পাকিস্তান সিরিজ দিয়ে শুরু হবে বাংলাদেশ দলের ব্যস্ত টেস্ট মৌসুম। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে নাজমুল হোসেনরা ৮টি টেস্ট খেলবেন। ব্যস্ত সূচিকে সামনে রেখে গত ২৫ মে থেকেই সিলেট ও চট্টগ্রামে বিশেষ ক্যাম্প করে প্রস্তুতি নিয়েছেন টেস্ট দলের আশপাশে থাকা ক্রিকেটাররা। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ থেকে ফেরা ক্রিকেটারদের কয়েকজনও সে ক্যাম্পে যোগ দিয়েছেন।
সাকিব আল হাসান এ সময়টায় ব্যস্ত ছিলেন ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে। প্রথমে যুক্তরাষ্ট্রের মেজর লিগ টি-টোয়েন্টি ও পরে খেলেছেন কানাডায় গ্লোবাল টি-টোয়েন্টি লিগে। কানাডা থেকেই পাকিস্তানে দলের সঙ্গে যোগ দেওয়ার কথা সাকিবের। ফিটনেস ও লাল বলে অনুশীলন না থাকার পরও সাকিবকে পাকিস্তান সফরের দলে নেওয়ার পেছনে বেশ কিছু যুক্তি দিয়েছেন প্রধান নির্বাচক গাজী আশরাফ হোসেন।
আজ মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেছেন, ‘কিছু ব্যতিক্রম খেলোয়াড় তো থাকে। গ্লোবাল টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে আমাদের পারফরম্যান্সে উন্নতি করতে হলে বাইরের ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে খেলোয়াড়দের সুযোগ দিতে হবে। আমরা অনেককে এনওসি দিয়েছি। দুর্ভাগ্যবশত ভিসার কারণে সাইফউদ্দিন ও রিশাদ যেতে পারেনি। আর সব সময় আপনি সবাইকে অনুশীলনে পাবেন, সেটা সম্ভব হবে না। তাদের ব্যস্ততা ক্রিকেট নিয়েই ছিল।’
আরেক প্রশ্নের উত্তরে গাজী আশরাফ হোসেন বলেছেন, ‘সে তার পারফরম্যান্সের আলোকেই যাচ্ছে। পারফরম্যান্স দিয়ে সাকিব নিজেকে যে জায়গায় নিয়ে যেতে পেরেছে, বিভিন্ন সংস্করণের ক্রিকেট, পাকিস্তানের বিপক্ষে তার রেকর্ড…সবকিছু মিলিয়েই যাচ্ছে।’ গত বছর থেকে চোখের সমস্যায় ভোগা সাকিবের ব্যাটিংয়ের ছন্দ নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। গাজী আশরাফ হোসেন অবশ্য সাকিবের অলরাউন্ড সামর্থ্যে আস্থা রাখছেন, ‘আমাদের চিকিৎসক দল থেকে এমন কিছু শুনিনি। বিশ্ব যেমন স্বীকার করছে, সে ওয়ান অব দ্য বেস্ট অলরাউন্ডার, গত ২৫ বছরে। আমি সেই মতামতের সঙ্গেই যাচ্ছি। শুধু বোলার হিসেবে ধরব, সেই দুঃসাহস আমার নেই।’
শুধু পাকিস্তান সিরিজ নয়, এ বছর বাংলাদেশ দলের ৮টি টেস্টই সাকিব খেলবেন বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচক। তাঁর কথা, ‘জিম্বাবুয়ে সিরিজের সময় তার কাছে আমরা সংক্ষিপ্ত পরিকল্পনা জানতে চেয়েছিলাম। আমাদের অনেকগুলো টেস্ট ম্যাচ আছে, ডিসেম্বর পর্যন্ত আটটা টেস্ট খেলব। সেখানে সে আমাদের আশ্বস্ত করেছে, সবগুলো টেস্ট খেলবে। প্রত্যেকটা সিরিজের আগে সব অনুশীলন সেশনে থাকবে।’
মাঠের ক্রিকেটের বাইরেও সাকিবকে নিয়ে আছে অন্য দুশ্চিন্তা। প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও সংসদও ভেঙে দেওয়ার পর আওয়ামী লীগের কোনো নেতা-কর্মীই এখন দেশে প্রকাশ্যে নেই। গত নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে মাগুরা-১ আসনের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়া সাকিবের নিরাপত্তা নিয়েও একটা শঙ্কা থাকে।
এ নিয়ে আজ প্রশ্নের মুখোমুখি হয়েছেন গাজী আশরাফ হোসেনও, ‘অনুশীলন সেশনে প্রত্যেকটা খেলোয়াড়, কোচের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়। এটা অবশ্যই পরিস্থিতির আলোকে দেশকে নিশ্চিত করতেই হবে। কারণ, সাকিব আল হাসান নিশ্চিতভাবেই দেশের শীর্ষ খেলোয়াড়। এখানে নির্বাচনের (দলে রাখা) ক্ষেত্রে অনেকে আমাকে প্রশ্ন করেছেন। কারণ, সে একজন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। আমরা সেটা নিয়ে ভেবেছি। কিন্তু তার নির্বাচনটা হয়েছে মেধার ভিত্তিতে। প্রত্যেকটা খেলোয়াড়ের ক্ষেত্রেই এটা হয়। আগামীতেও মেধাটাকেই গুরুত্ব দেব।’
prothom alo