সরকার ক্ষমতা হারানোর ভয়ে বেপরোয়া: ফখরুল

logo

স্টাফ রিপোর্টার

(২০ ঘন্টা আগে) ২২ মে ২০২৩, সোমবার, ২:৩৩ অপরাহ্ন

সর্বশেষ আপডেট: ৯:৫৭ পূর্বাহ্ন

mzamin

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতা হারানোর ভয়ে এখন বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। তাদের ব্যর্থতা ঢাকতেই সরকার বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর জুলুন-নিপীড়ন চালাচ্ছে।

আজ সোমবার দুপুরে  গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে ফখরুল এসব কথা বলেন। গতরাতে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনুকে গোয়েন্দা পুলিশ তুলে নিয়ে গেছে দাবি করে এ ঘটনায় গভীর উদ্বেগ, তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে এই বিবৃতি দেন বিএনপি মহাসচিব।
মহাসচিব বলেন, একদলীয় দুঃশাসনের এক শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থায় গণতন্ত্র এখন মৃতপ্রায়। প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, মানুষের ক্রয়ক্ষমতা শূন্যের কাছাকাছি, জ্বালানির মূল্য বৃদ্ধির ফলে পরিবহন ভাড়াসহ জনজীবনে যে দুর্বিষহ অবস্থা বিরাজমান সেটি আড়াল করতেই সরকার আরও বেশি জুলুমের পথ বেছে নিয়েছে। গণতন্ত্রকামী মানুষ প্রতিনিয়ত নির্যাতন-নিপীড়নের শিকার হচ্ছেন। ক্ষমতা হারানোর ভয়ে সরকার বিএনপির জাতীয় নেতৃবৃন্দসহ তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে গ্রেপ্তার করতে এখন বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। সরকারের বিরুদ্ধে কোনো আওয়াজ উঠলেই তারা বেসামাল হয়ে পড়ে। ফলে দুঃশাসন আরও বেশি ভয়াবহ রূপ লাভ করেছে। গায়েবি মামলা, মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার, শান্তিপূর্ণ যেকোনো কর্মসূচির ওপর বেপরোয়া গুলিবর্ষণ করে বিএনপির নেতাকর্মীকে হত্যা ও অঙ্গহানি করার এক দানবীয় নীতি বাস্তবায়ন করছে অবৈধ শাসকগোষ্ঠী।

তিনি বলেন, দলীয় চেতনায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সাজিয়ে ‘প্রাইভেট বাহিনী’র’ ন্যায় ব্যবহার করা হচ্ছে। এরা আইনশৃঙ্খলার কাজে লিপ্ত না থেকে বিএনপিসহ বিরোধী দলের কর্মসূচির ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ছে।

সশস্ত্র দলীয় ক্যাডার এবং সাজানো পুলিশ প্রশাসন একযোগে নব্য নাৎসী বাহিনীর ন্যায় আচরণ করছে। চিন্তা ও মত প্রকাশের স্বাধীনতাসহ বিরোধী দলের গণতান্ত্রিক অধিকারকে রক্তাক্ত পন্থায় দমন করতে দ্বিধা করছে না তারা। দুঃশাসনের নিঃশব্দ পরিবেশ সৃষ্টি করতেই ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনুকে গতরাতে তার বাসা থেকে তুলে নিয়ে গেছে গোয়েন্দা পুলিশ।
ফখরুল বলেন, ‘উপযুক্ত আদালতের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ব্যতিরেকে রফিকুল আলম মজনুকে গ্রেপ্তার বা হয়রানি না করতে উচ্চ আদালতের নির্দেশনা সত্ত্বেও মজনুকে তুলে নিয়ে যাওয়া সম্পূর্ণরূপে উচ্চ আদালতের প্রতি অসম্মান জানানো। ক্ষমতাসীনরা আইন কানুনের কোনো তোয়াক্কা করে না। তারা রাষ্ট্রক্ষমতার জোরে একের পর এক বেআইনি কাজ করে সীমালঙ্ঘন করে যাচ্ছে। এই অগণতান্ত্রিক সরকার গণতন্ত্রের বিধি-বিধান নিয়ম-নীতি তোয়াক্কা করে না বলেই বিএনপিসহ দেশের বিরোধী রাজনৈতিক শক্তি, বিশিষ্ট নাগরিক সমাজ এই সরকারের চরম রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার। বিরোধী সভা-সমাবেশসহ মত প্রকাশে নগ্নভাবে বাধা প্রদান করেও তারা আশস্ত হতে পারছে না। তাই মজনুর মতো সংগ্রামী নেতাদের গ্রেফতার করে শঙ্কামুক্ত হতে চায়।’ 

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমি সুস্পষ্টভাবে বলতে চাই, জনগণের প্রতি দমননীতি প্রয়োগ করে সরকারের ক্ষমতা আর নিরাপদ থাকবে না। রাষ্ট্রীয় অনাচার বৃদ্ধি করে আর সাধারণ মানুষকে ভয়-ভীতি দেখানো যাবে না। আমি সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই-গণবিরোধী জুলুমের পথ থেকে অবিলম্বে সরে আসুন, গায়েবি মামলা ও গণগ্রেফতার বন্ধ করুন, জনগণের ক্ষমতা জনগণকে ফিরিয়ে দিন। পৃথিবীতে কখনোই স্বৈরাচার বেশিদিন টিকতে পারেনি, আটককৃত নেতাদের মুক্তি দিন এবং এই মুহূর্তে পদত্যাগ করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করুন।’