সবকিছুর দাম বাড়লেও চামড়ার দাম গত এক দশকে কমে অর্ধেক হলো কেন

Prothom-Alo-logo | Design Works Group

সরকারিভাবে নির্ধারিত গরুর চামড়ার দামে কিছুটা বাড়তি প্রবণতা থাকলেও ছাগলের চামড়ার কোনো দামই পাননি বিক্রেতারা। মাত্র পাঁচ টাকা বা তারও কম দামে প্রতি পিস ছাগলের চামড়া বিক্রি হতে দেখা গেছে। বৃহস্পতিবার পুরান ঢাকার পোস্তা এলাকায়
সরকারিভাবে নির্ধারিত গরুর চামড়ার দামে কিছুটা বাড়তি প্রবণতা থাকলেও ছাগলের চামড়ার কোনো দামই পাননি বিক্রেতারা। মাত্র পাঁচ টাকা বা তারও কম দামে প্রতি পিস ছাগলের চামড়া বিক্রি হতে দেখা গেছে। বৃহস্পতিবার পুরান ঢাকার পোস্তা এলাকায়ছবি: প্রথম আলো

গত এক দশকে চামড়ার জুতা থেকে শুরু করে সবধরনের পণ্যের দাম উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেলেও বিস্ময়করভাবে কাঁচা চামড়ার দাম প্রায় অর্ধেক হয়ে গিয়েছে।

সরকার এ বছর ঢাকায় লবণযুক্ত প্রতি বর্গফুট গরুর চামড়ার দর ৫০ থেকে ৫৫ টাকা ও খাসির চামড়া ১৮ থেকে ২০ টাকা নির্ধারণ করেছে।

অথচ আজ থেকে ১০ বছর আগে ২০১৩ সালে ঢাকায় লবণযুক্ত প্রতি বর্গফুট গরুর চামড়া ৮৫ থেকে ৯০ টাকা আর খাসির চামড়ার দর ৫০ থেকে ৫৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল। এর ফলে সেবার কোরবানির পশুর চামড়ার বেশ ভালো দাম মিলেছিল, যার সুফল পেয়েছিলেন এতিমখানা, মাদ্রাসা এবং দরিদ্র জনগোষ্ঠীর মানুষেরা।

সেবার ঈদের দিন রাজধানীতে ছোট আকারের গরুর চামড়ার দর ছিল প্রতিটি ১ হাজার ৪০০ থেকে ১ হাজার ৮০০ টাকা, মাঝারি আকারের গরুর চামড়া ১ হাজার ৮০০ থেকে আড়াই হাজার এবং বড় আকারের গরুর চামড়া আড়াই হাজার থেকে ২ হাজার ৮০০ টাকা।

এরপর ২০১৪ সালে চামড়া ব্যবসায়ীদের তিন সংগঠন চামড়ার দর ২০১৩ সালের তুলনায় কিছুটা কম—প্রতি বর্গফুট গরুর চামড়া ৭০ থেকে ৭৫ টাকা নির্ধারণ করলেও বাস্তবে আরও বেশি দরে বিক্রি হয়েছিল, সেবার পুরান ঢাকার লালবাগের পোস্তায় লবণবিহীন প্রতি বর্গফুট চামড়াই বিক্রি হয় ৯০ থেকে ১০০ টাকায়।

এর পর থেকে চামড়ার দর শুধু কমেছেই। চামড়ার দর কমতে কমতে ২০১৯ সালে এমন একটা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল যে অনেকে চামড়া ফেলে দিয়েছিলেন বা মাটিতে পুঁতে ফেলেছিলেন। এরপরের বছরগুলোয় চামড়া ফেলে দেওয়ার ঘটনা না ঘটলেও এক দশক আগের তুলনায় অনেক কম দরেই বিক্রি হয়েছে। এর ফলে দরিদ্র প্রান্তিক মানুষেরা ধারাবাহিকভাবে বঞ্চিত হলেও লাভবান হয়েছেন আড়তদার, ব্যবসায়ী আর ট্যানারিমালিকেরা।

