সুষ্ঠু ভোটের প্রধান চ্যালেঞ্জ মন্ত্রী-এমপির স্বজন

সুষ্ঠু ভোটের প্রধান চ্যালেঞ্জ মন্ত্রী-এমপির স্বজনসিংড়া উপজেলা নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পর এভাবেই প্রার্থীকে মাইক্রোবাসে তুলে নেওয়া হয়। সিসিটিভি ফুটেজ থেকে নেওয়া ছবি

 জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মতো উপজেলার ভোটেও আওয়ামী লীগ ছাড়া অন্য কেউ নেই মাঠে। তবু তৃণমূল আওয়ামী লীগে আতঙ্ক ছড়াচ্ছেন মন্ত্রী-এমপির আশীর্বাদপুষ্ট প্রার্থীরা। প্রথম ধাপের অধিকাংশ উপজেলায় স্থানীয় এমপির ঘনিষ্ঠজন প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করছেন। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ দলীয় প্রতীকে প্রার্থী না দিলেও তারাই নিজেদের দলের প্রার্থী হিসেবে প্রচার করছেন।

এরই মধ্যে প্রথম ধাপের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিনে নাটোরের সিংড়ায় দেলোয়ার হোসেন নামে একজনকে অপহরণের অভিযোগ উঠেছে। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের শ্যালক ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক লুৎফুল হাবীবের বিরুদ্ধে এ অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতাও পেয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এদিকে পাল্টাপাল্টি প্রার্থী হওয়া নিয়ে ক্ষমতাসীনদের ঘরোয়া বিবাদ মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। অনেক স্থানে পরিস্থিতি সহিংসতায় রূপ নিতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ইসি সচিবালয় সূত্র জানিয়েছে, নাটোরের সিংড়ার ঘটনায় কমিশনের নির্দেশে প্রাথমিক তদন্তের কাজ শেষ করে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। আজ বুধবার বিকেল ৩টায় প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) সভাপতিত্বে কমিশন সভায় বসছে। সেখানে নাটোরের তদন্ত প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হতে পারে। এ ছাড়া ওই বৈঠক থেকে তৃতীয় ধাপের তপশিল অনুমোদনের প্রস্তুতিও রয়েছে।

প্রথম ধাপে ১৫০ উপজেলায় বিএনপি-জামায়াতের অনেকে মনোনয়নপত্র জমা দিলেও তাদের অধিকাংশ কেন্দ্রের নির্দেশে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করতে যাচ্ছেন। দলীয়ভাবে আওয়ামী লীগ এবার প্রার্থী মনোনয়ন দেয়নি। ফলে এক উপজেলায় দলীয় পদধারী একাধিক নেতা প্রার্থী হচ্ছেন।

পরিস্থিতি সামাল দিতে প্রধানমন্ত্রীর বরাত দিয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিকে হস্তক্ষেপ না করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল ধানমন্ডিতে এক সংবাদ সম্মেলনে ওবায়দুল কাদের বলেন, উপজেলা নির্বাচনে প্রশাসনও কোনো হস্তক্ষেপ করবে না। নির্বাচন হবে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ। এক প্রার্থীকে অপহরণের অভিযোগ প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সরকার সচেষ্ট। প্রশাসনিকভাবে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা চলছে।

বগুড়ায় এমপির ছেলে ও ভাই প্রার্থী
বগুড়া ব্যুরো জানায়, বগুড়া-১ (সারিয়াকান্দি-সোনাতলা) আসনের আওয়ামী লীগের এমপি সাহাদারা মান্নানের ছেলে শাখাওয়াত হোসেন সজল সারিয়াকান্দি উপজেলা চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন। পাশাপাশি সোনাতলায় প্রার্থী হয়েছেন এমপির ভাই মিহাদুজ্জামান লিটন। এ নিয়ে দলের মধ্যে বিভক্তি দেখা দিয়েছে।

সারিয়াকান্দিতে এমপির ছেলে সজলের বিপরীতে আওয়ামী লীগের আরও চার নেতা প্রার্থী হয়েছেন। তারা হলেন সারিয়াকান্দি আওয়ামী লীগ সভাপতি ও বর্তমান চেয়ারম্যান রেজাউল করিম মন্টু, উপজেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি আবদুস সালাম, বর্তমান সাধারণ সম্পাদক আশিক আহম্মেদ এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য শাহজাহান আলী।

এমপির ভাইয়ের বিপরীতে প্রার্থী হয়েছেন সোনাতলা উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রস্তাবিত কমিটির সহসভাপতি জাকির হোসেন।

