শহিদুলের মুখ চেপে ধরা মুহূর্ত পেল আন্তর্জাতিক পুরস্কার
আলোকচিত্রী শহিদুল আলম যেন সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে না পারেন, সে জন্য পুলিশের একজন সদস্য তার মুখ চেপে ধরেছেন—এমন একটি ‘ইন্টারন্যাশনাল ফটো অ্যাওয়ার্ড ২০১৮’ (আইপিএ) জয় করেছে।
ডেস্ক রিপোর্ট
আদালতে নেওয়ার সময় আলোকচিত্রী শহিদুল আলমের মুখ চেপে ধরেছেন পুলিশের একজন সদস্য। ছবি: শুভ্র কান্তি দাস
চলতি বছরের ৬ আগস্ট শহিদুল আলমকে আদালতে তোলার সময় তিনি সাংবাদিকদের বলছিলেন, গ্রেফতারের পর তাকে নির্যাতন করা হয়েছে। এ সময় যেন কথা বলতে না পারেন শহিদুল, তাই তার মুখ চেপে ধরেন সঙ্গে থাকা একজন পুলিশ সদস্য। ওই মুহূর্তের ছবিটি ক্যামেরাবন্দী করেন প্রথম আলোর শুভ্র কান্তি দাস। ইন্টারন্যাশনাল ফটো অ্যাওয়ার্ড-জয়ী এই ছবিটি এখন লড়বে লুসি অ্যাওয়ার্ডের জন্য।
প্রতি বছর বিশ্বব্যাপী পেশাদার, শৌখিন ও শিক্ষার্থী পর্যায়ের আলোকচিত্রীদের ছবি নিয়ে প্রতিযোগিতামূলক আয়োজন থেকে যাচাই-বাছাই করে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ‘ইন্টারন্যাশনাল ফটো অ্যাওয়ার্ড’ দেওয়া হয়। বিভিন্ন ক্যাটাগরির প্রথম পুরস্কার বিজয়ীরা লুসি অ্যাওয়ার্ডের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। লুসি অ্যাওয়ার্ডের গ্র্যান্ড বিজয়ীকে (ইন্টারন্যাশনাল ফটোগ্রাফার অব দ্য ইয়ার) ১০ হাজার ডলার ও লুসি ট্রফি দেওয়া হয়।
চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত শৌখিন ও শিক্ষার্থী আলোকচিত্রীরা ‘ডিসকভারি অব দ্য ইয়ার’ ক্যাটাগরিতে লড়েন, যার মূল্যমান পাঁচ হাজার ডলার ও লুসি ট্রফি। ছয়জন আলোকচিত্রী ‘ডিপার পার্সপেকটিভ ফটোগ্রাফার অব দ্য ইয়ার’ ক্যাটাগরিতে লড়েন, যেখানে বিজয়ী একজন পান পাঁচ হাজার ডলার ও লুসি ট্রফি।
এ ছাড়াও ছয়জন চলমান (ভিডিও) আলোকচিত্র ক্যাটাগরিতে (মুভিং ইমেজ ফটোগ্রাফার অব দ্য ইয়ার) লড়েন এবং চূড়ান্ত বিজয়ী পান ২,৫০০ ডলার ও লুসি ট্রফি।
অলাভজনক প্রতিষ্ঠান লুসি ফাউন্ডেশন প্রতি বছর ইন্টারন্যাশনাল ফটো অ্যাওয়ার্ড দিয়ে থাকে। প্রধান প্রধান ক্যাটাগরির চূড়ান্ত জয়ীরা লুসি অ্যাওয়ার্ডের জন্য মনোনীত হন।
আলোকচিত্রী শহিদুল আলমকে ২০১৮ সালে সম্মানসূচক পুরস্কার ‘হিউম্যানিটারিয়ান অ্যাওয়ার্ড’ দিচ্ছে লুসি ফাউন্ডেশন।
আগামী ২৮ অক্টোবর লুসি অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হবে। ওই দিন শহিদুল আলমের হাতেও ‘হিউম্যানিটারিয়ান অ্যাওয়ার্ড’ তুলে দেওয়ার কথা। যদিও তিনি কারাগারে বন্দী।
গত আগস্টে নিরাপদ সড়কের দাবিতে স্কুলের শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নামেন। আন্দোলনের সময় ৫ আগস্ট রাতে রাজধানীর ধানমন্ডির বাসা থেকে শহিদুলকে আটক করেন ডিবি পুলিশের সদস্যরা। এরপর তার বিরুদ্ধে তথ্যপ্রযুক্তি আইনে মামলা দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়। তার বিরুদ্ধে ফেসবুক ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় সরকারের বিরুদ্ধে ‘অপপ্রচার ও শিক্ষার্থীদের আন্দোলন নিয়ে মিথ্যা তথ্য’ দিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করার অভিযোগ আনা হয়।
প্রিয় সংবাদ/রিমন/আজাদ চৌধুরী