- ড. আবদুল লতিফ মাসুম
- ২৬ আগস্ট ২০২০

সাবেক প্রধান বিচারপতি ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারপ্রধান মরহুম হাবিবুর রহমান বলেছিলেন, ‘বাজিকরের দেশে পরিণত হয়েছে দেশটা’। সর্বগ্রাসী বাজিকরদের প্রাবাল্য লক্ষ করেই বলেছিলেন কথাটা। আমাদের দেশে বাজিকরের অন্ত নেই- চাঁদাবাজ, টেন্ডারবাজ, ধান্দাবাজ, ধাপ্পাবাজ, সন্ত্রাসবাজ, দুর্নীতিবাজ, ধর্ষণবাজ, দলবাজ, তেলবাজ ও রংবাজ- অনেক আগে থেকেই আমাদের সমাজের অপ্রিয় অনুষঙ্গ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এদের প্রতিটি ক্ষেত্র সম্পর্কে ইচ্ছা করলে রচনা করা যায় মহাকাব্য। তবে আমাদের জনচরিত্র সম্পর্কে ইতিহাস-ভূগোলে যে তথ্য আছে তাতে এ বহুধা বিশেষণ সম্পর্কে বিস্মিত হওয়ার কিছু নেই। বাঙালিদের প্রতারণার বিশেষত্ব সম্পর্কে মেকলে সাহেব সার্টিফিকেট দিয়েছিলেন। কবিগুরু বলেছেন, ‘আমাদের দেশের চাঁদার খাতা আমাদের দেশের গোরুর মতোÑ তাহার চরিবার স্থান নাই বলিলেই চলে।’ অর্থাৎ চাঁদা আকীর্র্ণ আমাদের সমাজ। প্রাচীন-মধ্য ও আধুনিক যুগ ছাপিয়ে উত্তর-আধুনিক যুগে বাঙালির নেতিবাচক গুণ ক্রমেই ফুলে-ফলে সুশোভিত হয়েছে। এখন তা বিষবৃক্ষের আকার ধারণ করেছে। কথায় বলে- যায় দিন ভালো যায়। অতীতের চেয়ে বর্তমান খারাপ হয়েছে। বর্তমানের চেয়ে ভবিষ্যৎ যে ভালো হবে তার লক্ষণ নেই। সরকার আসে সরকার যায়- মানুষের ভালো হয় না। আর যারা ওই প্রকার চরিত্র প্রদর্শন করতে পারে তারা আঙুল ফুলে কলাগাছ নয়- বটগাছ হয়। বটগাছ হওয়ার প্রমাণ পাওয়া যায় সংবাদপত্র পাঠে। অনেকের নাম বলা যায়। কিন্তু বলব না। মামলা হতে পারে।
আমাদের আজকের বিষয় সরকারি ও বেসরকারি চাঁদাবাজি। সে বিষয়ে আলোকপাত করা যাক। চাঁদাবাজদের দৌরাত্ম্য একটাই ব্যাপক আকার ধারণ করেছে যে, তাদের ছোবল থেকে রক্ষা পাওয়া কঠিন। প্রতিটি সেক্টরে চাঁদাবাজদের অবস্থান অবধারিত হয়ে উঠেছে। রাজনীতি, অর্থনীতি ও সমাজনীতি- সব কিছুই চাঁদাবাজিতে কলুষিত হয়ে পড়েছে। আর রাজনৈতিক দলগুলো চাঁদা ছাড়া বাঁচে না। ইউনিয়ন পরিষদের নমিনেশন থেকে জাতীয় সংসদের সদস্যপদ পর্যন্ত চাঁদাবাজি প্রসারিত। এই সেদিন ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক পাঁচটি আসনের উপনির্বাচনের নমিনেশন বাবদ ৫০ লাখ টাকা সংগৃহীত হয়েছে। বিগত বোগাস নির্বাচনের সময়ে বিরোধী দলগুলোর চাঁদাবাজির কেলেঙ্কারি সংবাদপত্রেই প্রকাশিত হয়েছে। সত্য এই যে, সরকারি দল অথবা বিরোধী দল- সব দলই চলে চাঁদায়। সংবাদ হয় তখনই যখন তা সীমালঙ্ঘন করে। অন্যায়-অপকর্মের কাজে ব্যবহৃত হয়। বিগত ১২ বছরে সরকারি দলের চাঁদাবাজি সীমা লঙ্ঘন করেছে। অন্যান্য সরকারের সময়ে চাঁদাবাজি ছিল না এমন নয়। এই সময়ে এটি প্রাতিষ্ঠানিকতা অর্জন করেছে। কোন খাতে কত দিতে হবে তার শতকরা হার নির্ধারিত হয়েছে।