এদিকে সোমবার মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পর রাতেই সাহাদারা মান্নান এমপি তাঁর অনুসারীদের নিয়ে বৈঠক করে ছেলের পক্ষে কাজ করতে সবাইকে নির্দেশনা দেন। হাটফুলবাড়ি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি আনোয়ারুত তারিক বলেন, এমপি পরিবারতন্ত্র কায়েম করতে হঠাৎ তাঁর ছেলেকে প্রার্থী করেছেন। একই অভিযোগ করেন সোনাতলার মধুপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি দবির উদ্দিন। তিনি বলেন, পরিবারতন্ত্রের কারণে দলের অনেক ত্যাগী নেতাকর্মী বঞ্চিত হচ্ছেন।

ছেলে ও ভাইকে প্রার্থী করার বিষয়ে সাহাদারা মান্নান এমপি বলেন, স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীর মতামতের ভিত্তিতেই ছেলে প্রার্থী হয়েছে। ভাই বর্তমান চেয়ারম্যান; ভাইয়ের জন্য আমি মাঠে নামিনি।

দামুড়হুদায় এমপির ভাই-ভাতিজার দ্বন্দ্ব 
দামুড়হুদা (চুয়াডাঙ্গা) প্রতিনিধি জানান, দামুড়হুদায় চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের এমপি আলী আজগর টগরের ছোট ভাই আলী মুনছুর বাবু আবারও চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন। একই পদে এমপির ভাতিজা সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান হাজি সহিদুল ইসলামও প্রার্থী হয়েছেন। এতে দলের নেতাকর্মী বিভক্ত হয়ে পড়েছেন। দেখা দিয়েছে উত্তেজনা। সংসদ নির্বাচনের আগে থেকেই দলের একটি অংশ এমপি টগরবিরোধী অবস্থান নিয়েছিল। এমপির ভাই প্রার্থী হওয়ায় পুরোনো কোন্দল ফের মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে।

এ ব্যাপারে এমপির ভাতিজা ও দামুড়হুদা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সহিদুল ইসলাম বলেন, সংসদ নির্বাচনের সময় আমি ছাড়া চাচার পক্ষে কোনো পদধারী নেতা ছিলেন না। তিনি আমাকে উপজেলায় প্রার্থী করার জন্য কথা দিয়েছিলেন। এখন কোনো আলোচনা ছাড়াই তাঁর ভাইকে সঙ্গে নিয়ে বিভিন্ন ইউনিয়নে গণসংযোগ করে বেড়াচ্ছেন।

নোয়াখালীতে দুই এমপির ছেলে প্রার্থী
নোয়াখালী প্রতিনিধি জানান, হাতিয়ায় চেয়ারম্যান পদে নোয়াখালী-৬ আসনের এমপি মোহাম্মদ আলীর বড় ছেলে আশিক আলী ও সুবর্ণচরে চেয়ারম্যান পদে নোয়াখালী-৪ আসনের এমপি মোহাম্মদ একরামুল করিম চৌধুরীর ছেলে আতাহার ইসরাক শাবাব চৌধুরী প্রার্থী হয়েছেন।

সুবর্ণচরের আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়েছে। এক পক্ষের নেতৃত্বে রয়েছেন সুবর্ণচর উপজেলা পরিষদের দু’বারের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি এএইচএম খায়রুল আনম চৌধুরী সেলিম। অন্য পক্ষের নেতা নোয়াখালী-৪ আসনের এমপি মো. একরামুল করিম চৌধুরী।

দীর্ঘদিন ধরে জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি এএইচএম খায়রুল আনম চৌধুরী সেলিম জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি অ্যাডভোকেট শিহাব উদ্দিন শাহিন এবং সুবর্ণচর উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক স্পিকার আবদুল মালেক উকিলের ছোট ছেলে বাহার উদ্দিনের সঙ্গে এমপি একরামুল করিম চৌধুরীর রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব চলছে। সর্বশেষ গত ১২ এপ্রিল রাতে জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতির অনুসারী ও চরজব্বার ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক হাজি বশির আহমেদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। নির্বাচনের দিন যতই এগিয়ে আসছে, ততই সুবর্ণচরবাসীর মধ্যে আতঙ্ক বাড়ছে।

টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী আওয়ামী লীগে কোন্দল
টাঙ্গাইল প্রতিনিধি জানান, উপজেলার ভোট ঘিরে টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দল আরও প্রকট হয়ে উঠেছে। সাবেক মন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাকের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ্যে তাঁর বিরুদ্ধে বক্তব্য-বিবৃতি দিয়ে যাচ্ছেন। এ ছাড়া তারা কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতার কাছে তাঁর বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগও দিয়েছেন। তবে এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ উপজেলা আওয়ামী লীগের বেশির ভাগ নেতাকর্মী। তারা এটিকে সাবেক মন্ত্রী রাজ্জাকের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হিসেবে দেখছেন। কারণ, উপজেলা আওয়ামী লীগসহ অঙ্গ সংগঠনের দু-একজন বাদে সবাই ড. রাজ্জাকের পক্ষে বলে জানিয়েছেন নেতাকর্মী। তবে দলের দ্বিমুখী অবস্থানের কারণে সাধারণ নেতাকর্মী হয়ে পড়েছেন দ্বিধাবিভক্ত।

ধনবাড়ী আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি ও বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান হারুন অর রশীদ হীরাকে চেয়ারম্যান পদে সমর্থন দিয়েছেন আব্দুর রাজ্জাক। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাবেক মেয়র খন্দকার মঞ্জুরুল ইসলাম তপন তাঁর স্ত্রী মহিলা আওয়ামী লীগ নেত্রী মোর্শেদা ইসলামকে প্রার্থী করেছেন। হীরা আব্দুর রাজ্জাকের খালাতো ভাই এবং তপন মামাতো ভাই।

মাদারীপুরে আলোচনায় এমপির ছেলে ও ভাই
মাদারীপুর প্রতিনিধি জানান, মাদারীপুর সদর উপজেলায় আলোচনার জন্ম দিয়েছেন এমপি শাজাহান খানের বড় ছেলে আসিবুর রহমান খান এবং চাচাতো ভাই পাভেলুর রহমান খান। দলীয় প্রতীক না থাকায় নেতাকর্মী, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও এলাকাবাসীর অনুরোধে ছেলেকে প্রার্থী করা হয়েছে বলে দাবি এমপি শাজাহান খানের। তিনি বলেন, জনপ্রিয়তা থাকলে প্রার্থী হওয়া কোনো দোষের না। তবে আমার তরফ থেকে কোনো বিষয়ে হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে না, হবেও না।

দীর্ঘদিন ধরেই জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগ দুই ভাগে বিভক্ত। একটি পক্ষ শাজাহান খানের অনুসারী, অন্যটি দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিমের অনুসারী। শাজাহান খানের চাচাতো ভাই শফিক খান বাহাউদ্দিন নাছিমের অনুসারী। তবে শেষ দুটি নির্বাচনে তিনি শাজাহান খানের সমর্থন নিয়েই উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন। বিভিন্ন কারণে তাদের দূরত্ব তৈরি হয়। তাই বিপরীতমুখী অবস্থান নিয়েছেন চাচাতো ভাই শফিক খান।

সদর উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি সৈয়দ সাখাওয়াত হোসেন সেলিম জানান, দল প্রতীক দেয়নি, তাই এখানে দলের পক্ষ থেকে কাউকে সমর্থন করার সুযোগ নেই। যারা দলের বড় পদে আছে, তাদের কোনো প্রার্থীকে সমর্থন না করার নির্দেশনা রয়েছে। কয়েক মাস আগে জনপ্রতিনিধি ও দলের প্রতিটি অঙ্গ সংগঠন থেকে ১০ জন করে প্রতিনিধি নিয়ে একটি সভা হয়। সেখানে আসিফ খানকে প্রার্থী করার বিষয়ে অনুরোধ করেন। যারা দলের প্রার্থী বলে দাবি করেন, তারা বানোয়াট ও মিথ্যা প্রচার করে দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গ করছে।

মাদারীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজল কৃষ্ণ দে বলেন, সবার সম্মিলিত সিদ্ধান্তে জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক পাভেলুর রহমান শফিক খানকে সমর্থন দেওয়া হয়েছে। এমপির ছেলে প্রার্থী হওয়াটা তাদের পারিবারিক সিদ্ধান্ত।

