ঢাকা
বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির ঘটনায় মানি লন্ডারিং আইনে করা মামলায় তদন্ত প্রতিবেদন জমা পড়েনি আদালতে। আগামী ১ জানুয়ারি মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নতুন তারিখ ঠিক করেছেন আদালত। ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালত বুধবার এ আদেশ দেন। এ নিয়ে মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার সময় ৬০ বার পেছানো হলো।
আদালত–সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, ২ অক্টোবর তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার দিন ধার্য ছিল। সেটি ছিল এই প্রতিবেদন জমা দেওয়ার ৫৯তম তারিখ। সেদিন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রায়হান উদ্দিন খান তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য ১৮০ কার্যদিবস সময় বাড়ানোর আবেদন করেন। পরে আদালত ৪ অক্টোবর আবেদন বিষয়ে শুনানির দিন ধার্য করেন। একই সঙ্গে তদন্ত কর্মকর্তাকে শুনানির সময় হাজির থাকার নির্দেশ দিয়েছিলেন। অবশ্য তদন্ত কর্মকর্তা বিদেশে অবস্থান করায় তিনি সেদিন আদালতে উপস্থিত হননি। পরে আদালত তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য আরও ৩০ কার্যদিবস সময় বাড়ানোর আদেশ দেন। সেই ধারাবাহিকতায় বুধবার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা ছিল।
২০১৬ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার চুরি হয়। অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা সুইফট পেমেন্ট পদ্ধতিতে প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইয়র্কে রাখা বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে ওই বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নেয়। এ অর্থ ফিলিপাইনের মাকাতি শহরে রিজাল ব্যাংকের শাখায় চারটি অ্যাকাউন্টে যায় এবং সেখান থেকে দ্রুত উত্তোলন করা হয়। পরে বিভিন্ন সময় ১ কোটি ৫০ লাখ ডলার ফেরত আসে। এখনো ৬ কোটি ৬০ লাখ ডলার উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।
ঘটনার ৩৯ দিন পর বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে মতিঝিল থানায় বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের অর্থ চুরি, মানি লন্ডারিং ও সাইবার অপরাধ দমন আইনের ধারায় মামলা করা হয়। পরে ওই মামলার তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় সিআইডিকে। মামলার তদন্ত-সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলেছেন, রিজার্ভ চুরির সময় বাংলাদেশ ব্যাংকের অন্তত ১৩ জনের গাফিলতি, অবহেলা ও দায় ছিল। রিজার্ভ থেকে অর্থ চুরির তথ্য এক দিন পর জানতে পারলেও বাংলাদেশ ব্যাংক তা ২৪ দিন গোপন রাখে। ৩৩তম দিনে বাংলাদেশ ব্যাংক বিষয়টি অর্থমন্ত্রীকে আনুষ্ঠানিকভাবে জানায়।