এবার চাঁদাবাজির অর্থনীতির দিকে চোখ ফেরানো যাক। উৎপাদনের উপায় উপকরণের সব ক্ষেত্রে চাঁদাবাজি অনিবার্য হয়ে পড়েছে। চাঁদা না দিলে লাইসেন্স পারমিট জোটে না। চাঁদা না দিলে ঠিকাদার কাজ পায় না। চাঁদা না দিলে চাকরি হয় না। বিদেশে যেতে নির্ধারিত অর্থে হয় না। চাঁদা দিতে হয় ঘাটে ঘাটে- এমনকি এয়ারপোর্টে। চাঁদা আর ঘুষে পার্থক্য আছে। ঘুষ অনির্ধারিত এবং তাৎক্ষণিক। চাঁদা নির্ধারিত এবং একরকম স্থায়ী। প্রতিনিয়ত নাগরিকরা প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে নিজের অজান্তেই চাঁদা দিয়ে যাচ্ছেন। বাসের টিকিট কিনতে হরেক রকম সমিতিকে চাঁদা দিতে হয়। জমির দলিল করতে কর্মচারী সমিতি ও দলিল লেখক সমিতি চাঁদা নিয়ে নেয়। শিক্ষকরা সমিতির চাঁদা দেয়।
অন্যায় কিছু নয়। কিন্তু পরীক্ষার সময় পরিদর্শক যাতে নকল না ধরে এ জন্য ছাত্রদের থেকে চাঁদা নেয়া হয়। আর শাসকদলের সহযোগী ছাত্ররা উন্নয়নের অংশীদার হিসেবে হিস্যা পায়। এমনকি করোনার ত্রাণ পেতেও চাঁদা দিতে হয়। সরকারি দলের মানুষজনকে বেশুমার চাঁদা দিতে হয়। বাড়ি করা থেকে শিল্প প্রকল্পের অনুমোদন ও স্থাপন- সব ক্ষেত্রেই আমলা ও শাসক দলের মাস্তানদের চাঁদা দিতে হয়। সেদিন দেখলাম জেলাপর্যায়ের এক নেতা দুই হাজার কোটি টাকা পাচার করেছেন। বোঝা যায়, এগুলো বেশুমার চাঁদার টাকা। পেশাগত চাঁদা গ্রহণযোগ্য। কিন্তু যা অগ্রহণযোগ্য তা হচ্ছে পেশাদারদের চাঁদাবাজি। পুলিশের নামে চাঁদাবাজি হয়। ইউএনও, ডিসি অফিস বা সচিবালয়ে ঘুষের বাইরে পেশাদাররা নির্দিষ্ট অঙ্কের চাঁদা নেয় বিভিন্ন নামে-ধামে। ভালো কাজের জন্য চাঁদা তোলা হয়। শিক্ষার্থীরা সেবার নামে চাঁদা তোলে। মিথ্যাচার করে চাঁদা তুলতে গিয়ে জাহাঙ্গীরনগরে ধরা পড়েছে প্রতারক চক্র। হিজড়াদের চাঁদাবাজিতে নাকাল হতে হয় পথে-ঘাটে অথবা বাড়িতে। মসজিদ-মাদরাসাও চলে চাঁদায়। এই পবিত্র কর্মে অপবিত্রকরণের অভিযোগও নেহায়েত কম নয়। ওরস মোবারকের নামে যে লালসালু বিছানো হয়, অভিযোগ তার বেশির ভাগ চলে যায় কালো আয়োজনে। ইত্যাকার চাঁদাবাজির বেশির ভাগই বেসরকারি। তবে সরকারি অনুমোদনেও ব্যাপক চাঁদাবাজি হয়।
