সুপ্রিম কোর্ট বারের পুনর্নির্বাচন দাবি নতুন সভাপতি খোকনের

সুপ্রিম কোর্ট বারের পুনর্নির্বাচন দাবি নতুন সভাপতি খোকনের 

ষড়যন্ত্র, জালিয়াতি ও কারচুপির অভিযোগ এনে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির পুনর্নির্বাচন চেয়েছেন নবনির্বাচিত সভাপতি ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন। বিএনপিপন্থি প্যানেলের এ নেতা দাবি করেছেন, নির্বাচনে ভোট জালিয়াতি ও কারচুপির ঘটনা ঘটেছে। বর্তমান সরকার ও আওয়ামী লীগের যৌথ ষড়যন্ত্রের কারণে এ অনাকাঙ্ক্ষিত ও ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

তবে সভাপতির এ অভিযোগ নাকচ করে দিয়েছেন নবনির্বাচিত সম্পাদক শাহ মঞ্জুরুল হক। আওয়ামী লীগপন্থি প্যানেলের এ নেতা বলেছেন, এটা তাদের দলীয় ‘স্টান্টবাজি’। তিনি বলেন, এ  ধরনের অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।

সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পরদিন রোববার নবনির্বাচিত সভাপতি ও সম্পাদক সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।

বিএনপিদলীয় সম্পাদক প্রার্থী ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজলের অবিলম্বে মুক্তি চেয়ে ব্যারিস্টার খোকন বলেন, সরকার প্রতিহিংসাপরায়ণবশত মিথ্যা মামলা দিয়ে ব্যারিস্টার কাজলকে গ্রেপ্তার করেছে। তিনি বলেন, নির্বাচনে অনেক ষড়যন্ত্র হয়েছে, ভোট কারচুপি হয়েছে। সুষ্ঠু নির্বাচন হলে তাদের পূর্ণ প্যানেল বিজয়ী হতো।

জবাবে শাহ মঞ্জুরুল হক বলেন, নির্বাচনের পরদিনও ব্যারিস্টার খোকন বলেছেন, নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হয়েছে। এখন তাঁর এ দাবি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

সুপ্রিম কোর্ট বারের সাবেক সভাপতি ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ সমকালকে বলেছেন, দীর্ঘদিনের ঐতিহ্য অনুযায়ী বারে যেভাবে নির্বাচন হওয়ার কথা, সেভাবে এবার হয়নি।

এদিকে নির্বাচনে বিএনপি থেকে সম্পাদক প্রার্থী ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজলের চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। গতকাল তাঁকে আদালতে হাজির করে তদন্ত কর্মকর্তা রিমান্ড চাইলে তা মঞ্জুর করেন ঢাকা মহানগর হাকিম নুরুল হুদা চৌধুরী।

শুনানি চলাকালে ব্যারিস্টার কাজল বলেন, আইন পেশার পাশাপাশি আইনজীবীদের নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য নিজেকে উৎসর্গ করেছি। তিনি বলেন, ২০২০ সালে আমি প্রথম সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবীদের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করি এবং সর্বোচ্চ ভোট পেয়ে পাস করি। ব্যারিস্টার কাজল আরও বলেন, ২০২০ সালে আমি যার সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলাম, তিনি হলেন শাহ মঞ্জুরুল হক। দুর্ভাগ্যজনকভাবে এবার শাহ মঞ্জুরুলকে ভোটের মাধ্যমে নয়, অন্য কোনোভাবে বিজয়ী ঘোষণা করার জন্য সব নাটক সাজানো হয়েছে। আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। আমাকে মিথ্যা মামলা দিয়ে গ্রেপ্তার করে রাখা হয়েছে। পৃথিবীর এমন কোনো সভ্য দেশ নেই, যেখানে মিথ্যা মামলা দিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীকে ঘায়েল করে ফলাফল ঘোষণা করা হয়।

নির্বাচনের ভোট গণনাকে কেন্দ্র করে হামলা ও সহিংসতার মামলায় ব্যারিস্টার কাজলসহ ছয় আইনজীবীকে রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। তবে  মামলার প্রধান আসামি যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশের স্ত্রী আইনজীবী নাহিদ সুলতানা যূথীকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।

গত বুধ ও বৃহস্পতিবার শান্তিপূর্ণভাবে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। তবে ভোট গণনা নিয়ে বিরোধ শুরু হয়। এক পর্যায়ে শুক্রবার ভোরে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে মারধর, হট্টগোল, বাদানুবাদ ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।

এ ব্যাপারে শাহবাগ থানায় শুক্রবার সম্পাদক প্রার্থী যূথী, ব্যারিস্টার কাজলসহ ২০ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেন হামলায় আহত সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল সিদ্দিকী সাইফ। ওই মামলায় হত্যাচেষ্টা ও ভাঙচুরের অভিযোগ আনা হয়। মামলায় আরও অর্ধশতাধিক আইনজীবীকে আসামি করা হয়েছে। মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ১ নম্বর আসামি যূথীর নির্দেশে এবং প্রত্যক্ষ নেতৃত্বে মারধর করা হয়।

সমকাল