নরসিংদীতে এমপির শ্যালক চেয়ারম্যান প্রার্থী 
নরসিংদী ও পলাশ প্রতিনিধি জানান, নরসিংদী-২ (পলাশ) আসনের এমপি ডা. আনোয়ারুল আশরাফ খান দিলিপের শ্যালক ঘোড়াশাল পৌরসভার সাবেক মেয়র ও পৌর আওয়ামী লীগ সভাপতি শরিফুল হককে দলীয় প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। এমপির এ ঘোষণায় ক্ষুব্ধ হয়েছেন বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুবলীগ সভাপতি সৈয়দ জাবেদ হোসেন। এমপির বিরুদ্ধে দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থি কর্মকাণ্ডের অভিযোগে দলের কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে লিখিত অভিযোগও করেছেন তিনি। সৈয়দ জাবেদ হোসেন জানান, এমপি প্রভাব খাটিয়ে শ্যালক শরীফুল হককে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী করেছেন। তাঁর সঙ্গে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কামরুল ইসলাম গাজী ও এমপির আপন ভাগনে ঘোড়াশাল পৌরসভার মেয়র ও উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আল মুজাহিদ হোসেন তুষার নেতাকর্মীকে ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন। অনেক নেতাকর্মীই তাদের ভয়ে মুখ খুলতে পারছেন না।

মুন্সীগঞ্জে এমপির চাপে মনোনয়নপত্র জমা না দেওয়ার অভিযোগ 
মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, মুন্সীগঞ্জ-৩ আসনের এমপি মোহাম্মদ ফয়সাল বিপ্লব ও তাঁর পরিবারের চাপে সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র জমা দেননি বলে অভিযোগ করেছেন উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আফসারউদ্দিন ভুইয়া। তাঁর দাবি, জনগণের সমর্থন ছিল; কিন্তু প্রার্থী না হতে তাঁকে নানামুখী চাপ দেওয়া হয়েছে। ফলে অসুস্থ হয়ে পড়ায় আর মনোনয়নপত্র জমা দেননি।

এ উপজেলায় মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া একমাত্র প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান আনিছুজ্জামান আনিছ। তিনি সম্পর্কে এমপির আপন চাচা।
অভিযোগ প্রসঙ্গে এমপি ফয়সাল বিপ্লব বলেন, ‘এখানে চাপ সৃষ্টি করার কিছু নেই। আফসারউদ্দিন ভুইয়ার অভিযোগ সঠিক নয়। মনোনয়নপত্র দাখিল করা-না করা যার যার ব্যক্তিগত বিষয়।’

সূত্র বলছে, আপন চাচার বিপক্ষে অবস্থান না নিতে পারিবারিকভাবে চাপ ছিল এমপির ওপর। তাই ঈদের আগমুহূর্তে আফসারউদ্দিন ভুইয়াকে সমর্থন না দিয়ে নিজেকে গুটিয়ে নেন এমপি ফয়সাল বিপ্লব।

তৃতীয় ধাপের তপশিল আজ
উপজেলা নির্বাচনের তৃতীয় ধাপের তপশিল হতে পারে আজ বুধবার। এ ধাপে শতাধিক উপজেলায় আগামী ২৯ মে ভোট হতে পারে বলে জানিয়েছে ইসি। প্রথম ধাপের তপশিল অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র দাখিল শেষ হয়েছে। তিনটি পদে ১ হাজার ৮৯১ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। আজ মনোনয়নপত্র বাছাই করা হবে। রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল বৃহস্পতি থেকে শনিবার। আপিল নিষ্পত্তি রোববার; প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় সোমবার। প্রতীক বরাদ্দ ২৩ এপ্রিল; ১৫০ উপজেলায় ভোট ৮ মে।

দ্বিতীয় ধাপের তপশিল অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র জমার শেষ সময় আগামী রোববার; মনোনয়নপত্র বাছাই ২৩ এপ্রিল; আপিল গ্রহণ ২৪ থেকে ২৬ এপ্রিল; আপিল নিষ্পত্তি ২৭ থেকে ২৯ এপ্রিল। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ৩০ এপ্রিল; প্রতীক বরাদ্দ ২ মে। ১৬১ উপজেলায় ভোট ২১ মে।
চার ধাপের উপজেলা নির্বাচনের পরবর্তী দুই ধাপের ভোট ২৯ মে ও ৫ জুন অনুষ্ঠিত হতে পারে। ইসি সচিব মো. জাহাংগীর আলম জানান, উপজেলা নির্বাচনের মনোনয়নপত্র অনলাইনেই দাখিল করতে হবে। জামানতের টাকাও মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে জমা দিতে পারবেন প্রার্থীরা। কাজেই সম্পূর্ণ প্রক্রিয়া হবে অনলাইনে।

সমকাল

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here