সংঘাত আরও ঘনীভূত হচ্ছে

রওনক জাহান : কয়েক মাস ধরেই আমাদের মনে এ আশঙ্কা ঘনীভূত হয়ে উঠছিল যে দেশের বড় দুটি দল আলোচনার মাধ্যমে তাদের বিরোধের সমাধান করতে পারবে না। মারামারি, হানাহানি, সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়বে। শেষ পর্যন্ত তা–ই হলো। একই দিনে কর্মসূচি, পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি এবং সামনে আরও কঠোর কর্মসূচি দেখে মনে হচ্ছে, সংঘাত আরও ঘনীভূত হচ্ছে।

আমাদের দেশের ইতিহাসে আলোচনার মাধ্যমে রাজনৈতিক বিরোধ মীমাংসা বা সমাধান করার তেমন কোনো দৃষ্টান্ত নেই। কিন্তু এখন ভাবার সময় এসেছে। আমরা কি সব সময় সেই পুরোনো পথেই হাঁটব? রাস্তায় শক্তি প্রদর্শন করে কিংবা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার অপব্যবহার করে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে জয়লাভ করার চেষ্টা করব? কেন আমাদের বড় দুটি দল আলোচনার মাধ্যমে একটি সহাবস্থানে পৌঁছাতে পারবে না?

দলের নেতা–কর্মীদের বাইরে দেশের জনসাধারণ তো শান্তিপূর্ণ উপায়ে সব বিরোধের সমাধান চায়। সবাই চায় দেশে একটি শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক পরিবেশ বিরাজ করুক। যে পরিবেশে সবাই খোলামনে ভয়ভীতির ঊর্ধ্বে উঠে মত প্রকাশ করতে পারবে, রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করতে পারবে।

আগামী নির্বাচনে একটা অর্থবহ প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে, যেখানে জনগণ নির্ভয়ে ভোট দিতে পারবে—দেশে সে রকম একটি গণতান্ত্রিক পরিবেশ সৃষ্টি করার দায়িত্ব সব রাজনৈতিক দলের। তবে সবচেয়ে বড় দায়িত্ব তো সরকার ও সরকারি দলের। তারা দেশ পরিচালনার দায়িত্বে আছে। তাদেরকেই দূরদর্শিতা দেখাতে হবে। সবাইকে সঙ্গে নিয়ে এই সংকট থেকে উত্তরণের পথ তাদেরকেই বের করতে হবে।

  • রওনক জাহান: রাষ্ট্রবিজ্ঞানী; ডিস্টিংগুইশড ফেলো, সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)
  • সূত্র : প্রথম আলো