রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের কার্যালয় ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেছেন, চলমান যুদ্ধ বন্ধে ইউক্রেনকে কিছু শর্ত বেঁধে দিয়েছে রাশিয়া। কিয়েভ যদি এ শর্তগুলো পূরণ করতে পারে, তবে মুহূর্তের মধ্যেই সামরিক অভিযান বন্ধ করে দেবে রাশিয়া। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে পেসকভ আরও বলেছেন, ইতিমধ্যে এ শর্তগুলোর ব্যাপারে ইউক্রেনকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ভোরে ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরু করে রাশিয়া। চলমান সংঘাত বন্ধে ইতিমধ্যে বেলারুশ সীমান্তে তিন দফা বৈঠক করেছে রাশিয়া ও ইউক্রেন।
গতকাল সোমবার গোমেল শহরে তৃতীয় দফার বৈঠক শেষে ইউক্রেনের প্রতিনিধিদলের সদস্য ও প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা মিখাইলো পোদোলিয়াক এক ভিডিও বার্তায় বলেন, আলোচনায় বেসামরিক নাগরিকদের নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নেওয়ার বিষয়ে সামান্য অগ্রগতি হয়েছে। কিন্তু সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে উল্লেখযোগ্য কিছু হয়নি। যুদ্ধবিরতি নিয়ে দুই পক্ষের আলোচনা চলবে। অন্যদিকে, রাশিয়ার প্রতিনিধিদলের সদস্য ভ্লাদিমির মেদিনস্কি বলেছেন, এ বৈঠক থেকে ইতিবাচক কিছু আসবে কি না, তার জন্য অপেক্ষা করতে হবে।
তৃতীয় দফার এ বৈঠকের প্রস্তুতি চলার সময় রয়টার্সকে সাক্ষাৎকার দেন ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ। তিনি বলেন, চলমান অভিযান বন্ধে কিয়েভকে কিছু শর্ত দেওয়া হয়েছে। এগুলো হলো ইউক্রেনকে সামরিক পদক্ষেপ বন্ধ করতে হবে, নিরপেক্ষতা নিশ্চিতের লক্ষ্যে সংবিধানে পরিবর্তন আনতে হবে, ক্রিমিয়াকে রাশিয়ার ভূখণ্ডের অংশ বলে স্বীকার করতে হবে এবং দোনেৎস্ক ও লুহানস্ক অঞ্চলকে স্বাধীন ভূখণ্ড হিসেবে স্বীকৃতি দিতে হবে।
ইউক্রেনে রাশিয়ার অভিযান শুরুর পর যুদ্ধ বন্ধের প্রশ্নে এটিকে ক্রেমলিনের সবচেয়ে স্পষ্ট বক্তব্য বলে মনে করা হচ্ছে। নিরপেক্ষতার প্রশ্নে দিমিত্রি পেসকভ বলেছিলেন, তাদের উচিত সংবিধানে সংশোধনী নিয়ে আসা, যার মধ্য দিয়ে ইউক্রেন বোঝাবে যে তারা কোনো জোটে যোগ দেবে না। সংবিধানে পরিবর্তন আনার মধ্য দিয়েই তা কেবল সম্ভব হবে।
ক্রেমলিনের মুখপাত্র দাবি করেছেন, ইউক্রেনে আর কোনো এলাকার মালিকানা দাবি করতে চায় না রাশিয়া। তিনি বলেন, ‘আমরা সত্যিকার অর্থে ইউক্রেনকে নিরস্ত্রীকরণের কাজ করছি। আমরা এ কাজ শেষ করব। তবে মুখ্য বিষয় হলো ইউক্রেনের সামরিক কর্মকাণ্ড বন্ধ করবে। তাদের উচিত সামরিক পদক্ষেপ বন্ধ করা। তাহলে কেউ আর গুলি চালাবে না।’ তথ্যসূত্র: রয়টার্স