সরকারি চাঁদাবাজির সবচেয়ে বড় সেক্টর পরিবহন খাত। বাংলাদেশের বেশির ভাগ ব্রিজ, মহাসড়ক, ফেরি ও টার্মিনালে সরকারকে নির্ধারিত হারে চাঁদা দিতে হয়। যমুনা সেতুর মতো বড় প্রকল্পে যেহেতু বিদেশী বিনিয়োগ রয়েছে সেহেতু চাঁদা দিতে হয়। এখন পদ্মা সেতু নির্মাণে চাঁদা দিতে হচ্ছে। দেশের চলমান এসব জনপথে যে চাঁদা দেয়া হয় তার বেশির ভাগই সরকারের তহবিলে পৌঁছে না। এসব অভিযোগ অনেক পুরনো। চাঁটার দল আর চাঁদার দল একত্র হয়ে লুটেপুটে খেয়ে ফেলে সব। এমন অনেক ব্রিজ বা মহাসড়ক রয়েছে যেখানে মেয়াদের পরও চলছে চাঁদাবাজি। চ্যালেঞ্জ করা হলে মাস্তানদের হাতে মার খেতে হয়। আর এসব করে সরকারি দলের লোকেরা। যখন যে সরকার আসে তাদের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে এ অন্যায় অব্যাহত থাকে। সরকারি টোল বা চাঁদার বাইরেও প্রায়ই বাঁশ বা প্রতিবন্ধক ফেলতে দেখা যায়। এছাড়া প্রতিবন্ধক ছাড়াই একেকটা পয়েন্টে নির্দিষ্ট পরিমাণ চাঁদা দিতে হয়। দেখবেন হঠাৎ করে হেলপার দৌড় দেয়, নির্দিষ্ট স্থানে নির্দিষ্ট ব্যক্তির কাছে। পথে পথে চাঁদাবাজিতে অতিষ্ঠ ব্যবসায়ীরা। শাক-সবজি, ফলমূল এবং যাবতীয় পণ্যসামগ্রীর জন্য চাঁদা দিতে হয়। দাম বেড়ে যাওয়ার এটা একটি বড় কারণ। অসংখ্যবার সংবাদ সম্মেলন করেও সমাধান মেলেনি।
৫৯ দিন বন্ধ থাকার পর চলতি আগস্টের শুরুতেই আবার পরিবহন সচল করার সময় চাঁদা বন্ধের দাবি ওঠে। বলা হয়, চাঁদাবাজি বন্ধ হলে যাত্রী ভাড়া বাড়ানোর প্রয়োজন পড়বে না। কিন্তু চাঁদাবাজি বন্ধ হয়নি। গণপরিবহন চালুর প্রথম দিন থেকেই চাঁদাবাজি শুরু হয়। চাঁদাবাজি বন্ধে পুলিশের আইজির কঠোর হুঁশিয়ারির পরও তারা থামেনি। কিছু কৌশল পরিবর্তন করেছে মাত্র। পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানা গেছে, শ্রমিক ও মালিক সংগঠনের নামে এখন সরাসরি টার্মিনাল থেকে চাঁদা নেয়া বন্ধ আছে। এখন চাঁদা আদায় হচ্ছে বাস টার্মিনালের বাইরে। দূরপাল্লøার বাসগুলো নির্দিষ্ট পয়েন্টে গোপনীয়তার সাথে চাঁদা পরিশোধ করতে বাধ্য হচ্ছে। এটাকে বলা হচ্ছে সম্মিলিত চাঁদা। এখান থেকে মালিক ও শ্রমিকরা ভাগ নিচ্ছেন। এই নতুন কৌশলের সাথে রাজনৈতিক নেতাকর্মীরা জড়িত রয়েছে বলে সংবাদপত্রের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। ঢাকা শহরের বিভিন্ন রুটে চলাচলকারী হিউম্যান হলার থেকেও নতুন কৌশলে চাঁদা নেয়া হচ্ছে। পুলিশ সদর দফতর বিভিন্ন ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়েছে।
