ঢাকা
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করে বলেছেন, সরকারের পেটোয়া বাহিনীর গুলিতে নিহত যুবদল নেতা শাওনের জানাজায় পরিবারের সদস্যদেরও অংশগ্রহণ করতে দেওয়া হয়নি। গত রাতে পুলিশের প্রহরায় তাকে দাফন করা হয়েছে।
আজ শুক্রবার বাদ জুমা রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে শাওনের গায়েবানা জানাজার আগে এসব কথা বলেন মির্জা ফখরুল।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘কী অমানবিক, হৃদয়বিদারক যে তার লাশটি পর্যন্ত সরকার তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে নাই। রাত দুইটার সময় পুলিশি প্রহরায় লাশ নিয়ে গিয়ে সেখানে দাফন করেছে। নেতা–কর্মী, বন্ধু, পরিবারের সদস্য—কাউকেই জানাজায় অংশগ্রহণ করতে দেয়নি।’
মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগের এই ফ্যাসিস্ট সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই গুম, খুন হত্যার মধ্য দিয়েই তারা তাদের একদলীয় শাসন প্রতিষ্ঠিত করতে চায়।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘তারা বিরোধী দল ও মতকে নিশ্চিহ্ন করতে চায়। বিশেষ করে স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের রাজনৈতিক দল বিএনপিকে তারা নির্মূল করতে চায়।’
বিএনপির এই শীর্ষ নেতা বলেন, ‘গত দুই সপ্তাহের মধ্যেই ভোলাতে দুই ভাইয়ের প্রাণ গেছে। এই সরকারের পেটোয়া বাহিনীর গুলিতে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গুলিতে। গতকাল নারায়ণগঞ্জে আরেক ভাইয়ের প্রাণ গেল, রক্ত ঝরল।’
মির্জা ফখরুল অভিযোগ করে বলেন, গতকাল প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ছিল, কোনো কর্মসূচি ছিল না সরকারের বিরুদ্ধে। সেই প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে সারা দেশে অসংখ্য জায়গায় একইভাবে সরকারের পুলিশ বাহিনী গুলি চালিয়েছে। নারায়ণগঞ্জে একজন শাহাদাতবরণ করেছে।
শাওনের রক্ত কখনো বৃথা যেতে পারে না উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘তাঁর আত্মদান, আত্মত্যাগ আমাদের আরও উচ্ছ্বসিত করবে। গণতন্ত্রের মুক্তির জন্য যে সংগ্রাম শুরু করেছি, যে লড়াই শুরু করেছি, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য যে সংগ্রাম–লড়াই শুরু করেছি, আমরা শান্তিপূর্ণভাবে এই আন্দোলনে দেশের জনগণকে সম্পৃক্ত করে রাজপথে আন্দোলনের মধ্য দিয়ে বিজয় নিশ্চিত করব।’
ফখরুল বলেন, ‘শাওনের এই আত্মত্যাগকে অবশ্যই আমরা শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করব। এই শোককে আমরা শক্তিতে পরিণত করব এবং সব শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ করে তাদের পরাজিত করব।’
গায়েবানা জানাজা পড়ান জাতীয়তাবাদী ওলামা দলের আহ্বায়ক মাওলানা নেছার উদ্দিন। এরপর দোয়া করা হয়।
এ সময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালাম, সদস্যসচিব রফিকুল আলম মজনু, বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম আজাদ, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য নাজিম উদ্দিন আলম, যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, যুবদলের সাবেক সভাপতি সাইফুল আলম, বিএনপির স্বেচ্ছাসেবকবিষয়ক সম্পাদক মীর শরাফত আলী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।