জানুয়ারি মাসে শ্রীলঙ্কায় জাতীয় ভোক্তা মূল্যসূচক তার আগের মাসের তুলনায় খানিকটা কমেছে, কিন্তু এখনো তা উঁচু মাত্রায় রয়ে গেছে। দেশটির পরিসংখ্যান বিভাগ জানিয়েছে, গত জানুয়ারি মাসে শ্রীলঙ্কায় মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৫৩ দমশিক ২ শতাংশ। এর আগের মাসে অর্থাৎ ডিসেম্বরে এ হার ছিল ৫৯ দশমিক ২ শতাংশ।
এক বছর আগের তুলনায় জানুয়ারি মাসে দেশটিতে খাদ্যপণ্যের মূল্য বেড়েছে ৫৩ দশমিক ৬ শতাংশ, অন্যদিকে খাদ্যবহির্ভূত পণ্যের দাম বেড়েছে ৫২ দশমিক ৯ শতাংশ। শ্রীলঙ্কার শুমারি ও পরিসংখ্যান বিভাগকে উদ্ধৃত করে বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর দিয়েছে।
গত সপ্তাহে শ্রীলঙ্কায় বিদ্যুতের মূল্য ৬৬ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল বা আইএমএফ থেকে ২৯০ কোটি ডলারের একটি ঋণ পাওয়ার জন্য শ্রীলঙ্কা চেষ্টা করছে এবং সেই চেষ্টার অংশ হিসেবেই দেশটিতে বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়। গত সাত দশকের মধ্যে এই দ্বীপরাষ্ট্র এখন সবচেয়ে খারাপ আর্থিক সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।
বিদ্যুতের এ মূল্যবৃদ্ধি ছিল গত ছয় মাসের মধ্যে দ্বিতীয়। মূল্যস্ফীতি কমার যে প্রবণতা দেশটিতে রয়েছে, বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি তাকে ধীর করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। গত সেপ্টেম্বর থেকেই শ্রীলঙ্কায় মূল্যস্ফীতি কমছিল।
বিনিয়োগ গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিএএলের প্রধান কৌশলবিদ উদিশান জোনাস বলেন, ‘এ হার প্রত্যাশার কাছাকাছি রয়েছে। মূল্যস্ফীতির হিসাবে বিদ্যুতের অবদান কম। সুতরাং এর পরোক্ষ প্রভাব থাকবে। কিন্তু এর ফলে মূল্যস্ফীতি খুব বেশি বাড়বে না, কারণ বেশির ভাগ ব্যবসায়ী বিদ্যুতের বাড়তি খরচ ভোক্তাদের ওপর চাপাতে পারবেন না।’
আগামী সপ্তাহে শ্রীলঙ্কার কেন্দ্রীয় ব্যাংকঋণের সুদের হার পরিবর্তন করবে না বলে আশা করা হচ্ছে। মূল্যস্ফীতি মোকাবিলা করতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক গত বছরে সুদের হার বাড়িয়ে দুই দশকের মধ্যে সবচেয়ে উঁচুতে নিয়ে যায়।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক পূর্বাভাস দিয়েছে যে চলতি বছরের শেষে মূল্যস্ফীতি এক অঙ্কে নেমে আসবে।
শ্রীলঙ্কার জাতীয় ভোক্তা মূল্যসূচক পুরো দেশের খুচরা পর্যায়ের মূল্যস্ফীতির তথ্য সংগ্রহ করে এবং ২১ দিন পরে তা প্রকাশ করে।
অন্যদিকে, রাজধানী কলম্বোর জন্য তৈরি ভোক্তা মূল্যসূচকও জানুয়ারি মাসে কমেছে বলে পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে। গত মাস শেষে এ হার ছিল ৫৪ দশমিক ২ শতাংশ। প্রতি মাসের শেষে কলম্বোর মূল্যস্ফীতির এ তথ্য প্রকাশ করা হয়।