- চট্টগ্রাম ব্যুরো
- ১৫ মে ২০২১
সাবেক জাতীয় সংসদ সদস্য (এমপি) ও চট্টগ্রাম মহানগর জামায়াত ইসলামীর নায়েবে আমির শাহজাহান চৌধুরীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শুক্রবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে সাতকানিয়া পৌরসভার ছমদর পাড়ার নিজ বাড়ি থেকে তাকে পুলিশ গ্রেফতার করে। শনিবার নয়া দিগন্তকে এ তথ্য জানিয়েছেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা জামায়াতের আমির জাফর সাদেক।
সাবেক এমপি শাহজাহান চৌধুরী চট্টগ্রাম মহানগর জামায়াতের নায়েবে আমির ও কেন্দ্রীয় জামায়াতের মজলিশে শূরা সদস্য। কোন মামলায় পুলিশ তাকে গ্রেফতার করেছে তা জানেন না চট্টগ্রামের জামায়াত নেতারা।
সাতকানিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো: আনোয়ার হোসেনও তাৎক্ষণিকভাবে জানাতে পারেননি যে কোন মামলায় জামায়াত নেতা শাহজাহান চৌধুরীকে গ্রেফতার দেখানো হবে।
জামায়াতের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য, চট্টগ্রাম মহানগরী শাখার নায়েবে আমির ও সাবেক এমপি শাহজাহান চৌধুরীকে অন্যায়ভাবে গ্রেফতারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার।
শনিবার এক বিবৃতি জামায়াত সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, পবিত্র ঈদুল ফিতরের দিবাগত রাত ৩টার দিকে সাতকানিয়া পৌরসভার ছমদর পাড়ার নিজ বাড়ি থেকে জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির, সাবেক এমপি ও গণমানুষের নেতা শাহজাহান চৌধুরীকে পুলিশ অন্যায়ভাবে গ্রেফতার করেছে। তার বিরুদ্ধে কোনো গ্রেফতারি পরোয়ানা ছিল না। ইতোপূর্বে তার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত সকল রাজনৈতিক মামলায় তিনি জামিনে মুক্ত রয়েছেন। পবিত্র ঈদের দিন মানুষ পরিবার, স্বজন ও প্রতিবেশী সকলকে নিয়ে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করে থাকে। মুসলমানদের ঘরে ঘরে এক উৎসবমুখর ও আনন্দঘন পরিবেশ বিরাজ করে। মুসলমানরা ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করে ভ্রাতৃত্বের বন্ধনকে আরো সুদৃঢ় করার সুযোগ লাভ করে। এটা আবহমান বাংলার মুসলিম সংস্কৃতিরই এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এমনই এক পরিবেশে সরকার সাবেক এমপি ও সর্বস্তরের মানুষের নেতা শাহজাহান চৌধুরীকে গ্রেফতার করেছে। এ গ্রেফতারের মাধ্যমে সরকারের ইসলামী সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য ধ্বংসের চিত্র ফুটে উঠল। আমি সরকারের এই অন্যায় গ্রেফতারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
বিবৃতিতে আরো বলা হয়, পবিত্র রমজান মাসে এমনকি পবিত্র ঈদের দিনেও পুলিশ গ্রেফতার অভিযান পরিচালনা করে ইসলামী সংস্কৃতি ধ্বংসের কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। আমরা স্পষ্টভাবে বলতে চাই, রমজান, ঈদ, তারাবি নামাজ থেকে রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের গ্রেফতারের পরিণতি কখনো শুভ হবে না। এর কুফল সমাজে এক নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে, যা কারোর জন্যই কাম্য নয়।
বিবৃতিতে মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, রাষ্ট্রের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালনের পরিবর্তে সরকারের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। শাহজাহান চৌধুরীসহ সারাদেশে গ্রেফতারকৃত রাজনৈতিক সকল নেতাকর্মীকে অবিলম্বে মুক্তি দেয়ার জন্য আমি সংশ্লিষ্ট মহলের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।
অপর এক বিবৃতিতে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ও সাবেক এমপি মাওলানা আ ন ম শামসুল ইসলাম বলেন, ‘সরকার রমজানের শুরু থেকেই দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মী ও সাধারণ মুসুল্লিদের গ্রেফতার করে হয়রানি করছে। মুসলমানদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় অনুষ্ঠান পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপনের সময় শাহজাহান চৌধুরীকে গ্রেফতার করে সরকার প্রমাণ করেছে এ দেশের মানুষের ধর্ম পালনের অধিকারও নেই। আমি পুলিশের এই অন্যায় গ্রেফতারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি ও শাহজাহান চৌধুরীসহ গ্রেফতারকৃত নেতা-কর্মীদের অবিলম্বে মুক্তির দাবি জানাচ্ছি।