প্রথম আলোর খবর অনুযায়ী, ঢাকায় এবার গরুর চামড়ার দর গত বছরের তুলনায় কিছুটা বেশি হলেও তা সরকার–নির্ধারিত দরের চেয়ে কম। সরকারের নির্ধারিত দাম অনুযায়ী প্রতি বর্গফুট ৫০ থেকে ৫৫ টাকা হিসাবে ঢাকায় মাঝারি আকারের ২৫ বর্গফুটের একটি লবণ দেওয়া চামড়ার দাম হওয়ার কথা ১ হাজার ২৫০ থেকে ১ হাজার ৩৭৫ টাকা। এই হিসাব থেকে লবণ, মজুরি ও অন্যান্য খরচ বাবদ ৩০০ টাকা বাদ দিলে ওই চামড়ার আনুমানিক মূল্য দাঁড়ায় ৯৫০ থেকে ১ হাজার ৭৫ টাকা। কিন্তু ঈদের দিন পুরান ঢাকার পোস্তাসহ রাজধানীর বিভিন্ন স্থান থেকে খবর নিয়ে প্রথম আলো জানাচ্ছে, মাঝারি আকারের চামড়া বিক্রি হচ্ছে ৬০০ থেকে ৮৫০ টাকার মধ্যে; অর্থাৎ সরকার–নির্ধারিত দামের চেয়ে তুলনামূলক কম দামে কাঁচা চামড়া বিক্রি হচ্ছে।

ঢাকার বাইরে চামড়ার দর আরও অনেক কম। প্রথম আলোয় প্রকাশিত সংবাদ অনুসারে, চট্টগ্রামে এবার বড় গরুর চামড়া ৪৫০ থেকে ৬০০ আর মাঝারি গরুর চামড়া ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। আর রাজশাহীতে গরুর চামড়া বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে সর্বোচ্চ ৭০০ টাকায়। তবে সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতি হলো খাসির চামড়ার, এই চামড়ার ক্রেতা পাওয়াই মুশকিল। কোনো কোনো ক্ষেত্রে মাত্র পাঁচ টাকা বা তারও কম দামে প্রতি পিস খাসির চামড়া বিক্রি হতে দেখা গেছে।

লক্ষণীয় বিষয় হলো, সরকার গত বছরের তুলনায় এ বছর গরুর চামড়ার দর প্রতি বর্গফুটে মাত্র ৩ টাকা বৃদ্ধি করেছিল, যা শতাংশের হিসাবে মাত্র ৬ আর খাসির চামড়ার কোনো মূল্য বৃদ্ধি করেনি। চামড়ার মূল্যবৃদ্ধির এই হার ১০ শতাংশ মূল্যস্ফীতির চেয়ে কম এবং ডলারের বিপরীতে টাকার যে পরিমাণ অবমূল্যায়ন হয়েছে, তার সঙ্গেও সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। গত এক বছরে ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়ন হয়েছে ২৫ দশমিক ৫০ শতাংশ। চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি করে ব্যবসায়ীরা এক বছর আগে যে ডলার আয় করতেন, তা থেকে টাকা আসত ৮৬ দশমিক ৪৫, বর্তমানে যা ১০৮ দশমিক ৫ টাকা। তাহলে ব্যবসায়ীরা যেখানে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি করে আগের চেয়ে ডলারপ্রতি ২৫ দশমিক ৫০ শতাংশ বেশি আয় করবেন, সেখানে কাঁচা চামড়ার মূল্য গত বছরের তুলনায় মাত্র ৬ শতাংশ বৃদ্ধি কী করে যৌক্তিক হতে পারে?

বাংলাদেশে প্রতিবছর যত পশু জবাই হয়, তার অর্ধেকই হয় কোরবানির সময়। ফলে একসঙ্গে বাজারে বিপুল পরিমাণ চামড়ার সরবরাহ হয়। কোরবানিদাতা এবং মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ীদের পক্ষে এই বিপুল পরিমাণ কাঁচা চামড়া সংরক্ষণ করা সম্ভব নয় বলে চামড়ার বড় ব্যবসায়ী, আড়তদার এবং ট্যানারিমালিকেরা এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে চামড়ার দাম কমিয়ে রাখছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। তা ছাড়া চামড়া বিক্রির টাকা দরিদ্রদের দান করে দেওয়া হয় বলে এর দাম নিয়ে অনেকেরই মাথাব্যথা থাকে না। কাঁচা চামড়ার কম মূল্যের পেছনে আড়তদার ও ট্যানারিমালিকদের সিন্ডিকেট ছাড়াও আরও যে সমস্যা দায়ী, তা হলো চামড়াশিল্পের পরিবেশগত কমপ্লায়েন্স সমস্যা।

