সুইস ব্যাংক থেকে ৯৪ শতাংশ আমানত তুলে নিয়েছে বাংলাদেশিরা

 নিজস্ব প্রতিবেদক

সংগৃহীত ছবি
সুইজারল্যান্ডের বিভিন্ন ব্যাংকে মাত্র এক বছরের ব্যবধানে বাংলাদেশিদের আমানত ৯৪ শতাংশ কমেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সুইজারল্যান্ডের কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুইস ন্যাশনাল ব্যাংকের (এসএনবি) বার্ষিক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে। সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশিদের আমানত কমার তথ্য এমন একসময় এলো, যখন দেশে অর্থপাচারের বিষয়টি নতুন করে আলোচনায় এসেছে।

২০২১ সাল শেষে সুইজারল্যান্ডের বিভিন্ন ব্যাংকে বাংলাদেশিদের জমা হওয়া অর্থের পরিমাণ ছিল ৮৭ কোটি ১১ লাখ সুইস ফ্রাঁ।

২০২২ সালে তা কমে প্রায় পাঁচ কোটি ৫৩ লাখ সুইস ফ্রাঁতে দাঁড়িয়েছে। অর্থাৎ বাংলাদেশিদের আমানত কমেছে প্রায় ৮২ কোটি সুইস ফ্রাঁ। বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রতি সুইস ফ্রাঁর বিনিময় মূল্য প্রায় ১২১ টাকা ধরলে পাঁচ কোটি ৫৩ লাখ সুইস ফ্রাঁ প্রায় ৬৬৯ কোটি টাকা দাঁড়াবে। 

সুইজারল্যান্ডের কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিভিন্ন দেশ থেকে জমা হওয়া অর্থ সে দেশের দায় হিসেবে আর্থিক প্রতিবেদনে উল্লেখ করে থাকে।

সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশিদের অর্থ জমা হয় ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামে। অর্থনীতিবিদদের ধারণা, দেশে ডলারসংকটের কারণে সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশিদের আমানত কমেছে। অনেক প্রতিষ্ঠান হয়তো ডলারসংকট সামাল দিতে সুইস ব্যাংক থেকে অর্থ তুলে নিয়েছে। আবার অনেক প্রতিষ্ঠান হয়তো সুইস ব্যাংকে টাকা জমা রাখার সক্ষমতা হারিয়েছে।
 

২০০০ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত ২২ বছরে সুইজারল্যান্ডের ব্যাংকে বাংলাদেশিদের সবচেয়ে কম অর্থ ছিল ২০০৩ সালে। ওই বছর দেশটির ব্যাংকে বাংলাদেশিদের জমা অর্থের পরিমাণ ছিল মাত্র আড়াই কোটি সুইস ফ্রাঁ। আর সবচেয়ে বেশি আমানত ছিল ২০২১ সালে। ওই বছর বাংলাদেশিদের আমানত ৮৭ কোটি সুইস ফ্রাঁ ছাড়িয়েছিল।

সুইস ব্যাংকে শুধু বাংলাদেশি নয়, ভারত, পাকিস্তান, যুক্তরাষ্ট্র, চীন, রাশিয়া, সিঙ্গাপুর, সৌদি আরবের আমানতও কমেছে।

 

২০২১ সালে সুইস ব্যাংকে ভারতীয়দের জমা অর্থের পরিমাণ ছিল প্রায় ৩৮৩ কোটি সুইস ফ্রাঁ। ২০২২ সালে তা কমে ৩৪০ কোটি সুইস ফ্রাঁতে দাঁড়িয়েছে। তা গত বছর কমে ৩৯ কোটি সুইস ফ্রাঁতে নেমেছে। সৌদি আরবের আমানতও এত বছরে প্রায় অর্ধেক হয়েছে।

সুইজারল্যান্ডে আমানত কমেছে রাশিয়ার। গত এক বছরে সুইস ব্যাংকে রাশিয়ার জমা অর্থের পরিমাণ কমেছে সাড়ে ২৮ শতাংশ।