? তাহলে হঠাৎ করে তিনি কেন লগি-বইঠার প্রসঙ্গ টেনে আনলেন?

বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে আগে থেকেই ২৮ অক্টোবর একটি আলোচিত দিন। ২০০৬ সালে দিনটি ছিল অনেক ঘটনার কেন্দ্রবিন্দু। সে বছরের ২৮ অক্টোবর ছিল বিএনপি নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকারের শেষ দিন। এর কয়েক দিন আগে থেকেই তারা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রস্তুতি নিচ্ছিল। সেই সময় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হওয়ার কথা ছিল সাবেক প্রধান বিচারপতি কে এম হাসানের। তিনি বিএনপির ‘সমর্থক’ এবং তাঁকে প্রধান উপদেষ্টা করার পূর্বপরিকল্পনা থেকেই সংবিধান সংশোধন করে বিচারপতিদের বয়স বাড়ানো হয়েছে—এমন অভিযোগ ছিল আওয়ামী লীগের।

কে এম হাসান যাতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব না নিতে পারেন সে জন্য আগে থেকেই আন্দোলন করছিল আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন বিরোধী দলগুলো। ২৭ অক্টোবর থেকে দেশজুড়ে এক সংঘাতময় পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। সেদিন ঢাকার বাইরে চারজন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া যায়। এ ছাড়া বিভিন্ন স্থানে বিএনপি এবং জামায়াত নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের বাসা-বাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা হয়। (বিবিসি বাংলা, ২৮ অক্টোবর ২০২২)।