১৯ আগস্ট ২০২৩
নিজস্ব প্রতিনিধি
বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের সাবেক আহবায়ক ও আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান এবং যায়যায় দিন পত্রিকার সম্পাদক, সব্যসাচী লেখক শফিক রেহমানের বিরুদ্ধে ফরমায়েশি সাজার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ। সংগঠনটির আহবায়ক প্রফেসর ড.এজেডএম জাহিদ হোসেন ও সদস্য সচিব সাংবাদিক কাদের গনি চৌধুরী আজ শুক্রবার এক যৌথ বিবৃতিতে বলেন, সকল প্রতিবাদী কণ্ঠ নির্মূল করার সরকারি নীল নকশা অনুযায়ী আদালতকে ব্যবহার করে দেশের দুই সম্পাদকের বিরুদ্ধে এ রায় দেয়া হয়েছে। যা কোন অবস্থাতেই মেনে নেয়ার মতো নয়।
পেশাজীবী নেতৃদ্বয় বলেন, দেশে ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠা করতে সরকার সব ক্ষেত্রে বিচার বিভাগকে অস্ত্র হিসাবে ব্যবহার করছে। আমরা অবাক বিস্ময়ের সঙ্গে লক্ষ্য করছি যে, বিচার বিভাগকে ব্যবহার করে জনগণের মৌলিক, গণতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক অধিকারগুলো হরণ করা হচ্ছে। সাংবাদিক–পেশাজীবীসহ গণতন্ত্রকামী মানুষকে বিচার বিভাগ দিয়ে চরমভাবে হয়রানি-নির্যাতন-নিপীড়ন করা হচ্ছে। যার ফলে দেশে একটা বিচারহীনতার সংস্কৃতি তৈরি হয়েছে।
মৌলিক অধিকার বাধাগ্রস্ত হলে মানুষ আদালতের শরণাপন্ন হয়। আজ উল্টো আদালতই মৌলিক অধিকার কেড়ে নিচ্ছে। এর উৎকৃষ্ট উদাহরণ হচ্ছে গণমাধ্যমে তারেক রহমানের বক্তব্য প্রচারে নিষেধাজ্ঞা। এই আদালতকে দিয়েই তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা বাতিল করে জনগনের ভোটাধিকার কেড়ে নেয়া হয়েছে। এই আদালতকে ব্যবহার করে স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের স্মৃতিবিজড়িত শহীদ মইনুল রোডের বাড়ি কেড়ে নেয়া হয়েছে এবং তিন বারের প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে এক কাপড়ে বাড়ি থেকে বের করে দেয়া হয়েছে। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা সাজা দিয়ে নির্বাচনে অযোগ্য করা হয়েছে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও উনার সহধর্মিণী ডা. জুবাইদা রহমানকে ফরমায়েশি সাজা দেয়া হয়েছে।
একইভাবে নির্বাচনে অযোগ্য করার জন্য বিএনপির অনেক জনপ্রিয় নেতাকে সাজা দেয়া হয়েছে। এট আজ দিবালোকের মতো সত্য যে, বর্তমান সরকার আবার ক্ষমতা দখলের জন্য আদালতকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে।
বিএসপিপি’র বিবৃতিতে বলা হয়, মাহমুদুর রহমান ও শফিক রেহমান দেশের দুই প্রবীণ সাংবাদিক। দেশের সিনিয়র সিটিজেন ও বুদ্ধিজীবী। গণতন্ত্র ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার জন্য তাঁদের অবদান ভুলার মতো নয়। বর্তমান সরকারের দুর্নীতি,লুটপাট ও দু:শানের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন বলেই দেশের এই শীর্ষ দুই বুদ্ধিজীবীকে সরকার এর আগে গ্রেফতার করে নজীর বিহীন নির্যাতন চালিয়েছে। এমন কি আদালত চত্বরে মাহমুদুর রহমানকে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা চালিয়ে রক্তাক্ত জখম করা হয়।রিমান্ডের নামে তার উপর চালানো হয় অমানসিক নির্যাতন। মাহমুদুর রহমানের সম্পাদিত দৈনিক আমার দেশ শুধু বন্ধই নয় অফিস আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়া হয়। সরকারের রোষানলে পড়ে এক পর্যায়ে দুই সম্পাদক দেশান্তরি হন। এরপরও সরকারের প্রতিহিংসার থেকে রেহাই পেলেন না। মিথ্যা অভিযোগ ফেঁদে এই দুই সম্পাদককে বিষ্ময়করভাবে ৭ বছরের সাজা দিল।
পেশাজীবীদের এই শীর্ষ দুই নেতা বলেন, সরকারের দুর্নীতি,লুটপাট,গুম, খুন, ধর্ষণ, বিনাবিচারে মানুষ হত্যা, ভোটাধিকার হরণ, মানবাধিকার লঙ্ঘনের খবর যাতে মানুষ জানতে না পারে সে জন্য সাংবাদিকদের গুম করা হচ্ছে, হত্যা করা হচ্ছে, জেলে পাঠানো হচ্ছে, সাংবাদিকদের ফরমায়েশি সাজা দেয়া হচ্ছে, কথায় গণমাধ্যম বন্ধ এমন কি পত্রিকা অফিস জ্বালিয়ে দেয়া হচ্ছে।
বর্তমান সরকারের আমলে ৫৮জন সাংবাদিককে হত্যা করা হয়েছে। যা সভ্য সমাজে কল্পনাও করা যায় না।আমরা দ্ব্যর্থহীনভাবে বলতে চাই,গণমাধ্যমের কণ্ঠরোধ করে গণতন্ত্রের বিকাশ সম্ভব নয়। এটা মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পরিপন্থী।
পেশাজীবীদের এই দুই নেতা অবিলম্বে এই ফরমায়েশি রায় বাতিলের দাবি জানিয়ে বলেন, এধরণের ফরমায়েশি রায়ের কারণে বিচার বিভাগের ওপর মানুষের সর্বশেষ আশাটুকু শেষ হয়ে যাচ্ছে।