সংসদে প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসায় সাংসদেরা
সরকারি দলের সাংসদেরা বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দক্ষ, সাহসী ও সৎ নেতৃত্বে বাংলাদেশ বদলে গেছে। বাংলাদেশের উন্নয়ন এখন বিশ্বের কাছে বিস্ময়।
আজ সোমবার জাতীয় সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনা ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভূয়সী প্রশংসা করেন মন্ত্রী-সাংসদেরা।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ বদলে দেওয়ার কথা বলেছিলেন। আজ দেশ সত্যিই বদলে গেছে। এটা এমনি এমনি হয়নি। এর পেছনে রয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দক্ষ, সাহসী ও সৎ নেতৃত্ব।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস দমনে সরকার সফল হয়েছে। দেশের মানুষকে একত্র করে জঙ্গি দমনে সফলতা এসেছে। মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি রয়েছে। মাদকের ‘ডিমান্ড, সাপ্লাই’ হ্রাস করা হচ্ছে। মাদক একেবারে নির্মূল করতে না পারলেও নিয়ন্ত্রণে আনা যাবে বলে আশা করেন তিনি।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী ক্ষমতায় এসে এই তিন মেয়াদে পুলিশের জনবল ও সক্ষমতা বাড়িয়েছেন। পুলিশের যখন যেটা প্রয়োজন, প্রধানমন্ত্রী সেটাই দিয়েছেন। হাইওয়ে পুলিশ, শিল্প পুলিশ, ট্যুরিস্ট পুলিশ, কাউন্টার টেররিজম ইউনিট করা হয়েছে, পিবিআই সৃজন করা হয়েছে। নতুন কারাগার নির্মাণের পাশাপাশি বন্দীদের নানা প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। এখন ‘৯৯৯’–এ ফোন করলেই মানুষ নানা রকম সেবা পাচ্ছে। বিজিবিকেও শক্তিশালী করা হয়েছে।
বিভিন্ন খাতে উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে কৃষিমন্ত্রী আবদুর রাজ্জাক বলেন, দেশ স্বাধীন হওয়ার পর অনেকে বলেছিলেন, বাংলাদেশ হবে দারিদ্র্যের মডেল। শেখ হাসিনা প্রজ্ঞা, দক্ষতার মাধ্যমে দেখিয়ে দিয়েছেন, বিদেশি সাহায্যের ওপর বাংলাদেশ নির্ভরশীল নয়। সব ক্ষেত্রে যে উন্নয়ন হয়েছে, তা সারা বিশ্বের জন্য বিস্ময়।
দ্য ইকোনমিস্ট–এর উদ্ধৃতি দিয়ে কৃষিমন্ত্রী বলেন, গণতান্ত্রিক সূচকে নির্বাচনব্যবস্থা এবং বহুদলীয় পরিস্থিতি বাংলাদেশে ভালো, তাই বাংলাদেশ এগিয়েছে। তিনি আরও বলেন, প্রতিদিন পত্রিকা খুললে দেখা যায় গণতন্ত্র ধ্বংস হয়ে গেছে, নির্বাচনব্যবস্থা ভেঙে গেছে। কিন্তু গত ২২ জানুয়ারি ব্রিটিশ সাময়িকী ইকোনমিস্ট তাদের গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স কর্তৃক পরিচালিত জরিপে বিশ্ব গণতন্ত্র সূচকের ফলাফল প্রকাশ করে। জরিপে বাংলাদেশ আট ধাপ এগিয়েছে।
ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেনের সমালোচনা করে কৃষিমন্ত্রী বলেন, তিনি (ড. কামাল) বলেছেন, প্রয়োজনে লাথি মেরে সরকারকে সরিয়ে দিতে হবে। এটা রাজনীতির ভাষা নয়, এটা শিষ্টাচারের মধ্যে পড়ে না। তিনি তাদের পেছন ধরেছেন, যারা মানুষ হত্যা করেছে, পুড়িয়ে মানুষ মেরেছে।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, লাথি দিয়ে নয়, সরকারকে সরাতে হলে জনগণের কাছে যেতে হবে। গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচনের মাধ্যমে সরকারকে সরাতে হবে। কিন্তু তাদের পায়ের নিচে মাটি নেই। তারা জনবিচ্ছিন্ন। খালেদা জিয়া বলেছিলেন, শেখ হাসিনা না পালানো পর্যন্ত আন্দোলন চালাবেন। কিন্তু তিনি এখন দুর্নীতির মামলায় কারাগারে। আর প্রধানমন্ত্রী গণভবনে থেকে দেশ পরিচালনা করছেন।
প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসা করে জাতীয় পার্টির (জেপি) সাংসদ আনোয়ার হোসেন মঞ্জু বলেন, প্রধানমন্ত্রী প্রতিটা জিনিস খুঁটিনাটি দেখেন। প্রতিটা বিষয়ে জ্ঞান রাখেন। বড় রাস্তার পাশে পার্শ্বরাস্তা, বাজারের ওপর ফ্লাইওভার, সড়কবিভাজকে ফুলবাগান দেখে তিনি ভাবেন এখানে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ আছে।
আনোয়ার হোসেন বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার অর্থমন্ত্রীর নেতৃত্বে অর্থনীতি স্থিতিশীল রাখতে সক্ষম হয়েছে। যারা এই সংসদের বাইরে, তারা বলে দেশে গণতন্ত্র নেই। গণতন্ত্রে একটা কাঠামো থাকে। ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা, পৌরসভা, জেলা ও জাতীয় নির্বাচন সরকার বাস্তবায়ন করেছে। গণতন্ত্রের অবকাঠামো স্থাপিত হয়েছে। এখন প্রয়োজন এই গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি উন্নয়ন করা। এটা সময়সাপেক্ষ।
আনোয়ার হোসেন বলেন, উন্নয়ন হয়েছে, কেউ অস্বীকার করে না। যাঁরা সরকারের বিরোধী, তাঁরাও এটা স্বীকার করে নিয়ে নিজেদের দুঃখের কথা বলেন। যাঁরা বাক্স্বাধীনতা সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ইত্যাদির কথা বলেন, তাঁরা একসময় জেলে নিয়েছে জুলুম করেছে।
স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলাম বলেন, এখন সারা বিশ্ব বাংলাদেশকে অনুকরণীয় মনে করেন। এটা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিবারাত্রির পরিশ্রমের ফল।
তাজুল ইসলাম বলেন, এর আগে সঠিক দায়িত্ব পালন না করার কারণে নদীগুলো দূষিত হয়েছে। নদী দূষণমুক্ত করতে না পারলে পরিবেশগত সমস্যা দেখা দেবে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে নদী নিয়ে একটি মহাপরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। অ্যাকশন প্ল্যান করে কাজ করা হচ্ছে।