বাংলাদেশের চামড়ার গুণগত মান ভালো, এখানে শ্রম তুলনামূলক সস্তা। ফলে কোনো ধরনের কাঁচামাল আমদানির ওপর নির্ভরশীলতা বৃদ্ধি ছাড়াই চামড়াশিল্পের বিকাশের ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে বাংলাদেশের। কিন্তু সরকারের অবহেলা, অব্যবস্থাপনা ও অদূরদর্শিতা এবং চামড়াশিল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের পরিবেশকে গুরুত্ব না দিয়ে স্বল্প মেয়াদে অতি মুনাফার প্রবণতার কারণে এই শিল্পের বিকাশ আটকে আছে।

স্বাধীনতার এত বছর পরও দেশের চামড়াশিল্প পরিবেশদূষণমুক্ত হতে না পারার কারণে ইউরোপের লেদার ওয়ার্কিং গ্রুপের (এলডব্লিউজি) সনদ পাচ্ছে না। এ কারণে প্রক্রিয়াজাত চামড়া ইউরোপের বদলে চীনের বাজারে কম দামে রপ্তানি করতে হচ্ছে।

চামড়াশিল্পে দূষণের এই সমস্যা দীর্ঘদিনের। হাজারীবাগে থাকাকালে ট্যানারিগুলো প্রতিদিন প্রায় ২১ হাজার ৬০০ ঘনমিটার তরল বর্জ্য পরিশোধন না করেই সরাসরি বুড়িগঙ্গা নদীতে ফেলত। বুড়িগঙ্গা নদীর দূষণ কমাতে শিল্প মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে ও বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশনের (বিসিক) নেতৃত্বে সাভারের হেমায়েতপুরে ১ হাজার ১৫ কোটি টাকা ব্যয়ে গড়ে তোলা হয় চামড়া শিল্পনগর, যার মধ্যে ৫২১ কোটি টাকা ব্যয় করা হয় কেন্দ্রীয় বর্জ্য পরিশোধনাগার বা সিইটিপি নির্মাণে।

২০১৭ সালে রাজধানীর হাজারীবাগ থেকে ট্যানারিগুলো সাভারের চামড়া শিল্পনগরে সরিয়ে নেওয়া হলেও চামড়াশিল্প দূষণমুক্ত হয়নি, কারণ বিপুল অর্থ ব্যয় করে ২ বছরের বদলে ৯ বছর সময় নিয়ে নির্মিত সিইটিপি চামড়াশিল্পের সব ধরনের বর্জ্য পূর্ণমাত্রায় পরিশোধনে সক্ষম নয়, যা সরকারের শিল্প মন্ত্রণালয় ও বিসিকের চরম অবহেলা ও ব্যর্থতার নিদর্শন। কোরবানির মৌসুমে প্রতিদিন ৩৫ থেকে ৪০ হাজার ঘনমিটার বর্জ্য উৎপাদিত হলেও সিইটিপির পরিশোধন সক্ষমতা দিনে ২৫ হাজার ঘনমিটার। আবার এই ২৫ হাজার ঘনমিটার বর্জ্যও ঠিকমতো পরিশোধন করা হয় না। সিইটিপিতে লবণ পরিশোধনের ব্যবস্থা নেই। ক্রোমিয়াম বর্জ্যের পরিমাণ ৫ হাজার ঘনমিটার হলেও ক্রোমিয়াম রিকভারি ইউনিটের সক্ষমতা দিনে মাত্র ১ হাজার ৫০ ঘনমিটার।

অন্যদিকে, ট্যানারিমালিকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ হলো, তাঁরা ক্রোমিয়ামযুক্ত বর্জ্য আলাদাভাবে না দিয়ে সাধারণ বর্জ্যের সঙ্গে ছেড়ে দেন। ঘাটতি রয়েছে কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রেও। কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য বিসিক পুকুর খনন করেছে, যা পরিবেশসম্মত নয়। ফলাফলস্বরূপ চামড়াশিল্পের কারণে এখন বুড়িগঙ্গার বদলে সাভারের ধলেশ্বরী নদী দূষিত হচ্ছে এবং চামড়াশিল্প পরিবেশবান্ধব সার্টিফিকেট পাচ্ছে না।

