- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ০২ জানুয়ারি ২০২২, ২১:৪৯
চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে গত বছরের একই সময়ের তুলনায় বেড়ে ২৮ দশমিক ৪১ ভাগ বেড়েছে।
রোববার রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) বরাত দিয়ে এই তথ্য জানায় বার্তা সংস্থা বাসস।
ইপিবির সর্বশেষ হালনাগাদ তথ্যে জানা যায়, চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে রফতানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিলো দুই হাজার এক শ’ ৩৮ কোটি ৪০ লাখ ডলার। এর বিপরীতে আয় হয়েছে দুই হাজার চার শ’ ৬৯ কোটি ৮৫ লাখ ডলার। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে রফতানি আয় বেশি হয়েছে ১৫ দশমিক ১৫ ভাগ।
গত অর্থবছরের একই সময়ে আয় ছিলো এক হাজার নয় শ’ ২৩ কোটি ৩৪ লাখ ডলার।
অন্যদিকে, একক মাস হিসেবে সর্বশেষ ডিসেম্বর মাসে রফতানি আয় আগের বছরের একই মাসের তুলনায় ৪৮ দশমিক ২৭ শতাংশ বেড়েছে।
ডিসেম্বর মাসে তিন শ’ ৯১ কোটি ১২ লাখ ডলার লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে রফতানি আয় হয়েছে চার শ’ ৯০ কোটি ৭৬ লাখ ডলার। লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় গত মাসে রফতানি আয় হয়েছে ২৫ দশমিক ৪৫ শতাংশ বেশি। গত অর্থবছরের ডিসেম্বর মাসে রফতানি আয়ের পরিমাণ ছিল তিন শ’ ৩০ কোটি ৯৮ লাখ ডলার।
প্রধান রপ্তানি পণ্য পোশাক খাতের রপ্তানি আয় ভাল হওয়ায় রফতানিতে ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি দেখা যাচ্ছে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা।
এই বিষয়ে রফতানিমুখী শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, ‘ইউনিট প্রতি পোশাকের মূল্য বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি ক্রেতাদেশের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় রফতানির অবস্থা ভালো। যেভাবে আমরা ক্রেতাদেশ পাচ্ছি, তাতে মনে করি আগামী কয়েক মাস প্রবৃদ্ধির এই ধারা ধরে রাখতে পারবো।’
ইপিবির হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী, তৈরি পোশাকের রফতানি আয় ও প্রবৃদ্ধি উভয়ই লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় বেড়েছে। এক হাজার সাত শ’ ২৭ কোটি ৬৩ লাখ ডলার লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে রফতানি আয় দাঁড়িয়েছে এক হাজার নয় শ’ ৯০ কোটি ডলার। প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২৮ দশমিক শূন্য ২ শতাংশ। গতবছরের একইসময়ে এই খাতে রফতানি ছিল এক হাজার পাঁচ শ’ ৫৪ কোটি ৫৫ লাখ ডলার।
জুলাই-ডিসেম্বর সময়ে নিট পণ্যের (সোয়েটার, টি-শার্ট জাতীয় পোশাক) রফতানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল নয় শ’ ৫৯ কোটি ৩৩ লাখ ডলার। এর বিপরীতে আয় হয়েছে এক হাজার এক শ’ ১৬ কোটি ১৬ লাখ ডলার। এক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধি দাঁড়িয়েছে ৩০ দশমিক ৯১ শতাংশ। গত অর্থবছরের একই সময়ে রপ্তানির পরিমাণ ছিল ৮৫২ কোটি ৬১ লাখ ডলার।
আলোচ্য সময়ে ওভেন পণ্যের (শার্ট, প্যান্ট জাতীয় পোশাক) রফতানি আয় আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় বেড়েছে। এক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২৪ দশমিক ৫০ শতাংশ। সাত শ’ ৬৮ কোটি ৩০ লাখ ডলার লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ওভেন পণ্য রফতানি হয়েছে আট শ’ ৭৩ কোটি ৯০ লাখ ডলারের। গতবছরের একই সময়ে এর পরিমাণ ছিল সাত শ’ এক কোটি ৯৩ লাখ ডলার।
একক মাস হিসেবে ডিসেম্বর মাসে নিটওয়্যার পণ্য রপ্তানি ৫৬ দশমিক ৫৭ শতাংশ এবং ওভেন পোশাক ৪৮ দশমিক ১৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এক মাসে দুই শ’ ১৭ কোটি ৬০ লাখ ডলারের নিটওয়্যার পণ্য এবং ওভেন পোশাক ১৮৬ কোটি ৮৪ লাখ ডলারের রফতানি হয়েছে।
জুলাই-ডিসেম্বর এই ছয় মাসে অন্যান্য পণ্যের মধ্যে প্লাস্টিক পণ্যের রফতানি আয় বেড়েছে। এই খাতে রফতানি আয়ের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে সাত কোটি ১০ লাখ ডলার, যার প্রবৃদ্ধি ৩৪ দশমিক ১৫ শতাংশ। কৃষিজাত পণ্য রপ্তানির আয় বেড়েছে উল্লেখ করার মত। এই সময়ে কৃষিজাত পণ্য রফতানি হয়েছে ৬৫ কোটি ৪০ লাখ ডলারের, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ২৪ দশমিক ৬২ শতাংশ বেশি।
আলোচ্য সময়ে ৫৬ কোটি ৩৯ লাখ ডলারের চামড়া ও চামড়জাত পণ্যের রফতানি হয়েছে। এক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২৬ দশমিক ৪১ শতাংশ। এই সময়ে মাছ রফতানি হয়েছে ৩৩ কোটি ৯০ লাখ ডলারের, যা গতবছরের একই সময়ের তুলনায় ২১ দশমিক ২ শতাংশ বেশি। এছাড়া টেরিটাওয়েল, সিরামিক, প্রকৌশল পণ্য, গ্লাস, বিল্ডিং নিমার্ণ সামগ্রী, হোম টেক্সটাইল, হস্তশিল্পসহ বেশিরভাগ পণ্যের রপ্তানি আয়ও বেড়েছে।
সূত্র : বাসস