পরিবহন খাতের পর অভিযুক্ত পুলিশ বাহিনী। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গতানুগতিক। এর আকার প্রকার সম্পর্কে নতুন করে বলার কিছু নেই। তবে পুলিশের ক্ষমতা ও মর্যাদা ব্যবহার করে পুলিশ মিথ্যা পরিচয়েও চাঁদাবাজির খবর সংবাদপত্রে মাঝে মধ্যে প্রকাশিত হচ্ছে।
চাঁদাবাজির জন্য বড় করে অভিযুক্ত হচ্ছে শাসকদলের সহযোগীরা। ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে বড় অভিযোগ চাঁদাবাজির। প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে তারা প্রতিষ্ঠানিক চাঁদা নিচ্ছে। অপরদিকে যেমন অপ্রতিষ্ঠানে যেমন- নির্মাণকাজ, ভর্তি, চাকরি ও অন্যান্য ক্ষেত্রেও তারা চাঁদাবাজি করছে। করোনাকালীন সময়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার কারণে তাদের উৎপাত কম। স্বাভাবিক অবস্থাকালীন সময়ে তাদের দুর্নামে একপর্যায়ে প্রধানমন্ত্রী তার পৃষ্ঠপোষকতা প্রত্যাহার করে নেন। জাহাঙ্গীরনগর বিশ^বিদ্যালয়ের উন্নয়ন প্রকল্প থেকে বড় অঙ্কের চাঁদা দাবি করায় প্রধানমন্ত্রী ছাত্রলীগ নেতৃত্বের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেন। পরবর্তীকালে যুবলীগের দুর্নীতিবাজ চাঁদাবাজ নেতৃত্বের বিরুদ্ধেও তিনি অনুরূপ ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। চাঁদাবাজির আরেকটি বড় খাত ফুটপাথ। রাজধানীর গুলিস্তান ও আশেপাশের এলাকার ৪৫টি ফুটপাথে অন্তত ১০-১২ হাজার ভাসমান দোকান আছে। প্রতিটি দোকান থেকে প্রতিদিন গড়ে ৫০ থেকে ৪০০ টাকা পর্যন্ত চাঁদা তোলা হয়। চাঁদার হার গড়ে ২০০ টাকা হলে দিনে ২০ লাখ টাকা চাঁদা ওঠে। চাঁদার এই টাকা ক্ষমতাসীন দলের স্থানীয় নেতাকর্মী, সিটি করপোরেশনের কিছু কর্মকতা-কর্মচারী, স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর, চাঁদা তোলার কাজে নিয়োজিত লাইনম্যান ও তাদের সহযোগীরা ভাগ করে নেন। ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্ন্যানেন্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের এক গবেষণা অনুযায়ী, দুই সিটি করপোরেশনের ফুটপাথের হকারদের কাছ থেকে বছরে এক হাজার ৮২৫ কোটি টাকা চাঁদা আদায় হয়।
এই পর্যালোচনায় নিশ্চয় স্পষ্ট হয়েছে, সরকারি-বেসরকারি চাঁদাবাজি সরকারের প্রচ্ছন্ন অনুমোদন ছাড়া সম্ভব নয়। পরিবহন খাতই যে চাঁদাবাজির সবচেয়ে উর্বর ক্ষেত্র তাও প্রমাণিত হয়েছে। সরকারের সরাসরি অনুমোদনে জনপথে চাঁদার বিষয়টি আলোচিত হয়েছে। এই চাঁদাবাজি যে আল্টিমেটলি জনগণের বা যাত্রী সাধারণের ঘাড়ে চেপে বসে- তা বলার অপেক্ষা রাখে না। এ পরিস্থিতিতে কুমিল্লা জেলার একটি মহাসড়ক প্রকল্পে চাঁদা না নেয়ার সিদ্ধান্ত ছিল। প্রধানমন্ত্রী এই সড়ক প্রকল্প অনুমোদনের প্রসঙ্গে টোল ফ্রি রাখার প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছেন। তিনি মনে করেন, এই বিপুল ব্যয় সঙ্কুলানের জন্য টোল ফ্রি না রেখে সামান্য হলেও টোল আদায় করা উত্তম।
রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে তার এ প্রস্তাব ন্যায়সঙ্গত। অর্থনৈতিক সমস্যায় আকীর্ণ এ রাষ্ট্রের জন্য তার চিন্তা থাকাই স্বাভাবিক। কিন্তু আলোচনাক্রমে আমরা যে বাস্তবতা দেখলাম তা রাষ্ট্রীয় কোষাগারকে সমৃদ্ধ করে খুব সামান্যই। মাঝপথে লাভের গুড় পিঁপড়ায় খায়। যে জনগণের জন্য প্রধানমন্ত্রীর মঙ্গল আকাক্সক্ষা সে জনগণের চরিত্র তার জানা আছে। সুতরাং ওই মহাসড়কটিতে টোল আরোপ না করলেই সাধারণ মানুষ উপকৃত হবে। সর্বোপরি চাঁদাবাজি যেভাবে আমাদের সমাজকে আষ্টেপৃষ্টে বেঁধে ফেলেছে তা থেকে মুক্তির জন্য প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগ অনিবার্য হয়ে পড়েছে।
কিছুকাল আগে এ ধরনের চাঁদাবাজি বন্ধের জন্য একটি সংসদীয় উপকমিটি গঠিত হয়েছিল। আমাদের আর সব তদন্ত কমিটির মতো এই কমিটিরও আর পাত্তা পাওয়া যায়নি। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ক. চাঁদাবাজি বন্ধে রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত সময়ের দাবি। সরকারি দল, বেসরকারি উৎস ও বিরোধী দলগুলোকে সদিচ্ছার প্রমাণ দিতে হবে যে, তারা চাঁদাবাজি বন্ধে নীতিগতভাবে একমত; খ. নীতিগত সিদ্ধান্তের পর মাঠপর্যায়ে সিদ্ধান্ত কার্যকর করতে হবে; গ. সরকার নিজ দলসহ সরকারি অর্থায়নে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোকে অর্থায়ন করতে পারে। পৃথিবীর অন্যত্র এ ধরনের উদাহরণ রয়েছে; ঘ. পুলিশকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারলে চাঁদাবাজি কমে যাবে বলে তথ্যাবিজ্ঞ মহল মনে করে; ঙ. পরিবহন খাতে পাইকারি চাঁদাবাজি বন্ধে শ্রমিক ও মালিক সংগঠনগুলোকে সুনির্দিষ্টকরণ করতে হবে; চ. শ্রম আইনে ব্রিজ, মহাসড়ক, ফেরি ও টার্মিনালসহ বিভিন্ন স্থান থেকে চাঁদা নেয়া ফৌজদারি অপরাধ। এই আইনকে কার্যকর করতে হবে। চাঁদাবাজির এসব ঘটনাবলি প্রমাণ করে, গোটা জাতি একটি নৈতিক অবক্ষয়ের প্রান্তসীমায় পৌঁছেছে। একটি নৈতিক বিপ্লবই এ ধরনের সর্বনাশা সয়লাব থেকে আমাদের রক্ষা করতে পারে। তবেই আমরা গড়তে পারব বাজিকরমুক্ত বাংলাদেশ।
লেখক : অধ্যাপক, সরকার ও রাজনীতি বিভাগ
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়