সিলেট
যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে কোনো তত্ত্বাবধায়ক সরকার চায় না বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন। আজ শুক্রবার বিকেলে সিলেটে একটি অনুষ্ঠানে শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এ কথা বলেন।
বিকেল চারটায় সিলেট জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে মোমেন ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে অসহায় ও দুস্থ মানুষের মধ্যে আর্থিক অনুদান দেওয়ার পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের উন্নয়নে খুবই খুশি। আমাদের উন্নয়নের সহযোগী হতে চায় তারা। সে জন্য আমাদের প্রতি তাদের বিশেষ নজর। আমরা একটা আদর্শ মডেল দেশ হয়েছি। তারা চায়, আমাদের যে নির্বাচন হবে, সেটা যেন ফ্রি অ্যান্ড ফেয়ার (সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ) হয়। তারা কোনো তত্ত্বাবধায়ক সরকার চায় না। তারা আমাদের যে নিয়ম আছে, আমাদের দেশের আইন অনুযায়ী ইলেকশন চায়। স্বচ্ছ নির্বাচনের জন্য আমরা কী কী তৈরি করেছি, ভোটার লিস্ট তৈরি করেছি, ফটো আইডি দিয়ে, ব্যালট বাক্স তৈরি করেছি স্বচ্ছ। আমরা স্ট্রং একটা ইলেকশন কমিশন করেছি—এগুলোতে তারা খুশি হয়েছে।’
এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র চায় ইলেকশনের সময় যেন মারামারি কম হয়। তাদের দেশেও গত জানুয়ারির ৬ তারিখ কয়েকজন লোক মারা গেছে কংগ্রেসের। সে জন্য তারা চাইছে যে বাংলাদেশে একটা আদর্শ নির্বাচন করে পৃথিবীকে দেখাবে যে আমরা খুব ভালো। বাংলাদেশ ইজ আ ল্যান্ড অব ম্যাজিক। আমরা যা চাই, আমরা পারি। এক সময়ে রানা প্লাজার ঝামেলা হলো, এখন পৃথিবীর মধ্যে ১০টা সবচেয়ে ইকো-ফ্রেন্ডলি ফ্যাক্টরি হচ্ছে। এর ৮টিই হচ্ছে বাংলাদেশে।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘তারা চায়, আমরা সুন্দর ও স্বচ্ছ নির্বাচন করি। তবে স্বচ্ছ নির্বাচন শুধু চাইলেই হবে না। সে জন্য সব দলের সক্রিয় সহযোগিতা-আন্তরিকতা প্রয়োজন। সরকারি দল, বিরোধী দল, ভোটার যাঁরা আছেন, বিভিন্ন প্রশাসনের লোক আছেন—প্রত্যেকেরই আন্তরিকতা প্রয়োজন। শেখ হাসিনা সরকার একটি ফ্রি-ফেয়ার ইলেকশন করতে বদ্ধপরিকর। সাহায্য করা দরকার অন্যান্য সব দলের। তাদের আন্তরিকতা নিয়ে আসতে হবে। নির্বাচন ছাড়া সরকার গঠনের কোনো অন্য পথ জানা নেই।’
সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিদেশি পর্যবেক্ষকের ব্যাপারে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘দুনিয়ার কোনো দেশে বিদেশি লোক নেয় না। আমরা এক দেশ যেখানে বিদেশি লোক আনি। গতবার ২৫ হাজার লোক আসছে। এগুলো আনলে ট্যাক্স বাড়বে। তাদের ট্যাক্স দিয়ে থাকা-খাওয়ার জায়গা দিতে হবে। ট্যাক্স বাড়ালে আবার চিৎকার শুরু করবেন। দুনিয়ার কোনো জায়গায় বিদেশি পর্যবেক্ষক নেয় না। আমরা তবুও অ্যালাউ করেছি।’
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের প্রয়োগ নিয়ে আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়ার ব্যাপারে আব্দুল মোমেন বলেন, ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সম্পর্কে আমরা বলেছি, কোনো কোনো ক্ষেত্রে এর ব্যবহারটি ঠিকমতো হয়নি। দুনিয়ার সব দেশেই আইন আছে। আমেরিকাতে আরও কঠিন আইন আছে। যেখানে এর ব্যত্যয় হয়েছে, সেখানে আমরা রেক্টিফাই (সংশোধন) করব এবং তাতে আমেরিকা সন্তুষ্ট হয়েছে। তারা আইনটি পরিবর্তনের জন্য বলেনি। বলেছে যে অ্যাপ্লিকেশনটা অ্যাবিউসড বা অপপ্রয়োগ না হয়।’