তবে লেদার ওয়ার্কিং গ্রুপের সার্টিফিকেট না পাওয়ার ক্ষেত্রে সিইটিপি বা বিসিকের সক্ষমতার সমস্যা ছাড়াও ট্যানারিমালিকদেরও দায় রয়েছে। এলডব্লিউজি কর্তৃক চামড়াশিল্পের পরিবেশগত মান যাচাইয়ের ক্ষেত্রে ১৭টি বিষয়ে ১৭১০ নম্বর রয়েছে, যার মধ্যে ৩০০ নম্বর কেন্দ্রীয় বর্জ্য ব্যবস্থাপনাসংক্রান্ত। বাকি ১৪১০ নম্বর রয়েছে জ্বালানি খরচ, পানির ব্যবহার, বায়ুদূষণ, শব্দদূষণ, রাসায়নিক ব্যবস্থাপনা, চামড়ার উৎস শনাক্তকরণ, দৈনন্দিন কার্যক্রম পরিচালনার মান ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয় যেগুলোর মানদণ্ড রক্ষা করা ট্যানারিমালিকদের দায়িত্ব।

উদাহরণস্বরূপ, পানির ব্যবহারের কথাই ধরা যাক। বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ নীতিমালা ২০২৩ অনুসারে, প্রতি টন কাঁচা চামড়া প্রক্রিয়াজাতকরণে পানি নির্গমনের পরিমাণ সর্বোচ্চ ৩০ ঘনমিটার বা ৩০ টনের মধ্যে সীমিত থাকার নিয়ম থাকলেও ট্যানারিগুলোয় ৫০ থেকে ৬০ টন পানি ব্যবহার করা হয়, যার ফলে পানির অপচয় হয় এবং সিইটিপির ওপর বাড়তি চাপ তৈরি হয়। এলডব্লিউজি সনদ পেতে হলে টনপ্রতি চামড়া প্রক্রিয়াজাতকরণে পানির ব্যবহার আরও কমাতে হবে।

ট্যানারিমালিকেরা চামড়া প্রক্রিয়াজাতকরণের ক্ষেত্রে নিজেদের আওতার মধ্যে থাকা পরিবেশগত সূচকগুলোর মান রক্ষায় যথেষ্ট সচেতন হলে তা এলডব্লিউজির সার্টিফিকেট পাওয়ার ক্ষেত্রে সহায়ক হতো। উল্লেখ্য, এলডব্লিউজি অডিটে ১৭১০ নম্বরের ৮৫ শতাংশ পেলে গোল্ড রেটিং, ৭৫ শতাংশ পেলে সিলভার এবং ৬৫ শতাংশ নম্বর পেলে ব্রোঞ্জ রেটিং পাওয়া যায়।

বাংলাদেশের চামড়ার গুণগত মান ভালো, এখানে শ্রম তুলনামূলক সস্তা। ফলে কোনো ধরনের কাঁচামাল আমদানির ওপর নির্ভরশীলতা বৃদ্ধি ছাড়াই চামড়াশিল্পের বিকাশের ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে বাংলাদেশের। কিন্তু সরকারের অবহেলা, অব্যবস্থাপনা ও অদূরদর্শিতা এবং চামড়াশিল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের পরিবেশকে গুরুত্ব না দিয়ে স্বল্প মেয়াদে অতি মুনাফার প্রবণতার কারণে এই শিল্পের বিকাশ আটকে আছে।

এর ফলে এমন একটি অস্বাভাবিক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে যে উপযুক্ত মূল্য না পেয়ে যখন দেশে কোনো কোনো সময় চামড়া ফেলে দেওয়া বা পুঁতে ফেলার ঘটনা ঘটছে, তখন আবার কোনো কোনো দেশীয় চামড়াজাত পণ্য উৎপাদনকারী কোম্পানি বিদেশ থেকে লেদার ওয়ার্কিং গ্রুপের সার্টিফায়েড চামড়া আমদানি করছে।

এভাবে দীর্ঘ মেয়াদে দেশীয় চামড়াশিল্পের যে বিপুল ক্ষতি হচ্ছে, দরিদ্র মানুষকে চামড়ার দামে ঠকিয়ে তা পোষানো যাবে না। সরকার এবং চামড়াশিল্পের সঙ্গে জড়িত ব্যবসায়ী ও ট্যানারিমালিকেরা যত দিন না তা উপলব্ধি করছেন, তত দিন চামড়াশিল্পের এই সমস্যার কোনো টেকসই সমাধান হবে না।

  • কল্লোল মোস্তফা বিদ্যুৎ, জ্বালানি, পরিবেশ ও উন্নয়ন অর্থনীতিবিষয়ক লেখক। প্রকাশিত গ্রন্থ: ‘বাংলাদেশে উন্নয়নের রাজনৈতিক অর্থনীতি’, ‘ডিজিটাল কর্তৃত্ববাদ, নজরদারি পুঁজিবাদ ও মানুষের স্বাধীন ইচ্ছার ভবিষ্যৎ’। ই-মেইল: [email protected]