সাহস থাকলে ভোটারদের ভোট দিতে দেন : জাহাঙ্গীর

Daily Nayadiganta


আওয়ামী লীগ প্রার্থী হাবিব হাসানকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে ঢাকা-১৮ আসনের উপনির্বাচনে বিএনপি প্রার্থী এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন বলেছেন, সাহস করে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করেন। একবার হলেও আপনাদের (আওয়ামী লীগের) জনপ্রিয়তা যাচাই করেন।

বৃহস্পতিবার গণসংযোগ শেষে উত্তরা-১০ নম্বর সেক্টরের সুইচ গেইট এলাকায় শহীদ মনসুর আলী কলেজ ও হাসপাতালের সামনে সংক্ষিপ্ত পথসভায় বক্তব্যকালে এ চ্যালেঞ্জ দেন তিনি।

জাহাঙ্গীর বলেন, যতই সন্ত্রাস করেন ঢাকা-১৮ আসনের ভোটাররা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তারা ভোট কেন্দ্রে যাবেন।

তিনি বলেন, আগামী ১২ নভেম্বর ঢাকা-১৮ আসনের ভোট। আপনারা সারাদেশে অনেক নির্বাচন এই সরকারের আমলে দেখেছেন। এই সরকারের জনগণের কোনো আস্থা নেই, বিশ্বাস নেই। জনগণকে তারা ভোট কেন্দ্রে আসতে দেয় না। আগামী ১২ নভেম্বর জনগণ সিদ্ধান্ত নিয়ে তারা ভোট কেন্দ্রে যাবেন। আওয়ামী লীগকে বলব, আপনারা যতই সন্ত্রাস করেন ১২ নভেম্বর জনগণ ভোট কেন্দ্রে যাবে এবং ধানের শীষের ভোট দেবন। জনগণ ধানের শীষকে বিজয়ী করে দেশনেত্রী গণতন্ত্রের মাতা খালেদা জিয়ার বিজয় শুরু করবে।

ধানের শীষের এ প্রার্থী বলেন, আমরা যেখানেই গণসংযোগে নামি, সেখানেই হাজার হাজার জনতা আমাদের সাথে নেমে এসেছে। এটা কিসের আলামত? এই সরকারকে যে মানুষ চায় না, তারই আলামত। ঢাকা ১৮ আসনের জনগণ শেখ হাসিনাকে আর দেখতে চায় না। আমাদের প্রতিপক্ষ আওয়ামী লীগের প্রার্থী, তিনি তার বক্তব্যে অনেক আজে-বাজে কথা বলেন। আমি শুধু আওয়ামী লীগ প্রার্থীকে মনে করিয়ে দিতে চাই,আপনার নেত্রী, এই এলাকার জনগণ যা কিছু বলে সেগুলো কান পেতে শুনে নিয়েন। আমি আপনার সম্পর্কে কিছু বলতে চাই না। শুধু বলতে চাই, অতীতে যত চুরি করেছেন, জনগণের মধ্যে আপনার ও আপনার দল এবং সরকারের অবস্থান বুঝতে পারার জন্য বুকে যদি সাহস থাকে তাহলে গণতান্ত্রিক উপায়ে মানুষের ভোটাধিকার প্রয়োগ করার সুযোগ দিয়ে দেখেন। আপনাদের অনৈতিক কর্মফল মূল্যায়ন ও আপনাদের জনপ্রিয়তা যাচাইয়ের জন্য হলেও ঢাকা-১৮ আসনের উপনির্বাচন সুষ্ঠু করেন।

পুলিশ প্রশাসনের উদ্দেশ্যে জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, আমরা আশা করি, ভোটের মাঠে সবাইকে সমান সুযোগ দিবেন। আমাদের নেতাকর্মীদের বিনা কারণে ডিস্টার্ব করবেন না। এই আসনের আমাদের কোনো নেতাকর্মীর নামে ওয়ারেন্ট নেই। অপনারা যখন তখন যার বাসায় হানা দেন, মামলা দিবেন এখান থেকে প্রশাসনকে ফিরে আসতে আহ্বান জানাচ্ছি। আমি বিশ্বাস করি পুলিশেও অনেক ভালো লোক আছে। যারা বিবেকবান তারা বিবেক দিয়ে গণতন্ত্র, জনগণের ভোটাধিকার ও দেশের স্বাধীনতা রক্ষার জন্য কাজ করবেন।

তিনি বলেন, আমরা যেখানে কর্মসূচি দেই আওয়ামী লীগ সেখানেই পাল্টা কর্মসূচি দেয়। তারা গায়ে পড়ে ঝগড়া করতে চায়। আমাদের দেশ নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও দেশ নায়েক তারেক রহমানের নির্দেশ কোনো রকম ঝামেলায় জড়ানো যাবে না। তার মানে ধৈর্য ধরছি, আমরা দুর্বল না।

গতকাল বুধবার বিকালে নির্বাচন কমিশনের সাথে বৈঠক করা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা বৈঠকে করে বলে এসেছি, আপনারা যদি আমাদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হন, আপনারা যদি আমাদের ভোটাদের কাছে যেতে না পারি, তাহলে কিন্তু ঢাকা-১৮ আসনের নেতাকর্মী ও জনগণকে সাথে নিয়ে নির্বাচন কমিশনে গিয়ে বসে থাকব। বিদায় বেলায় একটা সুষ্ঠু নির্বাচন করতে পারেন তার প্রমাণ দিয়ে যান।

দেশে বর্তমান ধর্ষণ-নারী নির্যাতন, সন্ত্রাস ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে এবং খালেদা জিয়ার মুক্তি ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের চলমান আন্দোলন প্রসঙ্গ টেনে জাহাঙ্গীর বলেন, এই নির্বাচন সুষ্ঠু না হলে চলমান আন্দোলন সরকার পতনের আন্দোলনে রূপ নেবে।

বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা থেকে উত্তরার ১০ নম্বর সেক্টরের ১০, ১১, ১২ সড়কসহ ওয়েস্টার্ন ল্যাবরেটরী, কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ, টাচস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ এলাকায় গণসংযোগ করেন। এ সময় এস এম জাহাঙ্গীরের সাথে ছিলেন চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, ঢাকা সিটি নির্বাচনে অংশ নেয়া বিএনপি দলীয় মেয়রপ্রার্থী তাবিথ আউয়াল, ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি রাজীব আহসান, স্বেচ্ছাসেবক দলের ফখরুল ইসলাম রবিনসহ স্থানীয় নেতাকর্মীদের অংশগ্রহণে গণসংযোগে জনতার ঢল নামে।