সংকটেও রিজার্ভ থেকে যাচ্ছে পায়রা বন্দরের ড্রেজিং ব্যয়

bonikbarta

নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশে ডলারের চরম সংকট। আমদানি নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে পরিস্থিতি সামাল দেয়ার চেষ্টা করছে সরকার। ফলে বিদেশ থেকে কয়লা আনতে না পারায় বেশ কয়েকদিন বন্ধ রাখতে হয়েছে পায়রা বিদ্যুৎ কেন্দ্র। ব্যাংকগুলোর কাছে বর্তমানে দায় মেটানোর ডলারের ঘাটতি। বিদেশে পড়তে যাওয়া শিক্ষার্থীদের ব্যাংকের মাধ্যমে ডলার পাঠানো যাচ্ছে না। অথচ এ সংকটের মধ্যেও পায়রা বন্দরের রাবনাবাদ চ্যানেলের ড্রেজিংয়ের জন্য রিজার্ভ ভেঙে অর্থ পরিশোধ করতে হচ্ছে সরকারকে।

বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে অর্থ নিয়ে গঠন করা বাংলাদেশ ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট ফান্ডের মাধ্যমে (বিআইডিএফ) রাবনাবাদ চ্যানেলের ড্রেজিং প্রকল্পটিতে অর্থায়ন করা হয়েছে। যেটি কিনা এ তহবিল থেকে অর্থায়নকৃত একমাত্র প্রকল্প। ত্রিপক্ষীয় চুক্তির আওতায় এ কাজের জন্য পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষ সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে আগামী তিন বছরে সরকারের কাছ থেকে ৫৬ কোটি ৪৮ লাখ ৮০ হাজার ডলারের ঋণ পাবে। ২ শতাংশ সুদে নেয়া এ ঋণ শোধ করতে হবে সাত বছরের মধ্যে। সুদের অর্ধেক পাবে বিআইডিএফ, বাকিটা সোনালী ব্যাংক। চুক্তির বাধ্যবাধকতা থাকায় চলমান ডলার সংকটের মধ্যেও রিজার্ভ থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের মাধ্যমে সোনালী ব্যাংকের কাছে এ প্রকল্পের অর্থ পাঠানো হয়। রাষ্ট্রীয় ব্যাংকটি পরে সেই অর্থে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জান ডি নুল এনভির বিল পরিশোধ করে। এখন পর্যন্ত রিজার্ভ থেকে ২৬ কোটি ৬৩ লাখ ৮০ হাজার ডলার অর্থায়ন করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

জানতে চাইলে রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংক লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আফজাল করিম বণিক বার্তাকে বলেন, ‘কাজের অগ্রগতির ভিত্তিতে পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষ আমাদের কাছে বিল জমা দেয়। আমরা তখন বাংলাদেশ ব্যাংকের সহায়তায় সেটি পরিশোধ করে থাকি।’

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সালের আগস্টে বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ইতিহাসের সর্বোচ্চ ৪ হাজার ৮০০ কোটি ডলারে উন্নীত হয়। তবে ২০২১-২২ অর্থবছরে রেকর্ড পরিমাণ আমদানির চাপে পড়ে দেশ। এরপর থেকেই শুরু হয় রিজার্ভের ক্ষয়। ২০২২ সালের ডিসেম্বরে রিজার্ভ ছিল ৩ হাজার ৩৮৩ কোটি ৯০ লাখ ডলার। সর্বশেষ চলতি বছরের ৯ আগস্ট তা নেমে এসেছে ২ হাজার ৯৫৩ কোটি ৬৪ লাখ ডলারে। তবে আইএমএফের বিপিএম৬ পদ্ধতি অনুসারে বর্তমানে এ রিজার্ভের পরিমাণ ২ হাজার ৩২৬ কোটি ২ লাখ ডলার। এ পদ্ধতিতে হিসাবের সময় পায়রা বন্দরসহ আরো বেশ কিছু সংস্থা ও তহবিলে দেয়া অর্থ বাদ দেয়া হয়েছে রিজার্ভ থেকে।