জামালপুর
বিএনপির রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের রূপরেখা পাওয়ার পর আওয়ামী লীগের মুখ বন্ধ হয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। আজ মঙ্গলবার বিকেল চারটায় জামালপুরে এক আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
শহরের শফি মিয়ার বাজার এলাকায় জেলা বিএনপির কার্যালয়ের পাশের একটি ভবনে ‘আন্দোলনের ১০ দফা ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ঘোষিত রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের রূপরেখা ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষণ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, সত্যি কথা বলতে বিএনপির রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের রূপরেখা পাওয়ার পর আওয়ামী লীগের মুখ বন্ধ হয়ে গেছে। কারণ, এই রূপরেখায় তারা কিছুই ভুল বের করতে পারেনি, যেটা নিয়ে তারা বিরোধিতা করবে। তারেক রহমানের দেওয়া রূপরেখা নিয়ে আওয়ামী লীগ যে বিরোধিতা করবে, তার কিছুই এখানে দেওয়া হয়নি। সবচেয়ে বড় কথা বিরোধিতা করার মতো কোনো ভাষা আওয়ামী লীগ খুঁজে পায়নি।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, তারা (আওয়ামী লীগ) এটাকে বলছে, বিএনপির স্টান্টবাজি। এই রূপরেখার ওপর তারা কোনো বক্তব্য বা মন্তব্য করতেও সক্ষম হয়নি। এই রূপরেখা এমন একটি রূপরেখা, যা সবার কাছে গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে। দেশে-বিদেশে সব শ্রেণি–পেশার মানুষের মনের প্রত্যাশার প্রতিফলন এই রূপরেখার মাধ্যমে ঘটেছে।
জামালপুর জেলা বিএনপির সভাপতি মো. ফরিদুল কবির তালুকদারের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক শাহ মো. ওয়ারেছ আলী মামুনের সঞ্চালনায় সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ ও সহসাংগঠনিক সম্পাদক মো. শরিফুল আলম।
আমীর খসরু আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ যে গভীর গর্তের মধ্যে পড়েছে, সেই গর্ত থেকে দেশকে উদ্ধার করে রাষ্ট্র মেরামত করতে হবে। তারা (আওয়ামী লীগ) রাষ্ট্রের প্রতিটি কাঠামো ভেঙে ফেলেছে। এ জন্য রাষ্ট্র মেরামত করতে হবে। বাংলাদেশের লাখ লাখ মানুষ বিএনপির সঙ্গে রাস্তায় নেমেছে স্বৈরাচার সরকারের পতনের জন্য। কিন্তু একটি প্রশ্ন সবার মনে আসছে। কেউ বলছে, আবার কেউ বলছে না। সেটা হলো ফ্যাসিস্ট সরকারের বিদায় হলে বাংলাদেশের ভাগ্যের কী পরিবর্তন হবে? আমরা আবার আরেকটা ফ্যাসিস্ট সরকার দেখব না, তার গ্যারান্টি কী? মানুষ এটা জানতে চায়। মানুষের মনের সব প্রশ্নের উত্তর রূপরেখার মধ্যে তুলে ধরা হয়েছে।’
বিএনপির এই কেন্দ্রীয় নেতা বলেন, ‘বিএনপি শুধু ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য আন্দোলন-সংগ্রাম করছে না। এটা বাংলাদেশের মানুষের সংগ্রাম। আমরা যে আন্দোলন করছি, এটা দেশের প্রতিটি মানুষের সংগ্রাম। গণতন্ত্র, রাষ্ট্রমালিকানা, মানবাধিকার, আইনের শাসন, বাক্স্বাধীনতা, জীবনের নিরাপত্তা, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও মানুষের জীবনযাপনের স্বাধীনতা কেড়ে নেওয়া হয়েছে। সুতরাং যে পরিবর্তনটা আসবে, কীসের মাধ্যমে পরিবর্তনটা আসবে, এ জন্য তারেক রহমান রূপরেখা দিয়েছেন। এই রূপরেখা দেওয়ার মাধ্যমে তারেক রহমানের নেতৃত্ব একটি অন্য উচ্চতায় চলে গেছে।’
আমীর খসরু বলেন, শেখ হাসিনার ফ্যাসিস্ট সরকারকে বিদায় করার পর নেতারা মানুষকে নিয়ে কী ভাবছেন, কী চিন্তা করছেন, অনেকের মনে এই প্রশ্ন ছিল। রূপরেখার মাধ্যমে ওই প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন তারেক রহমান। পরিষ্কারভাবে দিয়েছেন, স্বচ্ছতার সঙ্গে দিয়েছেন, দৃঢ়তার সঙ্গে দিয়েছেন। রূপরেখার মধ্যে কোনো ধরনের গোঁজামিল দেখতে পাবেন না।
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী আরও বলেন, অনেকেই বিশ্বাস করতে পারছেন না, বিএনপি এ ধরনের একটি অভূতপূর্ব রূপরেখা দিতে পারে। রূপরেখায় কল্যাণকর রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার কথা বলা হয়েছে। সবকিছুকে মাথায় রেখেই রূপরেখা দেওয়া হয়েছে। রূপরেখাকে দেশ ও বিদেশের মানুষ সমর্থন দিয়েছেন এবং প্রশংসা করেছেন।