- ২৪ ডেস্ক
দেশের ব্যাংকিং ও আর্থিক খাতকে লক্ষ্য করে বড় ধরনের সাইবার হামলার আশঙ্কায় সতর্কতা জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বুধবার (৩০ জুলাই) কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশনস টেকনোলজি (আইসিটি) বিভাগ থেকে এ বিষয়ে একটি চিঠি দেশের সব তফসিলি ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও ডিজিটাল পেমেন্ট সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠানো হয়।

চিঠিতে বলা হয়, দেশের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামো (ক্রিটিকাল ইনফরমেশন ইনফ্রাসট্রাকচার- সিআইআই), বিশেষ করে ব্যাংক, আর্থিক খাত, স্বাস্থ্যসেবা এবং সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো সাইবার হামলার ঝুঁকিতে রয়েছে। এ জন্য এখনই দ্রুত প্রতিরক্ষামূলক পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
সাইবার সুরক্ষা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ ব্যাংক মোট ১৪টি গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা দিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে:
১. সার্ভার, ডেটাবেজ ও আইটি সিস্টেম নিয়মিত আপডেট করা।
২. অপ্রয়োজনীয় পোর্ট বন্ধ এবং অনুমতিভিত্তিক অ্যাক্সেস নিশ্চিত করা।
৩. ৩-২-১ ব্যাকআপ কৌশল অনুসরণ করে ডেটার ব্যাকআপ ও রিস্টোর ব্যবস্থা রাখা।
৪. ডেটা এনক্রিপশন বাধ্যতামূলক করা।
৫. গুরুত্বপূর্ণ সব সিস্টেমে মাল্টি-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন (এমএফএ) চালু করা।
৬. নিরাপত্তা নজরদারির টুলস ও মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার করা।
৭. অ্যান্টিভাইরাস ও ইডিআর সফটওয়্যার হালনাগাদ রাখা ও কার্যকারিতা নিশ্চিত করা।
৮. ইনসিডেন্ট রেসপন্স টিম প্রস্তুত রাখা এবং রেসপন্স প্ল্যান তৈরি করা।
৯. সন্দেহজনক লগইন বা ফাইল পরিবর্তন মনিটর করে দ্রুত কর্তৃপক্ষকে জানানো।
১০. রিমোট এক্সেস ও প্রিভিলেজড অ্যাকাউন্টস নিয়মিত রিভিউ করা।
১১. সাইবার হামলার কোনো লক্ষণ দেখা গেলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ ও বাংলাদেশ ব্যাংককে অবহিত করা।
১২. ২৪ ঘণ্টা মনিটরিংয়ের জন্য উপযুক্ত জনবল নিশ্চিত করা।
১৩. লোড ব্যালেন্সার ও বিকল্প ব্যবস্থাসহ উচ্চ সক্ষমতা বজায় রাখা।
১৪. বিজনেস কনটিনিউটি প্ল্যান ও ডিজাস্টার রিকভারি প্ল্যান হালনাগাদ ও বাস্তবায়ন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের বক্তব্য অনুযায়ী, আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন উৎস থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী আগামী দিনগুলোতে সাইবার হামলার হুমকি বাড়তে পারে। আর্থিক খাতে যদি কোনো বড় ধরনের হামলা হয়, তাহলে তা দেশের অর্থনৈতিক ব্যবস্থার ওপর বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে।
বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, এসব পদক্ষেপের লক্ষ্য হলো— সম্ভাব্য সাইবার হামলার ঝুঁকি মোকাবিলা, ক্ষয়ক্ষতি হ্রাস এবং আর্থিক খাতের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা। দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে বড় ধরনের আর্থিক বিপর্যয়ের আশঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।