- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৮:৪৮
আমিরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমানসহ নেতাকর্মী ও আলেম-ওলামাদের মুক্তি, মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং কেয়ারটেকার সরকার প্রতিষ্ঠার দাবিতে রাজধানীতে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ।
সোমবার (১৮ সেপ্টেম্বর) কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমির অ্যাভোকেট ড. হেলাল উদ্দিনের নেতৃত্বে বিক্ষোভ মিছিলটি রাজধানীর পান্থপথ থেকে শুরু হয়ে আশপাশের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে প্রতিবাদ সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।
মিছিল ও সমাবেশে আরো উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি যথাক্রমে দেলওয়ার হোসাইন, কামাল হোসাইন, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যাপক মোকাররম হোসাইন খান, মাওলানা আবু সাদিক, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য বিশিষ্ট শ্রমিকনেতা আব্দুস সালাম, আব্দুর রহমান, কামরুল আহসান, ইসলামী ছাত্রশিবিরের ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি আলাউদ্দিন শেখ, ঢাকা মহানগরী পূর্বের সেক্রেটারি জাফর সাদিক, ঢাকা কলেজ সেক্রেটারি মুসআব আব্দুল্লাহসহ জামায়াতে ইসলামীর বিভিন্ন থানা আমির-সেক্রেটারিসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা।
অ্যাভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন বলেন, ক্ষমতাসীন আওয়ামী সরকার অবৈধ পথে ক্ষমতায় এসে এদেশের জনগণের সকল অধিকারকে হরণ করেছে। গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে। এই পরিস্থিতিতে জনগণের ভোট ও ভাতের অধিকার ফিরিয়ে আনার দাবি শুধুমাত্র জামায়াতে ইসলামীর নয়, এটা গোটা বাংলাদেশের জনগণের দাবি। আর নিজেদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় দেশের জনগণ রাজপথে নেমে এসেছে। দেশের জনগণ পরিবর্তন চাই, এই স্বৈরাচারী আওয়ামী সরকারের হাত থেকে মুক্তি চাই। তাই সরকারকে বলতে চাই জনগণের সকল ন্যায্য অধিকার ফিরিয়ে দিন। বিদেশে ধর্ণা দিয়ে এবার আর লাভ হবে না। ভোট ডাকাতি করে বাংলাদেশের জনগণের সাথে এবার প্রতারণা করা যাবে না। তাই বিদেশীদের কাছে ধর্না নয়, কেয়ারটেকার সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করুন। অন্যথায় জনগণই আন্দোলন সংগ্রামের মাধ্যমে আপনার পতন নিশ্চিত করবে।
তিনি আরো বলেন, সরকার আইন আদালতকে ব্যবহার করে বিরোধী রাজনীতিবিদদের সাজা দিয়ে নির্বাচনে অযোগ্য করতে চাই। এজন্য হঠাৎ করেই বিরোধী নেতাদের সকল মামলায় সুপারসনিক গতি দেখা যাচ্ছে। কোর্টে আইনজীবীদেরকে জেরা করার সময় দেয়া হচ্ছে না। কোনো কোনো আসামির আইনজীবীকে সময়সীমা বেঁধে দেয়া হচ্ছে। মামলার সাক্ষীদের বিশেষ ব্যবস্থায় স্টেনোগ্রাফারদের মাধ্যমে জবানবন্দী টাইপ করা হচ্ছে। নিয়ম হচ্ছে উন্মুক্ত আদালতে সাক্ষী জবানবন্দী দেবেন, সেটিই রেকর্ড হবে। কিন্তু সরকারের নির্দেশে এ সবের ব্যত্যয় ঘটিয়ে ঢাকার আদালগুলোতে বিচারকার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। এতেই প্রমাণিত হয় আওয়ামী লীগের পায়ের তলায় মাটি নেই। এটা তারা ভালো মতোই বুঝে গেছেন। তাই এখন বিরোধীদের আটকিয়ে ষড়যন্ত্র করে আবারো কিভাবে ক্ষমতায় থাকা যায় সেই অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। জনগণ তাদের সকল অপচেষ্টাকে প্রতিহত করবে ইনশা আল্লাহ।
অ্যাভোকেট ড. হেলাল আরো বলেন, সরকার জামায়াত নেতাদেরকে গ্রেফতার করে ও কারাগারে বন্দী রেখে জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনকে বন্ধ করতে চায়। আমরা বলতে চাই বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীকে জুলুম নির্যাতন চালিয়ে ও কোনো পেশীশক্তি দিয়ে এদেশ থেকে নিঃশেষ করা যাবে না বরং জামায়াত আরো বেশী শক্তি নিয়ে জনগণের অধিকার আদায়ের সংগ্রামে ঝাপিয়ে পড়বে ইনশা আল্লাহ। সরকার আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে মিথ্যা মামলায় প্রহসনের বিচারে সাজা দিয়ে দীর্ঘদিন কারাগারে বন্দী রেখেছিল। এরপর যথাযথ চিকিৎসা সেবা প্রদান না করে হত্যা করেছে। অপরদিকে আমিরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমান, সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, নায়েবে আমির আ ন ম শামসুল ইসলাম, সহ-সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিনসহ দেশ বরেণ্য আলেম ওলামাদের দীর্ঘদিন থেকে কারাগারে আটক রেখেছে। আমরা অবিলম্বে জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষ নেতাসহ সকল আলেম ওলামাদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানাচ্ছি। অন্যথায় দেশবাসী রাজপথের আন্দোলনের মাধ্যমেই তাদেরকে মুক্ত করে আনবে ইনশা আল্লাহ। তিনি জনগণের অধিকার আদায়ের আন্দোলনে সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে রাজপথে ভূমিকা পালনের উদাত্ত আহ্বান জানান।
আজকের মিছিল শেষে সমাবেশে অতর্কিত হামলা, লাঠিচার্জ ও গ্রেফতার করে পুলিশ। এ সময় ঘটনাস্থল ও আশপাশের এলাকা থেকে অসংখ্য নেতাকর্মীদের আটক করে তারা। এ ঘটনার তাৎক্ষণিক তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমির নূরুল ইসলাম বুলবুল এবং কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ।
প্রেস বিজ্ঞপ্তি