- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ০২ অক্টোবর ২০২২, ২২:১৯
প্রিমিয়ার লিগের বড় দলের ম্যাচ মানেই তুমুল উত্তেজনা। আর তা যদি হয় ম্যানচেস্টার ডার্বি তাহলে তো পলক ফেলাও বারণ। সর্বশেষ ৫ দেখায় দুই দলই ছিল সমান অবস্থানে। দুই দলেরই জয় ছিল দুটি করে। তবে শেষ দেখায় ম্যানচেস্টার ইউনাটেডকে ৪-১ গোলে হারিয়েছিল ম্যানচেস্টার সিটি। এবারো সেই ধারা বজায় রাখলো দলটি। ঘরের মাঠে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডকে ৬-৩ গোলের বড় ব্যবধানেই হারিয়েছে পেপ গার্দিওয়ালার শিষ্যরা।
বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৭টায় ইতিহাদ স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হয় ম্যানচেস্টার সিটি ও ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। ম্যাচের শুরু থেকেই ইউনাইটেডের ওপর চড়াও হতে থাকে ম্যানচেস্টার সিটি। তাই গোল পেতে খুব বেশি সময় লাগেনি। ম্যাচের ৮ মিনিটে সিটিকে লিড এনে দেন ইংলিশ ইয়ংস্টার ফিল ফোডেন। ইউনাইটেডকে ম্যাচে ফেরার সুযোগই দেয়নি গার্দিওয়ালার দল। ম্যাচের ৩৪ মিনিটে সিটির হয়ে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন এর্লিং হালান্ড। এর ৩ মিনিট পরেই আবারো গোল করে নিজের জোড়া গোল পূর্ণ করেন নরওয়ের এই সুপারস্টার। ম্যাচের ৪০ মিনিটেই স্কোরলাইন দাঁড়ায় ৩-০ তে।
ইউনাইটেডের ডিফেন্স লাইনও তখন পুরোপুরিই খেই হারিয়ে ফেলেছে। বাধ্য হয়ে প্রথমার্ধেই সাবস্টিটিউট করান কোচ এরিক টেন হাগ। রাফায়েল ভারানের বদলে মাঠে নামেন ভিক্টর লিন্ডেলফ। সাবস্টিটিউট দেখা যায় সিটির শিবিরেও। কাইল ওয়াকার ইঞ্জুরির কারণে মাঠ ছাড়লে বদলি হিসেবে নামেন সার্জিও গোমেজ। প্রথমার্ধের একদম শেষ দিকে ফিল ফোডেন গোল করলে প্রথমার্ধেই গোল খাওয়ার হালি পূর্ণ করে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। ম্যাচ মূলত সেখানেই শেষ।
প্রথমার্ধ শেষ হওয়ার সাথে সাথেই অনেক ইউনাইটেড সমর্থককে মাঠ ছাড়তে দেখা যায়। দ্বিতীয়ার্ধেই শুরুতেই এরিকসনের এসিস্টে ইউনাইটেডের হয়ে গোল করেন এন্টনিও। দ্বিতীয়ার্ধেও আক্রমণ চালাতে থাকে ম্যানচেস্টার সিটি। ম্যাচের ৬৪ মিনিটে সার্জিও গোমেজের এসিস্ট থেকে গোল করে হ্যাট্রিক পূর্ণ করেন হালান্ড। হালান্ডের এই দূরন্ত ফর্ম যেন প্রিমিয়ার লিগের অন্যান্য দলগুলোর জন্য বিপজ্জনক হয়ে উঠছে। শুরুতে তাকে নিয়ে কিছুটা সংশয় থাকলেও দিনে দিনে আরো ভয়ানক হয়ে উঠছেন তিনি। নিজেকে প্রমাণ করে সক্ষমতার পরিচয় দিচ্ছেন, প্রতিনিয়ত। হয়ে উঠছেন সিটির গোলমেশিন।
গোল হজম করার পরে গোল শোধ করার বেশ কিছু সুযোগ তৈরি করেন ব্রুনো ফার্নান্দেজ ও এন্টনিও। কিন্তু সেগুলোকে গোলে রুপান্তর করতে বারবারই ব্যর্থ হয় ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। ৭২ মিনিটে আবারো স্কোরবোর্ডে নিজের নাম তোলেন ফিল ফিল ফোডেন। হালান্ডের এসিস্টে গোল করে তিনিও হ্যাট্রিক পূর্ণ করেন। স্কোরবোর্ডে তখন ৬-১। ইউনাইটেডের সামনে লজ্জাজনক পরাজয়ের শঙ্কা। এরপর ম্যাচের ৮৪ মিনিটে ইউনাইটেডের হয়ে গোল করেন এন্থনি মার্শিয়াল। ইউনাইটেড তখনো গোলখরায় রীতিমতো ধুঁকছে। ম্যাচের ৯০ মিনিটে সিটির ক্যান্সেলো মার্শিয়ালের এ্যাঙ্কেলে ট্যাকল করলে পেনাল্টি পায় ইউনাইটেড। পেনাল্টি থেকে গোল করে ব্যবধান কমান এন্থনি মার্শিয়াল। ম্যাচ শেষে স্কোরলাইন দাঁড়ায় ৬-৩। ম্যানচেস্টার ডার্বি জিতে নেয় ম্যানচেস্টার সিটি।
এই ম্যাচ জিতে ৮ ম্যাচে ২০ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট টেবিলের দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ম্যানচেস্টার সিটি। অন্যদিকে ৭ ম্যাচে ১২ পয়েন্ট নিয়ে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড রয়েছে পয়েন্ট টেবিলের ৬ নম্বর অবস্থানে।
লিগে সিটির পরবর্তী প্রতিপক্ষ সাউদাম্পটন,অন্যদিকে ইউনাইটেডের প্রতিপক্ষ এভারটন। সামনের গেমউইকে সিটি চাইবে আর্সেনালকে টপকে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষস্থান দখল করতে, অন্যদিকে ইউনাইটেডের লক্ষ্য টপ ৪ নিশ্চিত করা। কে কতটুকু সফল হয়, সেটা দেখতে হলে ফুটবলপ্রেমীদের নেক্সট গেমউইক অবধি অপেক্ষা করা ছাড়া আর কোনো উপায় যে নেই।