সীমান্তে হত্যা বন্ধে সরকার ব্যর্থ: এবি পার্টি

ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে বিজিবির এক সৈনিকের মৃত্যুর প্রতিবাদ, বারবার সীমান্তে হত্যাকাণ্ড ও সরকারের ‘নতজানু’ পররাষ্ট্রনীতির বিরুদ্ধে এবি পার্টির সংবাদ সম্মেলন
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে বিজিবির এক সৈনিকের মৃত্যুর প্রতিবাদ, বারবার সীমান্তে হত্যাকাণ্ড ও সরকারের ‘নতজানু’ পররাষ্ট্রনীতির বিরুদ্ধে এবি পার্টির সংবাদ সম্মেলনছবি: সংগৃহীত

সীমান্তে হত্যারোধে সরকার ক্রমান্বয়ে ব্যর্থ বলে অভিযোগ করেছেন আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির যুগ্ম সদস্যসচিব আসাদুজ্জামান ফুয়াদ। তিনি বলেন, জনগণের প্রত্যাখ্যাত সরকারের নতজানু পররাষ্ট্রনীতি দেশের কোটি কোটি মানুষকে সীমান্তে ফেলানীর মতো কাঁটাতারে ঝুলিয়ে রাখবে।

আজ বুধবার বিকেলে রাজধানীর বিজয়নগরে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এমন অভিযোগ করেন। ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে বিজিবির এক সৈনিকের মৃত্যুর প্রতিবাদ, বারবার সীমান্তে হত্যাকাণ্ড ও সরকারের ‘নতজানু’ পররাষ্ট্রনীতির বিরুদ্ধে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে এবি পার্টি।

সংবাদ সম্মেলনে আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেন, পৃথিবীর অন্য কোনো সীমান্তে এত পরিমাণ বেসামরিক নাগরিক খুন হওয়ার নজির নেই। ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে বিভিন্ন মাত্রায় প্রায়ই যুদ্ধ হয়। দুই পক্ষের সামরিক বাহিনীর সদস্যরা নিহত হন। কিন্তু বেসামরিক নাগরিক খুন হওয়ার ঘটনা সেখানে নেই বললেই চলে।

বিভিন্ন দেশের সীমান্তের উদাহরণ টেনে আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেন, ‘ভারত-চীন সীমান্তে কোনো বেসামরিক নাগরিকের গায়ে হাত দেওয়ার সাহস কোনো পক্ষই করে না। ইরান-আফগানিস্তান বা পাকিস্তান সীমান্ত দিয়ে প্রচুর মাদক পাচার হয়ে থাকে। কিন্তু হরহামেশাই বেসামরিক নাগরিককে গুলি করে হত্যার ঘটনা সেখানে শোনা যায় না। এমনকি নেপাল, ভুটান সীমান্তেও কোনো নাগরিককে হত্যার কথা আমরা শুনিনি।’

আসাদুজ্জামান ফুয়াদ ক্ষোভ ও দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, শুধু বাংলাদেশ সীমান্তই মানুষের রক্ত, লাশ আর খুনের সীমান্ত। বিএসএফের ‘দেখামাত্র গুলি’র নীতিই আজকের হাজার হাজার বেসামরিক লোকের হত্যার কারণ।

ভারতের বিদেশ আইনের বিধি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ওই আইনে অবৈধভাবে তাদের দেশে প্রবেশের শাস্তি রাখা হয়েছে পাঁচ বছরের জেল ও জরিমানা। অথচ আইনের চরম লঙ্ঘন করে সেখানে বাংলাদেশের নাগরিকদের প্রায়ই নির্মমভাবে গুলি করে মারা হয়।

দলের যুগ্ম সদস্যসচিব আরও বলেন, গত ৫০ বছরে যে কয়েক হাজার বাংলাদেশি নাগরিককে বিএসএফ হত্যা করেছে, তাদের অধিকাংশই গরু ব্যবসায়ী এবং সীমান্তবর্তী অঞ্চলের কৃষক ও বাসিন্দা। বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের অনেকগুলো রাজ্যের সীমান্ত থাকলেও অধিকাংশ খুন হচ্ছে বাংলাদেশের পশ্চিম সীমান্তে; পশ্চিম বাংলার সঙ্গে। লালমনিরহাট, চুয়াডাঙ্গা, যশোর, চাঁপাইনবাবগঞ্জসহ জেলার সীমান্তবর্তী অঞ্চলের বাসিন্দারা প্রতিনিয়তই মৃত্যুভয় নিয়ে বেঁচে থাকেন।

সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে দলের সদস্যসচিব মজিবুর রহমান বলেন, একটা অবৈধ সরকার যখন জনগণের ম্যান্ডেট ছাড়া ১৫ বছর ধরে জোর করে ক্ষমতায় থাকে, তখন একটি স্বাধীন, মর্যাদাপূর্ণ স্বকীয় পররাষ্ট্রনীতি প্রণয়নের মনোবল ও যোগ্যতা তাদের থাকে না। আওয়ামী লীগ সরকারের নতজানু, অক্ষম, পরনির্ভরশীল পররাষ্ট্রনীতির কারণে প্রতিনিয়ত দেশের কোটি কোটি মানুষ সীমান্তে হতভাগ্য ফেলানীর মতো কাঁটাতারে ঝোলার অপেক্ষায় আছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে এবি পার্টির সহকারী সদস্যসচিব নাসরিন সুলতানার সঞ্চালনায় দলের যুগ্ম আহ্বায়ক বি এম নাজমুল হক, যুগ্ম সদস্যসচিব যোবায়ের আহমেদ ভুইয়া, দপ্তর সম্পাদক আবদুল্লাহ আল মামুন, প্রচার সম্পাদক আনোয়ার সাদাত প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

প্রথম আলো