রোহিত-কোহলির হাহাকার

দুশো পে কোহলি… দুশো পে রোহিত…। মায়ের কাছে বাচ্চাটির বায়না অবশ্য শুভমান গিল। তার গিলের সেভেনটি সেভেন জার্সিটাই চাই। হকার বেচারা শুকনা মুখে জানালেন, তাঁর কাছে কেবল রোহিত আর বিরাটই পড়ে রয়েছে। দুইশ রুপিতে সেটাই নাকি চলছে এখন।

গতকাল ম্যাচ শুরুর কয়েক ঘণ্টা আগেও স্টেডিয়ামের সামনে নীল সমুদ্রের তোড়ে শুধুই রোহিত আর বিরাটের আরাধনা। লাখের গ্যালারিতে শুধুই তাদের বন্দনা। তাদের বিশ্বাস– এ দু’জনই পথিকৃৎ, তারা দু’জনই অমোঘ কোনো অন্বেষণে অশেষ দ্যুতি ছড়িয়ে বিজয় ছিনিয়ে আনতে পারেন। সেই কাকডাকা ভোর থেকেই গোটা আহমেদাবাদে নীল জার্সির কলতান। ম্যাচ শুরুর পর টইটম্বুর গ্যালারিতে সেই হাজার ডেসিবলের স্লোগান– জয় হো…।

এদিনই যেমন ভারতের রান যখন ৪০, তখন রোহিতের একারই ৩২। শুভমান গিলের স্ট্রাইক রেট যেখানে ছিল ৫৭, সেখানে রোহিত ছুটেছেন ১৫১-এর গতিতে। রোহিতের এই শুরুটাই ভারতকে গোটা আসরে আত্মবিশ্বাস দেখিয়েছে। এদিন ম্যাক্সওয়েলের ওপর উপর্যুপরি চড়াও হতে গিয়ে আউট হয়েছেন ৪৭ রানে। একটি রেকর্ড এদিন তিনি মাঠে রেখে গেছেন, ১১ ম্যাচে ৫৯৭ রান। রেকর্ড বলছে, এর আগে বিশ্বকাপের কোনো অধিনায়ক এত রান করেননি। গত বিশ্বকাপে নিউজিল্যান্ডের কেন উইলিয়ামসন করেছিলেন ৫৭৮। এদিন রোহিত আর কোহলিকে যখন একসঙ্গে বাইশ গজে পেয়েছিল আহমেদাবাদ, চার-পাঁচ গুণ দাম দিয়ে টিকিট কেনা দর্শক যেন হাতে চাঁদ পেয়েছিল তখন। দুইশ রুপির সেই জার্সির সরল ভালোবাসা চোখে পড়েছিল প্রেস বক্সের ভারতীয় সাংবাদিকদের মধ্যেও।

মাঠের ডিজে নাকি কথা দিয়েছিলেন, পুরো গ্যালারিকে তাতিয়ে রাখবেন। কিন্তু তিনি ভুল জানতেন। রোহিত আর বিরাটের আরাধনা ফুরিয়ে গেলে কোনো কিছু দিয়েই বোধ হয় নীল সমুদ্রে ঢেউ তোলা যায় না। এই বিশ্বকাপে ১১ ম্যাচে ৭৬৫ রান করে বিরাট কোহলি যে রেকর্ড গড়েছেন, তা কবে কোথায় কে ভাঙতে পারবে, তা হয়তো সময়ই বলে দেবে। তবে সময় বোধ হয় এটা বলে দিয়েছে, প্রজন্ম তুমি রোহিত-বিরাট উত্তর কোনো ঠিকানা খুঁজে নাও। হয়তো ওই বাচ্চা ছেলেটির মতোই শুভমান গিলের কোনো জার্সি নম্বরে।